ইঁদুরের কাছ থেকে শিখছেন চিকিৎসকেরা
মানুষের মনের নানা দিকের নতুন সব তথ্য উন্মোচন করছে ইঁদুর নিয়ে করা একটি গবেষণা৷ বিস্তারিত ছবিঘরে...
নতুন গবেষণা
বিভিন্ন প্রাণীর মানসিক আচরণ পরীক্ষা করতে আলোন চেনের নেতৃত্বে একদল গবেষক ইঁদুরদের পর্যবেক্ষণ করা শুরু করেছেন৷ নিউরোবায়োলজিস্টদের এই দলের কাজ হচ্ছে কিছু ইঁদুরকে বিভিন্ন দলে ভাগ করে তাদের আচরণ লক্ষ্য করা৷ বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, এই গবেষণা থেকে বেরোবে নতুন তথ্য৷
কোথায় হচ্ছে এই গবেষণা?
মিউনিখ শহরের মাক্স প্লাঙ্ক ইন্সটিটিউট অফ সাইকিয়াট্রি ও ইসরায়েলের রেহভোট শহরের ভাইসমান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্সের দুটি গবেষণাগারে চলছে এই গবেষণা৷ সম্প্রতি, ৯ নভেম্বর, এই গবেষণার প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশিত হয় ‘নেচার’ পত্রিকায়৷
কী জানা যাচ্ছে এখন পর্যন্ত?
গবেষণা চালু হবার কয়েক দিনের মাথায় দেখা যায়, প্রায় ৬০ রকমের আচরণে ব্যস্ত ইঁদুরগুলি৷ এর মধ্যে রয়েছে নিজের প্রয়োজনে অন্য ইঁদুরের সাথে নম্র ব্যবহার করা, খাবার ভাগাভাগি করা, লুকানো ও নতুন জায়গা আবিষ্কার করতে চাওয়ার মতো আচরণ৷
নম্বর পাচ্ছে ইঁদুর!
অন্য ইঁদুরের প্রতি ব্যবহার কেমন, তা নির্ধারণ করে দিচ্ছে কত নম্বর পাবে একটি ইঁদুর৷ এই নম্বরের ভিত্তিতে আলাদা আলাদা বিভাগে বিভক্ত করা হয় ইঁদুরদের৷ প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে ‘পার্সোনালিটি স্কেল’ বা ব্যক্তিত্ব নির্ণায়ক মান৷ এই মান বলে দিতে পারে কোন ইঁদুরের মানসিক অবস্থা কেমন৷ নম্বর থেকে জানা যাচ্ছে কোন ইঁদুর অবসাদগ্রস্ত, মানসিক বিকারগ্রস্ত বা কোন ইঁদুরটি চাপা বা খোলা মনের৷
মানুষের মনের খোঁজও আছে
বিজ্ঞানী দলের এক সদস্য ডঃ ওরেন ফোরকোশ জানান, এই ধরনের গবেষণার ফলাফলের সাথে শিশুদের মনোজগতের অনেক মিল পাওয়া যায়৷ এই গবেষণা শিশুদের নিয়ে করা গেলে তা বলে দিতে পারে শিশুর মধ্যে কোন ধরনের মানসিক আচরণের ঝোঁক রয়েছে৷
মানসিক রোগের জন্য নতুন পথ
ডঃ ফোরকোশ মনে করছেন, ব্যক্তিনির্দিষ্ট এসব তথ্যের উপর ভিত্তি করে মনোবিজ্ঞানীরা কোনো এক নির্দিষ্ট ব্যক্তির প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পথ বের করতে পারবেন৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বিশ্বের মোট ৩০ কোটি মানুষ অবসাদগ্রস্ত৷ তাদের চিকিৎসায় এই নতুন ধরনের ‘পার্সোনালাইজড থেরাপি’ বা ব্যক্তিনির্দিষ্ট চিকিৎসা কাজে লাগতে পারে৷