1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজনেদারল্যান্ডস

আমস্টারডামের বিখ্যাত মিউজিয়ামের বাড়তি চমক

১৬ মার্চ ২০২৩

মিউজিয়ামে গেলে মানুষ প্রদর্শনীর দিকেই মনোযোগ দেয়৷ মিউজিয়াম ভবনের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় থাকে না৷ আমস্টারডামের বিখ্যাত মিউজিয়ামের নানা অভিনব বৈশিষ্ট্য সত্যি বিস্ময়কর৷

https://p.dw.com/p/4Onts
Niederlande | Eröffnung der Vermeer-Ausstellung im Rijksmuseum
ছবি: John Thys/AFP/Getty Images

শিল্প ইতিহাসবিদ হিসেবে পেটার ভাগেমাকার্স আমস্টারডামের রাইক্সমিউজিয়াম সম্পর্কে পাঁচটি অপ্রত্যাশিত বিষয় তুলে ধরেন৷ প্রথমত মিউজিয়ামের মধ্য দিয়ে একটা সড়ক চলে গেছে৷ সেটির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘এটা সাইকেলের ট্র্যাক, যা এখান থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে৷ আমার মতে এটাই একমাত্র মিউজিয়াম, যার মধ্য দিয়ে সাইকেলের পথ চলে গেছে৷ ব্যাপারটা একটু মজার বটে, কারণ মিউজিয়ামের মধ্যে সাইকেলের প্রয়োজন হয় না৷ তবে সাইকেলে চেপে মিউজিয়ামের ভেতর দিয়ে যাওয়া যায়৷''

সাইকেল-পাগল দেশ নেদারল্যান্ডসে সেই ট্র্যাক বন্ধ করার সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে৷

১৮৮৫ সালে মিউজায়মটির উদ্বোধন হয়৷ সেখানে নেদারল্যান্ডসের প্রায় ৮০০ বছরের ইতিহাস ও শিল্পের দুর্লভ নিদর্শন শোভা পাচ্ছে৷ রেমব্রান্ট ও ইয়ান ফ্যারমেয়ারের মতো বিখ্যাত শিল্পীর অনেক তৈলচিত্র সেখানে দেখা যায়৷

আরেকটি ঘটনার কথা অনেকেই জানেন না৷ বহুকাল ধরে মিউজিয়ামের ঘরগুলির দেওয়ালে সাদা রং ছিল৷ পেটার ভাগেমাকার্স জানান, ‘‘আজ যেমনটা দেখা যাচ্ছে, বিংশ শতাব্দীতে তেমনটা আর ছিল না৷ এখানকার একটি ঘর অবিকল ১৮৮৫ সালের মতো সাজানো হয়েছে৷ বিংশ শতাব্দীতে বলা হয়েছিল, বিচ্যুতি বলে সেটা সরিয়ে ফেলতে হবে৷ কারণ সে ক্ষেত্রে মানুষের নজর শিল্পের উপর পড়বে না৷ শিল্পকর্ম দেখানোর সময় ডেকোরেশন বা সজ্জা চলবে না৷ আর এটা শুধুই সজ্জা৷ যে মেঝে দেখা যাচ্ছে, সেটা সুন্দর বলে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল৷ সেখানে কাঠ বিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল৷''

মিউজিয়ামের মধ্যে সাইকেলের পথ

প্রায় দশ বছরের সংস্কারের পর ২০১৩ সালের শুরুতে গোটা ভবনটি আবার তার মৌলিক গৌরব ফিরে পেয়েছে৷ লোকচক্ষুর আড়ালে একটি ঘরে লাইব্রেরি রয়েছে৷ ভাগেমাকার্স বলেন, ‘‘এই গ্রন্থাগার আগের অবস্থাতেই রয়েছে৷ বেশি পরিবর্তন করা হয় নি৷ সিঁড়ি ও সিলিং দেখলে তা স্পষ্ট হয়ে যায়৷ ঊনবিংশ শতাব্দীতে যেমন ছিল, সেরকমই রয়ে গেছে৷ সেটা খুব সুন্দর৷ এখানে ইতিহাস অনুভব করা যায়৷''

মিউজিয়ামের সংগ্রহের সবচেয়ে বিখ্যাত বস্তুর মধ্যেও অপ্রত্যাশিত রহস্য লুকিয়ে রয়েছে৷ পেটার ভাগেমাকার্স জানালেন, ‘‘এটা হলো ‘নাইট ওয়াচ'৷ তবে এই ছবিটি কিন্তু শতভাগ খাঁটি নয়৷ অষ্টাদশ শতাব্দীতে একটি অংশ কেটে নেওয়া হয়েছিল৷ সেটিকে আমস্টারডামের টাউন হলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল৷ দেওয়ালে টাঙানোর পর কারও মনে হয়েছিল, ঠিকমতো খাপ খাচ্ছে না৷ আরও একটা জিনিস দেখাই৷ এখানে দেখা যাচ্ছে, যে একটি টুকরো কেটে নেওয়া হয়েছে৷ সেটা কোনো ছোট অংশ নয়, প্রায় ৩৩ সেন্টিমিটার বড়৷ উপরেও কিছু অংশ কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে৷ ডানদিকে সামান্য অংশ ও নীচেও কিছুটা বাদ দেওয়া হয়েছে৷ অর্থাৎ এখন যেটুকু দেখা যাচ্ছে, সেটা রেমব্রান্টের আঁকা সম্পূর্ণ চিত্র নয়, বড়জোর ৮০ শতাংশ অবশিষ্ট রয়েছে৷''

‘নাইট ওয়াচ' মিউজিয়ামের গোপন দরজার অন্যতম কারণ৷ সেই কারণ ব্যাখ্যা করে পেটার ভাগেমাকার্স বলেন, ‘‘এখানে যা দেখা যাচ্ছে, তা লোহা৷ ইটও চোখে পড়ছে৷ কিন্তু লোহার তৈরি এই আর্কই আসলে গোপন দরজা৷ প্রায় জেমস বন্ড চলচ্চিত্রের মতো৷ সেটি খুলে তার মধ্যে ‘নাইট ওয়াচ' চালান করা যায়৷ ‘নাইট ওয়াচ' ওপরে রয়েছে৷ এখানে একটা ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে৷ চিত্রটি না মুড়ে গোটা অবস্থায় নীচে নামিয়ে প্রয়োজনে অন্য কোথাও পাঠানো সম্ভব৷''

মাত্র দুই বার সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করা হয়েছে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে এবং বড় সংস্কারের সময়ে ছবিটি সরানো হয়েছিল৷ সাধারণত মিউজিয়ামের সম্পদ সবার জন্যই উন্মুক্ত থাকে৷

২০২২ সালের জাদুঘর

হেনড্রিক ভেলিং/এসবি