1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোভিশন ২০১২

২০ এপ্রিল ২০১২

আগামী ২৬শে মে আজারবাইজানের বাকু’তে এ বছরের ইউরোপীয় সংগীত প্রতিযোগিতা৷ মানবাধিকার আন্দোলনকারীরা সেই অবকাশে মধ্য এশিয়ার প্রাক্তন সোভিয়েত গণরাজ্যটিতে গণতন্ত্রের ঘাটতি সম্পর্কে সচেতন করে দিতে চান৷

https://p.dw.com/p/14i4z
Die Sängerinnen Inga & Anush (Armenien, "Jan Jan") singen am Freitag (15.05.2009) während der Proben zum Finale des Eurovision Song Contest (ESC) in Moskau. Das Finale des 54. (ESC) findet am 16.Mai 2009 in Moskau statt. Foto: Ulrich Perrey +++(c) dpa - Report+++
ফাইল ছবিছবি: picture-alliance/dpa

ধরা যাক খাদিয়া ইশমায়িলোভা'র কথা৷ গত মার্চ মাসের ঘটনা৷ আজারবাইজানের নাম-করা সাংবাদিক ইশমায়িলোভা সরকারের কার্যকলাপ নিয়ে রাজধানী বাকু'তে খোঁজখবর করছিলেন৷ হঠাৎ তাঁর কাছে উড়োচিঠিতে কিছু ছবি এসে পৌঁছায়৷ দৃশ্যত নিজের ফ্ল্যাটে তাঁর পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি, গোপন ক্যামেরা দিয়ে তোলা৷ ছবিগুলোর সাথে একটা কাগজ, তাতে গালাগাল দিয়ে লেখা: ‘‘ঠিক পথে চলো, নয়তো তোমার সুনাম গেল!'' সোজা কথায়, ব্ল্যাকমেল৷

ইশমায়িলোভা'র প্রতিক্রিয়া: তিনি সরাসরি সেই শাসানির চিঠি পত্রিকায় ছাপিয়ে দেন৷ তার এক সপ্তাহ পরেই ইশমায়িলোভা ও তাঁর বন্ধুর অন্তরঙ্গ ছবিগুলি ইন্টারনেটে ঘুরতে শুরু করে৷ মার্কুস ল্যোনিং মুক্ত গণতন্ত্রী রাজনীতিক এবং মানবাধিকারের ব্যাপারে জার্মান সরকারের ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি৷ ইশমায়িলোভা'কে তিনি ব্যক্তিগত ভাবে চেনেন৷ ল্যোনিং আরো জানালেন: ‘‘তারপর যখন ইশমায়িলোভা সরকারি কৌঁসুলির কাছে গিয়ে আবেদন করেন, হুমকি ও ইন্টারনেট প্রকাশনা নিয়ে পুলিশি তদন্ত করা হোক, তখন শেষমেষ কিছুই করা হয়নি৷ এ ধরণের আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়৷''

২৬শে মে আজারবাইজানের রাজধানী বাকু'তে ইউরোভিশন সং কন্টেস্ট৷ সারা দুনিয়ার চোখ এখন সেই দিকে৷ দেশ-বিদেশের মানবাধিকার আন্দোলনকারীদেরও সেটা অজানা নয়৷ ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স' মানবাধিকার সংগঠন সম্প্রতি বার্লিনে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে৷ সেখানে আজারবাইজানের এক মানবাধিকার আন্দোলনকারী রসুল জাফারোভ'ও উপস্থিত ছিলেন৷ জাফারোভ ও তাঁর সহযোগীরা ইউরোভিশন সং কন্টেস্ট'এর আগে ‘‘সিং ফর ডেমোক্র্যাসি'', অর্থাৎ ‘গণতন্ত্রের জন্য গাও' বলে একটি প্রচার অভিযান শুরু করেছেন৷ তাঁরা টি-শার্ট ছাপিয়েছেন, পোস্টার ছাপিয়েছেন৷ এ ভাবে তাঁরা সারা ইউরোপে আজারবাইজানের পরিস্থিতি জানিয়ে দিতে চান৷ জাফারোভ বার্লিনে বলেন: ‘‘আমাদের জন্য, এবং ইউরোপের বহু মানুষের জন্য এটা শুধু একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নয়, বরং এমন একটি অনুষ্ঠান, যেখানে অপরের স্বাধীনতা ও অধিকারকে সম্মান করে চলা হয়৷''

ARCHIV - Die Flagge Aserbaidschans weht am 07.06.2011 in Baku, der Hauptstadt der Ex-Sowjetrepublik. Elf Wochen vor dem Eurovision Song Contest (ESC) in Baku hat Armenien seine Teilnahme am Wettbewerb im verfeindeten Nachbarland Aserbaidschan abgesagt. Das Staatsfernsehen werde keine Teilnehmer zum ESC im Mai entsenden, meldete der Rundfunk in der Hauptstadt Eriwan am Mittwoch (07.03.2012). «Wir sehen keine Logik darin, Menschen in ein Land zu schicken, in dem sie als Feinde angesehen werden», hieß es in einer Erklärung. Foto: Marcus Brandt (zu dpa 1436 vom 07.03.2012) +++(c) dpa - Bildfunk+++
বাকু’তে পত পত করে উড়ছে আজারবাইজানের জাতীয় পতাকাছবি: picture-alliance/dpa

শুধু সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কিংবা সংবাদ প্রদানের প্রসঙ্গটাই নেওয়া যাক৷ হিউ উইলিয়ামসন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মানবাধিকার সংগঠনের কর্মকর্তা এবং এইচআরডাবলিউ'র ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া বিভাগের পরিচালক৷ বর্তমানে আজারবাইজানে ছ'জন সাংবাদিক কারাগারে, বলে তিনি জানালেন৷ এবং আজারবাইজান প্রশাসন সাংবাদিকদের কিভাবে কোণঠাসা করে, সে কাহিনিও শোনালেন তিনি: ‘‘এক সাংবাদিক ইরানের কিছু গণমাধ্যমের কাজে আজারবাইজানে গিয়েছিলেন৷ পুলিশ ফাঁড়িতে তাকে কিছু প্রশ্নের জবাব দিতে হয়৷ কোট খুলে রেখে তাঁকে পাশের ঘরে যেতে বলা হয়৷ ফিরে আসার পরে তিনি শোনেন, তাঁর কোটের পকেটে নাকি স্বল্প পরিমাণ মাদক পাওয়া গেছে৷''

সাংবাদিক স্বাধীনতা এক ব্যাপার৷ কিন্তু মানবাধিকার সংগঠনগুলির আসল সমালোচনা হল এই যে, আজারবাইজানে ডজন-ডজন মানুষকে রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে ধরে রাখা হয়েছে৷ এছাড়া রাজনৈতিক সমাবেশ করার স্বাধীনতা বিশেষভাবে সীমিত৷ ২০১১'র এপ্রিলে বিরোধীদের একটি সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়, তাও বহু বছর পরে এবং বাকু'র প্রান্তে৷ এবং সেখান থেকেও ১৬ জন বিরোধীকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ পশ্চিমের যাবতীয় দাবি ও প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়নি৷ কিন্তু এবার ইউরোভিশন সং কনটেস্ট'এর আগে বাকু সরকার কিছুটা নমনীয়তা না হলেও, স্পর্শকাতরতা দেখাতে পারেন, বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলির আশা৷ তবে আসল সমস্যাটা যে কোথায়, সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন লায়লা আলিয়েভা, যিনি বাকু'র জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালিকা৷ বিশেষ করে আজারবাইজানের তেল সম্পদের দিকেই সকলের নজর৷ আলিয়েভা বলেন: ‘‘যেমন আজারবাইজান সরকার, তেমনই পশ্চিমা সরকারবর্গ ব্যবসাকে গণতন্ত্রীকরণ কিংবা মানবাধিকারের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন৷''

প্রতিবেদন: রোমান গঞ্চারেঙ্কো/অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য