ইউরোপের রাজপথে হাইড্রোজেন বাস
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯হাইড্রোজেন শক্তিচালিত বাস ডিজাইন করা মোটেই সহজ কাজ নয়৷ শহরে গণপরিবহণের জন্য প্রায় নির্গমনমুক্ত এই জ্বালানিকে আদর্শ বলা চলে৷ কিন্তু ফুয়েল সেলকে কার্যকরী করতে তুলতে ইঞ্জিনিয়ারদের অনেক সমস্যার সমাধান করতে হবে৷
বেলজিয়ামের অ্যান্টওয়ার্প শহরে একটি প্রোটোটাইপ পথে নামানো হচ্ছে৷ সান রেমো ও অ্যাবার্ডিন শহরে আগে থেকেই কয়েকটি হাইড্রোজেন বাস চলছে৷ প্রকল্পের ম্যানেজার পোল জেনে বিষয়টি বুঝিয়ে বললেন, ‘‘মূল বৈশিষ্ট্য হলো এই বাস হাইব্রিড ফুয়েল সেল জ্বালানিতে চলে৷ অর্থাৎ এর ট্র্যাকশনের দু'টি উৎস রয়েছে৷ একদিকে ফুয়েল সেল সরাসরি ইলেকট্রিক ইঞ্জিনে বিদ্যুৎ দেয়৷ অন্যদিকে ট্র্যাকশন ব্যাটারিও একই কাজ করে৷ জ্বালানির আদর্শ ব্যবহার নিশ্চিত করতে সবকিছু ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রিত হয়৷’’
বিশেষ স্টেশনে প্রোটোটাইপ বাসের জ্বালানি ভরতে হয়৷ হাইড্রোজেন ট্যাংক ভরতে প্রায় ১১ মিনিট সময় লাগে৷ বাইরের তাপমাত্রার উপর তা নির্ভর করে৷ সাধারণ পেট্রোল পাম্পে যে সতর্কতাবিধি চালু আছে, এ ক্ষেত্রেও তা মেনে চলতে হয়৷ সিভিল কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে সাবিনে টাবে বলেন, ‘‘এমন ছোট আকারের জ্বালানি ভরার স্টেশন তৈরি করা সত্যি চ্যালেঞ্জ ছিল৷ এমন স্টেশনের প্রয়োজন ছিল, যা হাইড্রোজেনের উৎসের কাছাকাছি যে কোনো জায়গায় বসানো চলে৷ সেইসঙ্গে নিরাপত্তাবিধি মেনে দূর থেকে নজরদারির ব্যবস্থাও করতে হয়েছে৷ এ সব ছিল এই প্রকল্পের প্রধান চ্যালেঞ্জ৷’’
সাধারণ ডিজেল বাসের তুলনায় হাইড্রোজেন বাসের মূল্য প্রায় ৬ গুণ বেশি৷ রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয়ও কম নয়৷ নির্দিষ্ট কিছু শর্তে শহরের বাস কোম্পানিগুলি তা সত্ত্বেও এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত৷ বাস কোম্পানির প্রধান রোজের কেস্টেলোট বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে আমরা পরীক্ষামূলক স্তরে রয়েছি৷ অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেও সেটাই বাস্তব৷ তবে আমার মতে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মূল্যও কমে যাবে৷ তখন মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে আমাদের পক্ষে আরও হাইড্রোজেন বাস চালানোর সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে৷’’
ভবিষ্যতে রাজপথে হাইড্রোজেন বাস চলাচল সহজ করে তুলতে বিশেষজ্ঞরা আরও গবেষণার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিচ্ছেন৷