ইউরোপের সবচেয়ে বড় কৃত্রিম কোরাল রিফ
১২ মে ২০২১আর্নহেম শহরের বার্খার্স চিড়িয়াখানায় কোরালের জন্য থিয়েটারের মতো বিশাল লাইটিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে৷ সেখানে সবুজ, কমলা ও হলুদ রংয়ের সমারোহ দেখা পাওয়া যায়৷
মেরিন বায়োলজিস্ট মাক্স ইয়ান্স ও তার দল অসাধারণ কাজ করছেন৷ ইয়ান্স জানান, ‘‘আমরা কোরালের জন্য সেরা পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছি৷ এক্ষেত্রে আমরা প্রযুক্তি, জ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার সহায়তা নিচ্ছি৷''
যেমন তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়৷ বর্তমানে গবেষকদের কাছে কোরালের জীবন সম্পর্কে মাত্র ৩০ শতাংশ তথ্য আছে৷ তাই কৃত্রিম এই কোরাল রিফের ইকোসিস্টেম থেকে আরও অনেক কিছু জানার আশা করছেন গবেষকরা৷
আর্নহেমে জীববিজ্ঞানীরা কোরালকে আরেকটু ভালোভাবে জানার চেষ্টা করছেন৷ তারা প্রকৃতিতে কোরালকে আরও বেশিদিন বেঁচে থাকতে সাহায্য করতে চান৷
অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফে উষ্ণতা, অম্লতা এবং মাছ ধরার কারণে সৃষ্ট দূষণ কোরালের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে উঠছে৷
ইয়ান্স বলেন, ‘‘এটা অনেকটা প্রাণী ছাড়া বনের মতো৷ আপনার যদি বন না থাকে তাহলে কোনো বণ্যপ্রাণী থাকবেনা৷ কোরাল রিফের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা তাই৷ আপনার যদি কোরাল না থাকে তাহলে অন্য প্রাণীও থাকবেনা৷''
রিফ হচ্ছে সাগরের নার্সারি৷ তাই বার্খার্স চিড়িয়াখানার মূল আকর্ষণ হচ্ছে আন্ডারওয়াটার ওয়ার্ল্ড৷ প্রকৃতির চেয়ে সেখানে কোরালরা দ্রুত বৃদ্ধি পায় ও তাদের স্বাস্থ্য ভালো থাকে৷
জীববিজ্ঞানী কনস্টান্স মাগার বলেন, ‘‘কোরাল কলোনিতে হাজার হাজার প্রাণী একসঙ্গে বাস করে, যেমনটা বড় শহরে দেখা যায়৷ দর্শকরা অনেকে কিছু বুঝতে পারেননা, কারণ সবাই শুধু চোখ আর মুখ খোঁজেন৷ কিন্তু এগুলো অতি ক্ষুদ্র প্রাণী৷ এদের শরীরের কিছু অংশ দেখা যায়, যেটা আপনাকে ব্যাখ্যা করতে হবে৷''
বিশ্বে প্রায় ১৪ হাজার প্রজাতির কোরাল আছে৷ এদের বেশিরভাগই বিলুপ্তির পথে৷ তারপরও কোরালপ্রেমিরা এগুলো পাচার করে থাকেন৷
ইউরোপের কাস্টমস কর্মকর্তারা জব্দ হওয়া কোরাল মাক্স ইয়ান্সের কাছে পাঠায়, যেমন এগুলো অস্ট্রেলিয়ার একটি বিরল প্রজাতির কোরাল৷ এগুলো আগে কোয়ারান্টিনে রাখতে হবে৷
ল্যাবরেটরিতে কষ্ট করে বাঁচিয়ে তোলা কোরাল সাগরে পাঠানোর বিষয়টি এখনও ভাবনায় নেই, কারণ সাগরের পানির অবস্থা ভালো নয়৷ পানির গুণ আবার ভালো হলে তখন চিন্তা করে দেখা হবে৷ ততদিন পর্যন্ত আর্নহেমে ৬০ ধরনের উপকরণ যোগ করে কৃত্রিম উপায়ে প্রশান্ত মহাসাগরের পানি তৈরি করা হয়৷
এভাবে কোরাল দর্শনার্থীদের মনে আনন্দ দিয়ে যাবে৷ কনস্টান্স মাগার বলেন, ‘‘আমরা মনে করি দর্শকদের প্রকৃতির এই সৌন্দর্য দেখানো উচিত৷ আপনার যদি কোনো কিছু সম্পর্কে জ্ঞান না থাকে, কোনো কিছুকে যদি আপনি ভালো না বাসেন, তাহলে আপনি সেই জিনিস রক্ষা করতে চাইবেন না৷''
আর পানির নীচের জগত রক্ষা করতে চাইলে কোরাল বাঁচাতে হবে৷
গুডরুন এঙেল/জেডএইচ