ইসলামিক সম্মেলনে শূকরের মাংস, নিন্দার ঝড়
৩ ডিসেম্বর ২০১৮বার্লিনে জাতীয় ইসলামিক সম্মেলনের খাবারে ‘ব্লাড সসেজ' দেয়ায় তীব্র নিন্দা জানানো হয়, কেননা ইসলামে শূকরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ৷ তবে কট্টরপন্থি দলগুলো এই খাবার দেয়াকে স্বাভাবিকভাবে দেখছে৷
গত বুধবার সন্ধ্যার খাবার তালিকায় অন্যান্য খাবারের সাথে ছিল শূকরের রক্তের সসেজ, শূকরের মাংস এবং বেকন৷ মন্ত্রণালয় অবশ্য নিজেদের সিদ্ধান্তকে সঠিক উল্লেখ করে বলেছে, ঐ সন্ধ্যায় বিভিন্ন দেশের ইসলামিক সংগঠনের নেতাদের পাশপাশি জার্মান সরকারের কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় কর্মকর্তারাও ছিলেন৷ তাঁদের কথা মাথায় রেখেই অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি এগুলো রাখা হয়েছিল৷
মন্ত্রণালয় বলছে, সেদিন সন্ধ্যায় ‘বুফে' ছিল, যেখানে বিশাল খাদ্যসম্ভারের মধ্যে ছিল শাক-সবজি, মাছ, মাংস এবং হালাল অন্যান্য মাংস৷ তারা বলছে, এরপরও যদি কিছু শূকরের মাংস থাকার কারণে কারো অনুভূতিতে আঘাত লাগে, সেজন্য তারা দুঃখিত৷
তবে অনেকেই মনে করছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হোর্স্ট সেহোফার কট্টরপন্থি হওয়ায় তাঁর সিদ্ধান্তেই ব্লাড সসেজ পরিবেশন করা হয়েছে৷ চলতি বছরের মার্চেই ‘জার্মানিতে ইসলামের ঠাঁই নেই' বলে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি৷
হ্যাশট্যাগ ব্লাড সসেজ গেট
তুর্কি-জার্মান সাংবাদিক টুনকে ওজদামার টুইটারে লিখেছেন, ‘‘যেসব মুসলমান শূকর খান না, তাঁদের প্রতি সামান্য সম্মান দেখালে সেটা অগ্রহণযোগ্য নয়৷ আমি নিজেও শূকরের মাংস খাই৷'' তিনি আরো লিখেছেন, ‘‘জার্মানিতে বহু সম্প্রদায়ের মানুষের বাস৷ তাই যেসব স্কুলে মুসলিম শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করছে, সেখানে শূকরের মাংস পরিবেশনে আমি খারাপ কিছু দেখি না৷ কিন্তু একটি ইসলামিক সম্মেলনে, যেখানে মুসলমানদের বিভিন্ন আলোচনায় অংশ নিতে ডেকে আনা হয়েছে, ধর্মীয় নানা কারণে নিত্যদিনকার সমস্যা সমাধানের জন্য যাঁদের কাছে আপনারা পরামর্শ চাইছেন, তাঁদের অনুভূতির প্রতি আপনাদের সম্মান দেখানো উচিত৷''
২০০৬ সালের ইসলামিক সম্মেলনেও শূকরের মাংস পরিবেশন করা হয়েছিল৷ এদিকে কট্টরপন্থি দল অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) জার্মান সংস্কৃতির উপর হামলার কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দায়ী করেছে৷ টুইটারে এএফডি'র আইন প্রণেতা আলিসে ভাইডেল লিখেছেন,‘‘ব্লাড সসেজ হলো জার্মানির সুস্বাদু খাবার৷ এটা আমাদের সংস্কৃতির অংশ৷ এটাকে মেনে নেয়াটাই সহিষ্ণুতার পরিচয়৷ আমাদের দৈনন্দিন জীবন থেকে আমরা এগুলো ত্যাগ করতে পারি না৷''
চেজ ভিন্টার/এপিবি