1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইয়াস: সমুদ্রের জলে ভাসল দিঘা, মন্দারমণি

২৬ মে ২০২১

ইয়াস এখনো আছড়ে পড়েনি, কিন্তু বুধবার সকালেই সমুদ্রের জল ঢুকে গেল দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুরে।

https://p.dw.com/p/3tx7k
ইয়াস
ছবি: AP Photo/picture alliance

ভোর রাত থেকেই ইয়াসের জের বুঝতে শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গ। কলকাতা সহ গোটা পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়েছে বৃষ্টি, সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। সকাল সোয়া নয়টায় ওড়িশার বালাসোরের দক্ষিণে ল্যান্ডফল হয়েছে ঝড়ের। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি শুরু হয়েছে দিঘায়। কলকাতা আবহাওয়া দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আগামী তিন ঘণ্টা ধরে ল্যান্ডফল হবে। অর্থাৎ, স্থলভাগে প্রবেশ করবে ঝড়।

দিঘার সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছে। বালিয়াড়ি বলে আর কিছু নেই। ঢেউ আছড়ে পড়ছে সমুদ্র সৈকতের ধারের রাস্তার উপর। প্রায় গোটা দিঘা শহরে সমুদ্রের জল ঢুকে গেছে। গাড়ি পর্যন্ত ভেসে গেছে। একই অবস্থা দিঘা সংলগ্ন পূর্ব মেদিনীপুরের মন্দারমণি, তাজপুরের। উত্তাল সমুদ্রের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জ সমুদ্র সৈকতও।

অন্যদিকে নামখানা ও কাকদ্বীপের অবস্থাও ভাল নয়। জল বাড়ছে। বাঁধগুলির অবস্থা খারাপ হচ্ছে।

কলকাতায় ঝোড়ো হাওয়া এবং টানা বৃষ্টি চলছে ভোর রাত থেকে। মঙ্গলবার রাজ্য প্রশাসনের সদর দপ্তর নবান্নে রাত কাটিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চোখ রেখেছেন জায়ান্ট স্ক্রিনে। বুধবারও সারা দিন নবান্নেই তিনি থাকবেন বলে জানিয়েছেন। বসবেন ঝড়ের জন্য তৈরি বিশেষ কন্ট্রোলরুমে। ল্যান্ডফলের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতি শুরু হয়ে গেছে। পূর্ব মেদিনীপুরে এরমধ্যেই প্রায় ২০ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপ, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জে ক্ষয়ক্ষতি শুরু হয়েছে। সুন্দরবনের গোসাবায় বাঁধ ভাঙতে শুরু করেছে। ভরা কোটাল থাকায় পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে।

নবান্ন ছাড়াও উপান্নতে তৈরি হয়েছে আরো একটি কন্ট্রোল রুম। এছাড়াও দক্ষিণবঙ্গের প্রতিটি ব্লকে একটি করে কন্ট্রোলরুম তৈরি করা হয়েছে। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রতিটি জেলায় বিপর্যয় মোকাবিলার টিম পৌঁছে গেছে। কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলও পূর্ব মেদিনীপুর সহ একাধিক জেলায় পৌঁছে গেছে।

একদিকে ঝড় অন্যদিকে ভরা কোটাল, চিন্তিত সুন্দরবন। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছিলেন, ঝড়ের গতি যে দিকে, তাতে সুন্দরবনের উপর খুব বেশি প্রভাব হয়তো পড়বে না। কিন্তু পরিবেশবিদদের একাংশের বক্তব্য, সুন্দরবনে ঝড়ের গতি খুব বেশি না হলেও ভরা কোটালের কারণ ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। মঙ্গলবারই সন্দেশখালির দিকে কয়েকটি বাঁধ ভাঙার খবর পাওয়া গেছে। হিঙ্গলগঞ্জের দিকেও বাঁধে ফাটল ধরেছে।

ইয়াস আসার আগেই বেশ খানিকটা ক্ষতি হয়েছে হুগলির ব্যান্ডেল, চুঁচুড়া, পাণ্ডুয়ায়। মঙ্গলবার বিকেলে আচমকাই টর্নেডোর কবলে পড়ে এই অঞ্চল। ঝড়টি খুব বেশি সময় স্থায়ী না হলেও, যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। একাধিক অস্থায়ী দোকান উড়ে গিয়ে খালে পড়েছে। দুইজনের মৃত্যু হয়েছে পাণ্ডুয়ায়। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, ওই ঝড়ের সঙ্গে ইয়াসের কোনো সম্পর্ক নেই।

পশ্চিমবঙ্গের নয়টি জেলায় বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিভিন্ন নদীর জল ফুলতে শুরু করেছে। বন্ধ হয়েছে বিমান চলাচল। বুধবার সকাল আটটায় শেষ বিমানটি বিশাখাপত্তনম গেছে। তারপরেই বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাত আটটা পর্যন্ত তা বন্ধ থাকবে। বিমানের চাকা বেঁধে রাখা হয়েছে। অধিকাংশ বিমান হ্যাঙারে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে একাধিক উড়ালপুল।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই, আবহাওয়া দপ্তর)