ইউরোপের সবচেয়ে সুন্দর ঘড়ি
শীতের শেষে প্রতিবছর মার্চে ডে লাইট সেভিং টাইম শেষ হওয়ার পর ইউরোপের ঘড়িগুলো এক ঘণ্টা এগিয়ে যায়। এ বছর এই দিন ২৬ মার্চ রোববার। এই সুযোগে চলুন ইউরোপের সবচেয়ে সুন্দর ঘড়িগুলো দেখে নেয়া যাক এক নজরে।
লন্ডনের বিগ বেন
এটিই সম্ভবত ইউরোপের সবচেয়ে বিখ্যাত ঘড়ি। আনুষ্ঠানিকভাবে এটি এলিজাবেথ টাওয়ার নামে পরিচিত হলেও মানুষের কাছে এর পরিচয় বিগ বেন হিসাবে। তবে আসলে ঘড়িটির পাঁচটি ঘণ্টার মধ্যে সবচেয়ে বড়টির নাম বিগ বেন। প্রতি ঘণ্টায় সময়ের জানান দিতে ভয়েস অব ব্রিটেন বাজায় এই ঘড়ি।
প্রাগের জ্যোতির্বিদ্যা ঘড়ি
চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগে অবস্থিত এই ঘড়িটি ১৪১০ সালে স্থাপিত। গথিক প্রযুক্তির এক অনন্য নিদর্শন এটি। কথিত আছে যে ঘড়িটি নির্মাণের পর শহর কর্তৃপক্ষ এর নির্মাতা মিকুলাস অব কাদান এর চোখ পুড়িয়ে দেয়, যাতে তিনি অন্য কোনো শহর বা দেশের জন্য এমন আর কোনো ঘড়ি বানাতে না পারেন। প্রতি ঘণ্টায় পুতুল নাচের মাধ্যমে দর্শকদের আনন্দ দিয়ে চলেছে এই ঘড়ি।
বার্লিনের বিশ্ব ঘড়ি
জার্মানির রাজধানীর আলেক্সান্ডারপ্লাৎসে এই ঘড়িটির সবচেয়ে আধুনিক মডেলটি অবস্থিত। পূর্ব জার্মানির প্রকৌশল ডিজাইনার এরিখ জন এই ঘড়ি তৈরি করে ১৯৬৯ সালে জনগণকে উপহার দেন। তখন থেকেই স্থানীয় জনগণ এবং পর্যটকদের কাছেও সমানভাবে জনপ্রিয় এই ঘড়ি। এটির ওপরের অংশ সৌরজগতের একটি সরল মডেল, নীচের সিলিন্ডারে পৃথিবীর ২৪টি টাইম জোন দেখা যায়।
বার্লিনের সময় বয়ে চলার ঘড়ি
এই ঘড়িটি এতটা পরিচিত না হলেও, এর রয়েছে এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। কেবল নির্দিষ্ট সময় নয়, এই ঘড়িটিতে সময়ের বয়ে চলাকেও ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। বার্লিনের ইউরোপা সেন্টার শপিং মলে ১৩ মিটার উঁচু এই ক্রোনোমিটারটি তিন তলা জুড়ে অবস্থিত। বামের বড় গোলকটির সবুজ তরল ঘণ্টা এবং ডানের ছোট গোলক মিনিট নির্ধারণ করে।
বার্নের জাইটগ্লগে
সুইজারল্যান্ডের অন্যতম দর্শনীয় স্থান রাজধানী বার্নের এই ঘড়িটি। ১৫৩০ সালে স্থাপিত ঘড়িটি শহরটির সবচেয়ে বড় পরিচয়। এই ঘড়িতেও প্রতি ঘণ্টায় নানা ধরনের পুতুলের খেলা দেখা যায়।
স্ট্রাসবুর্গের জ্যোতির্বিদ্যা ঘড়ি
রেনেসাঁ আমলের এই শিল্পকর্মটি ফ্রান্সের স্ট্রাসবুর্গ ক্যাথিড্রালে অবস্থিত। এটিও তৈরি করেছেন সুইস ঘড়ি নির্মাতারা। প্রতিদিন সাড়ে বারোটায় ঘড়িটির মধ্যে থাকা বিভিন্ন আকৃতি বের হয়ে মৃত্যুর প্রতীক ঘিরে ঘুরতে থাকে।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ কোকিল ঘড়ি
দক্ষিণ-পশ্চিম জার্মানির ব্ল্যাক ফরেস্ট কাঠের তৈরি এই ঘড়ির জন্য বিখ্যাত। ফলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কাক্কু ক্লক বা কোকিল ঘড়ি যে ব্ল্যাক ফরেস্টের ট্রিব্যার্গ শহরে অবস্থিত, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এই ঘড়ির ওজন ছয় টন। প্রতি আধা ঘণ্টায় ঘড়ির মধ্যে থাকা সাড়ে চার মিটার উঁচু এই পাখি বের হয়ে এসে মধুর সুরে সময়ের জানান দেয়।
মিউনিখের গ্লোকেনশ্পিল
মিউনিখ সিটি হলে দিনে দুই তিনবার ঐতিহাসিক দুটি ঘটনা ফুটিয়ে তোলে এই ঘড়ি। মানুষের আকৃতির নানা ভাস্কর্য ১৫৬৮ সালে ডিউক ভিলহেল্ম ফাইভের বিয়ে এবং কুপারস ড্যান্সকে মানুষের সামনে তুলে ধরে এই আকৃতি। পুরো ঘড়িটি চলে সৌরশক্তিতে।
ভিয়েনার নোঙর ঘড়ি
ভিয়েনার সবচেয়ে বিখ্যাত এই ঘড়িটির নির্মাতা চিত্রশিল্পী ফ্রানৎস মাটশ। হোহের মার্কেট স্কয়ারের একটি ছোট সেতুর ওপর এর অবস্থান। ১২ ঘণ্টায় একবার তামা দিয়ে তৈরি করা ভিয়েনার ঐতিহাসিক ১২টি চরিত্র সেতুটির ওপর দিয়ে হেঁটে যায়।