1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আলোকচিত্রীর লেন্সে নির্জন, নিস্তব্ধ বার্লিনের রূপ

১০ জুলাই ২০২০

বিশ্বের অন্য বড় শহরের মতো করোনা সংকটের জের ধরে বার্লিনের জীবনযাত্রাও পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল৷ এক ফটোগ্রাফার শহরের সেই অচেনা রূপ ক্যামেরাবন্দি করেছেন৷ সেই কাজ করতে গিয়ে তাঁর অসাধারণ অভিজ্ঞতা হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/3f5er
Deutschland | Anti-Corona Demonstrationen in Berlin
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Soeder

বার্লিনের জনপ্রিয় চত্বর আলেক্সান্ডারপ্লাৎস প্রায় জনশূন্য৷ শুধু হাতে গোনা কিছু লোকজন দেখা যাচ্ছে৷ সেবাস্টিয়ান ভেল্স আলোকচিত্রী হিসেবে করোনা সংকটের সময়ে শহরের পরিবেশ ক্যামেরাবন্দি করেছেন৷ প্রাণবন্ত এক শহর আচমকা থমকে যাবার পর প্রথমে তিনি শুধু হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন৷ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ভেল্স বলেন, ‘‘এমন সংকটজনক পরিস্থিতিতে আমার মধ্যে একটা তাগিদ, একটা তাড়না জেগে উঠেছিল৷ প্রথমদিকে শুধু মানসিক চাপ অনুভব করতাম৷ মনে হলো, এই রে এবার কী হবে! এমন অনুভূতি দেখা দিলে আমি সাধারণত ছবি তুলতে বেরিয়ে পড়ি৷''

করোনা মহামারির ফলে বিশ্বজুড়ে অনেক শহরই অচল হয়ে পড়েছিল৷ অনেক শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছিল৷ তবে জার্মানির রাজধানীতে শুধু মানুষের মধ্যে যোগাযোগ নিষিদ্ধ ছিল৷ সেইসঙ্গে হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ ছিল, জনজীবন প্রায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল৷

মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে সেবাস্টিয়ান বার্লিনের এই রূপের ছবি তুলে গেছেন৷ নিজের শহরের নতুন এই দিক আবিষ্কার করে তিনি টের পেয়েছেন, কীভাবে সবকিছু ধীরে ধীরে আরো খালি হয়ে গেছে৷ ভেল্স বলেন, ‘‘গত কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রায় প্রতিদিন বাইরে গিয়ে ছবি তুলেছি৷ তাই চরম ব্যস্ততায় দিন কেটেছে৷ কঠিন পরিশ্রমের কারণে বার্লিন শহরকে নিবিড়ভাবে দেখার সুযোগ পেয়েছি৷ সারা জীবন বসবাস করা সত্ত্বেও কিছুটা নতুনভাবে শহরটি আবিষ্কার করেছি৷''

করোনায় বদলে যাওয়া এক শহরের কথা

বার্লিনের ‘চেকপয়েন্ট চার্লি'-তেও সেই পরিবর্তন টের পাওয়া গেছে৷ একদা বিভক্ত শহরের এই সীমান্তে সাধারণত অনেক মানুষের ভিড় দেখা যায়৷ সারা বিশ্বের পর্যটকদের সমাগমের বদলে জায়গাটি জনমানবহীন হয়ে উঠেছিল৷ ভেল্স বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘অবশ্যই সবকিছুর গতি কমে গেছে৷ দিন হোক বা রাত, প্রকাশ্যে সবসময়েই প্রায় একই সংখ্যক মানুষ দেখা যাচ্ছে৷ ফলে পরিবেশ যেন সময়হীন হয়ে উঠেছে৷ কাজের দিন ও সপ্তাহান্তের মধ্যে তফাত থাকছে না, রাশ আওয়ার বা অফিস যাবার ব্যস্ততা আর চোখে পড়ছে না৷ যেন রোজই রবিবার, অথচ সপ্তাহান্তের পরিবেশও নেই৷ এ এক অজানা, অদ্ভুত অনুভূতি৷''

সেবাস্টিয়ান ভেল্স স্বতঃস্ফূর্তভাবে ছবি তোলেন৷ নিজের অনুভূতির ভিত্তিতে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে মোটিফ খুঁজে পান৷ বার্লিনের মানুষ তাঁদের নতুন এই দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে নিজেদের কীভাবে মানিয়ে নিয়েছেন, তাঁর ছবিতে সেই চিত্রও উঠে আসছে৷ ভেল্স বলেন, ‘‘আমার ধারণা, বার্লিনের মানুষের মনে তেমন কোনো উদ্বেগ নেই৷ তাঁরা সেভাবেই পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিচ্ছেন৷ তবে সবসময়ে মনে রাখতে হচ্ছে, যে কোনো মানুষের কাছে এলে সংক্রমণ ঘটতে পারে৷ অথবা আমি অন্যদের সংক্রমিত করতে পারি৷ সেই বিপদ যে এখনো কাটে নি, সে বিষয়ে বার বার নিজেকে সচেতন করতে হচ্ছে৷ কখনো কখনো সেটা বেশ কঠিন৷''

বার্লিন শহরে বিধিনিয়ম কিছুটা শিথিল করার পরেও সেবাস্টিয়ান ছবি তোলা বন্ধ করেননি৷ কারণ, তিনি জানতেন, পুরোপুরি স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরতে আরো অনেক সময় লাগবে৷

ডরোটেয়া প্রেচ/এসবি