ইন্টারপোল প্রধানের অন্তর্ধান ইস্যুতে নিশ্চুপ চীন
৬ অক্টোবর ২০১৮সেপ্টেম্বরের ২৫ তারিখে চীন সফরের উদ্দেশ্যে দক্ষিণ-পূর্ব ফ্রান্সের লিওঁতে ইন্টারপোলের প্রধান কার্যালয় থেকে বের হন মেং হোংওয়ে৷ এর পর থেকে পরিবারের সাথে তাঁর আর কোনো যোগাযোগ নেই৷
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করেও এ বিষয়ে কোনো কিছু জানা যায়নি বলে তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমের৷ ইন্টারপোলও এ বিষয়ে কিছু জানাতে রাজি হয়নি৷
সংস্থাটি শুক্রবার এক টুইটে জানিয়েছে, ‘‘এটি ফ্রান্স ও চীনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যকার ব্যাপার৷'' তবে শনিবার আরেক টুইটে আপডেট জানিয়েছে সংস্থাটি৷ সংস্থার প্রেসিডেন্টের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে চাওয়া হয়েছে চীনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে৷
ইন্টারপোল প্রধানের পাশাপাশি চীনের জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্বে আছেন মেং৷ তাঁর মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করেও এ বিষয়ে পাওয়া যায়নি কোনো মন্তব্য৷
তবে তাঁর অন্তর্ধানের খবরে ছড়িয়ে পড়ছে নানা ধরনের গুজব৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে চীনের নবগঠিত দুর্নীতিবিরোধী ন্যাশনাল সুপারভাইজরি কমিশনের লোকজনই বেইজিংয়ে নামার পর মেংকে তুলে নিয়ে গিয়েছে৷
ন্যাশনাল সুপারভাইজরি কমিশনকে দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর নজরদারি ও তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত, এমনকি আটকের ক্ষমতাও দেয়া হয়েছে৷ এবং এ কাজে তেমন কোনো জবাবদিহিতার মুখোমুখিও হতে হয় না কমিশনকে৷
আইন অনুযায়ী কাউকে আটক করা হলে তাঁর পরিবারের সদস্যদের এ ব্যাপারে জানানোর কথা থাকলেও জাতীয় নিরাপত্তা, জঙ্গিবাদ অথবা তথ্য পাচারের অভিযোগ ইস্যুতে কমিশনের সদস্যদের ছাড় দেয়া হয়েছে৷
এই কমিশন গঠন হওয়ার পর থেকে কোনো তথ্য ছাড়াই কয়েক সপ্তাহ, এমনকি কয়েক মাস পর্যন্ত আটকে রাখা হয়েছে অনেককেই৷ তবে ইন্টারপোলের প্রথম চীনা প্রেসিডেন্ট মেং কোন ইস্যুতে চীন সরকারের তদন্তের মুখোমুখি হতে পারেন, সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানা যায়নি৷
২০১২ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে চীনে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করেন৷ তাঁর এই উদ্যোগে ছয় বছরে ১০ লাখেরও বেশি সরকারি কর্মকর্তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে৷ চীনাদের কাছে এই অভিযান বেশ জনপ্রিয় হলেও এর মাধ্যমে শি তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের ঘায়েল করছেন বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা৷
তদন্তে ফরাসি পুলিশ
ফ্রান্সে বসবাসরত মেং-এর স্ত্রী জানিয়েছেন, এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার ফোনে এবং সামাজির যোগাযোগ মাধ্যমে হুমকি পেয়েছেন তিনি৷ তবে কারা এ হুমকি দিয়েছেন, সে বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারেননি তিনি৷
ফরাসি পুলিশ এরই মধ্যে এ অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ তবে এ বিষয়ে চীনা সরকারের সাথে তাঁদের কোনো যোগাযোগ হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কিছু জানায়নি মন্ত্রণালয়৷
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘‘ফ্রান্স ইন্টারপোল প্রধানের অন্তর্ধান ও তাঁর স্ত্রীকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত৷'' তবে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে ফরাসি সরকার৷
প্রাথমিক তদন্তে ফরাসি গোয়েন্দাদের ধারণা, মেং-এর কোনো কাজ হয়তো চীন সরকারের বিরুদ্ধে গিয়েছে৷ তবে সেটি ঠিক কি, সে বিষয়ে কোনো ধারণা এখনও দিতে পারছেন না কেউ৷
এডিকে (রয়টার্স, এএফপি)