ইস্তাম্বুলের শতবর্ষ পুরোনো ট্রাম
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ঐতিহাসিক ট্রাম টি-টু ইস্তাম্বুলের একটি বিখ্যাত ল্যান্ডমার্ক৷ এতে চড়ে ইস্তিকলাল জাদ্দেস্সি বা স্বাধীনতা সড়ক ধরে এগিয়ে গেলে অনেক কিছু দেখতে পাওয়া যায়৷
নস্টালজিক ট্রামের এই রুট মাত্র ১ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ৷ তাকসিম স্কয়ার থেকে টানেল স্টেশন পর্যন্ত এই পথে পাশাপাশি বড়জোর দু'টি গাড়ি চলতে পারে৷ এটা একটা শপিং স্ট্রিট ও নৈশ প্রমোদের জায়গা৷ শুধু পর্যটক নয়, অনেকের জন্যই একশ’ বছর পুরোনো এই রেলগাড়িতে চড়া একটা বিশেষ অভিজ্ঞতা৷
১৮৭১ সালে ইস্তাম্বুলের রাস্তায় প্রথম ট্রাম চলতে শুরু করে৷ পরে বছরে প্রায় ১০ কোটি যাত্রী এই ট্রাম ব্যবহার করতেন৷ তবে ষাটের দশকে শহরটি ট্রামের চেয়ে গাড়ির ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে৷
১৯৯০ সালে T2 ট্রামের প্রথম রুটটি আবার চালু করা হয়৷ এখন পাঁচটি ট্রাম লাইন চালু আছে৷
পর্যটক ইয়াসিন ডুসুনচেলির ভাষায়, ‘‘মানুষ এই ট্রাম পছন্দ করেন কারণ এটা পুরোনো এবং কালের সাক্ষী৷ অতীতকে জীবন্ত করে তোলে এই ট্রাম৷ তাই এতে মানুষের অনেক আগ্রহ৷ তুরস্ক ও অন্য অনেক দেশের লোকেরা এখানে ছবি তোলেন৷ এই ট্রাম কারো চোখ এড়ায় না৷ তাই এটি ইস্তাম্বুলের একটি বিশেষ প্রতীক৷’’
প্রতিটি স্টপেই কিছু না কিছু আছে৷ যেমন হোটেল পেরা প্যালেসে পাঁচ মিনিটেই ঘোরা যায়৷ অরিয়েন্ট এক্সপ্রেসে ১৮৯৫ সালে এই বিলাসবহুল থাকার জায়গাটি তৈরি করা হয়৷
সারাবিশ্বের বিখ্যাত লোকেরা এখানে থেকেছেন৷
অতিথিরা ঐতিহাসিক এই আবহ উপভোগ করেন৷
ট্যুরিস্ট গাইড আরজু তোরমান বলেন, ‘‘আপনি এখানে অনেকাংশে ফ্রেঞ্চ ও ব্রিটিশ এবং কিছুটা মুরিশ ও প্রাচ্যের ছোঁয়া পাবেন৷ তাই এটা যেন সবকিছুর মিশেলে তৈরি৷ এটা আমাদের সে সময়ের জীবনবৈচিত্র্য সম্পর্কে ধারণা দেয়৷ একটা বহুসংস্কৃতির পরিবেশ৷’’
এরপর এগিয়ে গেলে লে গ্যালাটাসারায় স্টেশন৷ এখানে ১৮৭৬ সালে তৈরি ফ্লাওয়ার প্যাসেজ৷ এখানে ধ্রুপদি টার্কিশ খাবারের সন্ধান মিলবে৷ যেমন, সেভিচ রেস্টুরেন্ট৷ এখানকার মেন্যুতে ২৫ পদের টার্কিশ ক্ষুধাবর্ধক বা অ্যাপিটাইজারের নাম আছে৷
পাঁচটি স্টপ প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার যাত্রীকে ঘুরিয়ে দেখায় এই ট্রামটি৷
দুই কিলোমিটারেরও কম দূরত্ব চলার পর নস্টালজিয়া ট্রাম পৌঁছায় তাকসিম স্কয়ারে৷ ইস্তাম্বুলের আধুনিক অথচ ঐতিহ্যময় অতীত ইতিহাস ঘুরে আসার পালা আপাতত এখানে শেষ৷
ইয়েন্স ফন লারচার/জেডএ