1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আমফানের প্রস্তুতি পশ্চিমবঙ্গে

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
১৮ মে ২০২০

ধেয়ে আসছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘‌আমফান’৷ প্রথম আছড়ে পড়বে দীঘার উপকূলে৷ তৈরি থাকছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার৷ উপকূল বরাবর বসানো হয়েছে এক সার হ্যাম রেডিও স্টেশন৷

https://p.dw.com/p/3cOkz
ফাইল ছবিছবি: picture-alliance/AP Photo

বঙ্গোপসাগরের বুকে ক্রমশ শক্তি সঞ্চয় করতে থাকা ঘূর্ণিঝড় ‘‌আমফান’ ক্রমশ এক সুপার সাইক্লোনের চেহারা নিচ্ছে, যা উপকূল এলাকার পক্ষে উদ্বেগজনক৷ যদিও প্রতি মুহূর্তে আমফান তার মতিগতি বদলাচ্ছে, কিন্তু সোমবার বিকেল পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, শেষরাতের দিকে, মঙ্গলবার ভোর নাগাদ আমফান আছড়ে পড়বে পশ্চিমবঙ্গের দীঘা সমুদ্র উপকূলে৷ ঝড়ো হাওয়ার গতিবেগ হবে ঘণ্টায় অন্তত ২৩০ কিলোমিটার, যা ২৮৫ কিমি অবধি হতে পারে বলে আবহাওয়া দপ্তরের অনুমান৷ এর সঙ্গে থাকবে প্রবল বৃষ্টি৷ পশ্চিমবঙ্গের উপকূল এলাকার ধীবরদের আগে থেকেই গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে না যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে৷ ওদিকে লাগোয়া ওড়িশা উপকূল অঞ্চল থেকে প্রায় ১১ লাখ বাসিন্দাকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে৷ চিহ্নিত হয়েছে অস্থায়ী ত্রাণ শিবির হিসেবে ব্যবহার হতে পারে, এমন ইমারত৷ আমফানের শেষ গতিপ্রকৃতি অনুযায়ী ধারণা করা হচ্ছে, ওড়িশা উপকূল থেকে ঘূর্ণিঝড়টি অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল ছুঁয়ে হয়ত মুখ ঘোরাবে বাংলাদেশের দিকে৷ তবে ততক্ষণে হয়ত তার যথেষ্ট শক্তিক্ষয় হবে বলে আশা৷

ঘূর্ণিঝড় প্রতিরোধের কোনও উপায় না থাকলেও তার জেরে ক্ষয়ক্ষতি যাতে কম হয়, তার প্রস্তুতি নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার৷ দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলাশাসকের অনুরোধে, তটরেখা বরাবর একাধিক ‘‌স্ট্র্যাটেজিক’ অবস্থানে অস্থায়ী সংযোগ কেন্দ্র গড়ে তুলেছেন শখের হ্যাম রেডিও অপারেটররা৷ দুর্যোগের সময় তাঁরাই হয়ে উঠবেন প্রশাসনের চোখ এবং কান৷‌

Indien Vorbereitungen auf Zyklon Amphan
পশ্চিমবঙ্গের কাকদ্বীপে অস্থায়ী সংযোগ কেন্দ্র গড়ে তুলেছেন শখের হ্যাম রেডিও অপারেটররাছবি: West Bengal Radio Club

ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাব–এর তরফে অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস কাকদ্বীপ থেকে ডয়চে ভেলে–কে জানালেন, তাঁদের অস্থায়ী বেতার কেন্দ্র বসেছে গঙ্গাসাগর দ্বীপে, জি–প্লট বলে একটা দ্বীপ আছে, সেখানে, মৌসুনী দ্বীপে, কাকদ্বীপে৷ কন্ট্রোল রুম বসেছে সোদপুরে, চন্দননগরে, বারাসাতে, মধ্যমগ্রামে, দমদমে, কলকাতায়৷

‘অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানবে কী করে?‌ সাধারণ মানুষ তো ফোন করে জানাতে পারবে না!‌’

ঠিক কী কাজ হবে তাঁদের? অম্বরীশবাবু বললেন, ‘‌‘‌এই সাইক্লোনটা যখন হিট করবে, ফার্স্ট (‌চলে)‌ যাবে ইলেকট্রিসিটি৷ দেন যাবে মোবাইল৷ এই মোবাইল পরিষেবাটা যখন বন্ধ হয়ে যাবে, তখন, ধরুন গাছ পড়ে আছে, রোড ব্লক্‌ড৷ এবারে অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানবে কী করে?‌ সাধারণ মানুষ তো ফোন করে জানাতে পারবে না!‌ এবারে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়, রাস্তার ওপরে যদি মুভমেন্ট বন্ধ থাকে, সেই মুভমেন্টের ওপর নজর রাখা৷ বা কোনও গাড়ি ধরুন ব্যাক করে চলে আসল, তাকে জিজ্ঞেস করা হল, যে কী ব্যাপার, তুমি চলে আসলে কেন?‌সে হয়ত বলল, ওখানে গাছ পড়ে আছে৷ কোন জায়গাটায়, সেটা জিজ্ঞেস করে পরবর্তী স্টেশন, যেখানে কাটার আছে, তাদের খবর দেওয়া হল যে এরকম জায়গায় গাছ পড়ে আছে৷ তার পর ধরুন জল যাবে, খাবার যাবে— কোথায় যাবে, ইত্যাদি সমস্ত বিডিও অফিস থেকে, ডিজ্যাস্টার ম্যানেজমেন্ট অফিস থেকে রিলিফ ওয়ার্ক, এই রিলিফ ওয়ার্কটা এইখান থেকে পরিচালনা হবে৷’’
ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য তাণ্ডব্যের পাশাপাশি আছে করোনা প্যানডেমিক৷ কাজেই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ত্রাণসাহায্য বিলি, উদ্ধারের কাজ চালাতে হবে৷ নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণ পাওয়া কর্মীরা ছাড়া যা সম্ভব নয়৷ অম্বরীশবাবু জানাচ্ছেন, বিপর্যয় মোকাবিলার তালিম নেওয়া তাঁদের ৪৭ জন কর্মী উপকূলরেখা বরাবর থাকছেন আমফান–পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দিতে৷