ইনস্টাগ্রাম লেন্সের চোখে বার্লিন
বার্লিনে ফেব্রুয়ারি মাস মানেই ধূসর, বরফে ঢাকা, বৃষ্টি-ভেজা পরিবেশ৷ কিন্তু ইনস্টাগ্রামের ফটোগ্রাফারদের জন্য এর আলাদা আকর্ষণ রয়েছে৷ কী দেখেন তাঁরা নিজেদের লেন্সের চোখে? বার্লিনে ইনস্টাগ্রামের জগতেই বা কী চলছে?
কুৎসিত, অথচ আকর্ষণীয়
বার্লিন শহর নোংরা, ধূসর, কুৎসিত৷ যুদ্ধের ক্ষতচিহ্নের অভাব নেই৷ অনেক বাড়িঘর কিছুটা তৈরি হয়ে পড়ে আছে, অথবা ভেঙে দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু সেটাই তো চোখে পড়ার মতো! বার্লিন প্রাচীর পতনের পর থেকে মুক্তি ও সৃজনশীলতার তাগিদ অনুভব করা যায় বলে মনে করেন মিশায়েল শুলৎস৷ তিনিই ইনস্টাগ্রামে বার্লিনের সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাকাউন্ট @berlinstagram-এর স্রষ্টা৷
মোবাইল নয়, আসল ক্যামেরার কারসাজি
‘আমার ফোন কখনো কাদায় পড়ে যায়নি’ – গর্ব করে এ কথা বলতে পারেন ক’জন? মোবাইল ফোনের ক্যামেরার অনেক উন্নতি সত্ত্বেও লিন্ডা ব্যার্গ (@lindaberlin) কিন্তু তাঁর পেশাদারী ডিএসএলআর ক্যামেরার উপরই নির্ভর করেন৷ সেই ক্যামেরার অনেক কারসাজি দিয়ে অভিনব প্রেক্ষাপটে শহরের স্থাপত্য তুলে ধরেন তিনি৷
বাড়ির উঠানেই জীবনের কাহিনি
ডকুমেন্টরি ফটোগ্রাফার কারোলিন ভাইনকফ (@careauxphotography) বার্লিনের সদা পরিবর্তনশীল দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ছবি তোলেন৷ ইনস্টাগ্রাম যেন তাঁর ভার্চুয়াল ডায়রি৷ ধৈর্য ধরে সব সময়ে ‘মোটিফ’-এর সন্ধান করে বেড়ান তিনি৷ আচমকা অসাধারণ মুহূর্ত উঠে আসে চোখের সামনে৷ প্রস্তুত না থাকলেই সেটি চিরকালের জন্য হাতছাড়া হয়ে যায়৷
লেন্সের সামনে খাদ্যের সমাহার
মুখে জল আনা খাবার-দাবার ক্যামেরাবন্দি করার চেষ্টা করেন এৎসগি পোলাট (@ezgipolat)৷ তবে ফিল্টার নয়, স্বাভাবিক আলোতেই ছবি তুলতে ভালেবাসেন তিনি৷ স্থানীয় বাজার থেকে তাজা ফলমূল, তরিতরকারি এনে সুন্দরভাবে সাজিয়ে দেন তিনি৷ হাটেও আনাগোনা রয়েছে তাঁর৷ শহরের কোন পাড়ায় কবে কোন হাট বসে, সে খবর তাঁর ঝুলিতে রয়েছে৷
অন্যদের সঙ্গে আদান-প্রদান
খুঁটিনাটি নিয়ে মাথা ঘামানো বৃথা বলে মনে করেন মিশায়েল শুলৎস৷ আনাড়ি ফটোগ্রাফারদের জন্য তাঁর পরামর্শ – নিখুঁত ছবির বদলে নিজস্ব আগ্রহের মোটিফ ও গল্প বলার ভঙ্গি গড়ে তোলাই মূল কাজ৷ স্থানীয় ফটোগ্রাফারদের কাজ দেখতে, চলতি প্রবণতা বুঝতে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা উচিত (যেমন #igersberlin, #berlin, #kreuzberg)৷ ছবির ‘জিওট্যাগিং’ করাও জরুরি৷
মোটিফ সর্বত্র, প্রস্তুত থাকা চাই
ফটোগ্রাফার হিসেবে টোবিয়াস কখ (@tokography) আরও ব়্যাডিকাল হতে পিছপা হন না৷ তিনি ব্যস্ত রাজপথের মাঝখানে গিয়ে সবার ভ্রূকুটি অগ্রাহ্য করে ছবি তোলেন৷ ফোনের ক্যামেরাই তাঁর সঙ্গী৷ সেটি কখনো হাত ফসকে কাদায় পড়েনি৷ বিষয় বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোনো ছুতমার্গ নেই তাঁর৷ রাস্তার গর্ত থেকে শুরু করে দোকানের জানালা – যে কোনো জায়গায় আকর্ষণীয় মোটিফ খুঁজে পাওয়া যেতে পারে৷