1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজইন্দোনেশিয়া

ইন্দোনেশিয়ার পরিবেশবান্ধব স্কুল

১৩ জুলাই ২০২২

কার্বন নির্গমনের একটি বড় উৎস নির্মাণ শিল্প৷ তাই পরিবেশবান্ধব ও টেকসই ভবন নির্মাণ পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছেন স্থপতিরা৷ ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তার কাছে এমন একটি স্কুল নির্মাণ করা হয়েছে, যেখানে এসি নেই৷

https://p.dw.com/p/4E3Jc
Indonesien Coronavirus - Schule in Jakarta
প্রতীকী ফাইল ফটোছবি: Tatan Syuflana/AP Photo/picture alliance

গরমের সময় ঠান্ডা ভবন, আর শীতের সময় ওয়ার্ম আপ করা যায় এমন ঘর আমরা সবাই চাই৷ তবে এর জন্য অনেক জ্বালানি প্রয়োজন হয়৷ কিন্তু পরিবেশের ক্ষতি কমিয়ে কি আরামে থাকা সম্ভব?

ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তার কাছে অবস্থিত পাহোয়া প্রিস্কুলে কোনো শীতলীকরণ ব্যবস্থা নেই৷ স্কুলের স্থপতি আদি পুর্নমো বলেন, ‘‘স্কুল ও অন্যান্য সরকারি ভবনের মতো জায়গায় এসি অনেক বেশি জ্বালানি খরচ করে৷ এসব ভবনে বাতাস ও আলোর ব্যবস্থা করা একটা চ্যালেঞ্জ৷''

যে পদ্ধতিতে এমন ভবন নির্মাণ করা যায় তার নাম ‘প্যাসিভ ডিজাইন'৷ এর মাধ্যমে বিদ্যুতের সাহায্যে ভবন আলোকিত ও ঠাণ্ডা না করে প্রাকৃতিক আলো ও বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়৷ এই পদ্ধতিতে অনেক জ্বালানি বাঁচানো সম্ভব৷ নির্মাণ খাতের জন্য এই পদ্ধতি খুব দরকার বলে মনে করেন ইন্দোনেশিয়ার গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের প্রধান আইওয়ান প্রিজানতো৷ তিনি জানান, ‘‘বিশ্বে যত কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস নির্গমন হয় তার প্রায় ৩৯ শতাংশের জন্য দায়ী নির্মাণ শিল্প৷ ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য এই খাতই সবচেয়ে বেশি দায়ী, ভবিষ্যতে যা আরো বাড়বে৷''

নির্মাণ শিল্পে গ্রিন কনসেপ্ট ধারনার সমর্থক স্থপতি আদি পুর্নমো৷ তার কাজে বায়ু চলাচল ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে৷ বাতাসের দিক বিবেচনায় নিয়ে তিনি ভবনের লেআউট ঠিক করেন৷ আদি পুর্নমো বলেন, ‘‘সূর্যের আলো ও বাতাস চলাচলের পথ জানার চেষ্টা করতে হয়, যা সবসময় পূর্বমুখী ও পশ্চিমমুখী হয়ে থাকে৷ সে কারণে শ্রেণিকক্ষগুলো পূর্ব থেকে পশ্চিমে তৈরি করা হয়৷ ফলে জানালা খুললেও নকশার কারণে ক্লাসরুমগুলো গরম হয় না৷''

যে স্কুলে এসির বিকল্প গাছ আর ঘাস

যখন বাতাস থাকে না তখন স্কুলে কম ওয়াটের ফ্যান ব্যবহার করা হয়৷ এছাড়া স্কুলের দেয়ালে লাগানো গাছপালা ভবন ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে৷ আর ছাদে থাকা সবুজ ঘাসের কারণেও নীচের ক্লাসরুম ঠান্ডা থাকে৷ প্রতিটি ব্যবস্থার কারণে এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের পার্থক্য হয়৷ ছাদে এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে যে, সেখান থেকে প্রাকৃতিক আলো ভবনের নীচ তলা পর্যন্ত পৌঁছায়৷

থেরেসিয়া মারেটা পাহোয়া স্কুলের প্রকল্প পরিচালক৷ তার লক্ষ্য, শিক্ষার্থীদের সারাক্ষণ শীতলীকরণ পরিবেশে না রেখে প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ানোর চেষ্টা করা৷ তিনি বলেন, ‘‘শুরুতে স্কুলে এয়ার কন্ডিশন না রাখার সিদ্ধান্তে অনেকে শক্ত বিরোধিতা করেছিলেন৷ তারা বলতেন তাদের বাচ্চারা নিয়মিত ঘামছে৷ এছাড়া একটা মর্যাদারও প্রশ্ন ছিল৷ হ্যাঁ, আমার সন্তান যে হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেছে সেখানে এসি ছিল৷ এরপর যখন হাসপাতাল ছেড়ে বাড়িতে গেল সেখানেও এসি ছিল৷ আর এখন এমন স্কুলে যাচ্ছে যেখানে এসি নেই৷''

পাহোয়া প্রি-স্কুলে জ্বালানি ব্যবহার কমানোর পরিকল্পনা কাজ করছে৷ ইন্দোনেশিয়ার যে কোনো স্কুলের চেয়ে এখন ঐ স্কুলে বর্গমিটার প্রতি জ্বালানির ব্যবহার প্রায় ৫০ শতাংশ কম৷ আদি পুর্নমো বলেন, ‘‘আসলে এটা এমন একটা মডেল যেটা দেখাচ্ছে, সবুজ ভবন মানেই যে ব্যয়বহুল হতে হবে, তা নয়৷ এখানে দেখা যাচ্ছে, খুব সাধারণ নকশা দিয়েই এমন ভবন তৈরি সম্ভব৷''

কোনো ভবনের জ্বালানি ব্যবহারের পরিমাণে প্রভাব রাখতে পারে নকশা৷ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায়ও এই স্কুল অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে৷

ডরোথি গ্র্যুনার/জেডএইচ