1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আমদানির অনুমতিতেই কমেছে পেঁয়াজের দাম

৬ জুন ২০২৩

পেঁয়াজ আমদানি হতে না হতেই বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে পেঁয়াজের দাম কমেছে। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতির একদিন পর গতকাল থেকে দাম কমে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়েছে।

https://p.dw.com/p/4SF0U
Bangladesch | Waren für Bazar in Dhaka
ছবি: Sony Ramany/NurPhoto/picture alliance

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, সোমবার দেশি পেঁয়াজ কেজিতে বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। যা রোববারের খুচরা দামের চেয়ে ১০ টাকা কম।

কয়েক দিন আগেও পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। মঙ্গলবার তার দাম ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় নেমে এসেছে। মানে কেজি প্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা কমেছে।

গত মাসে দেশি জাতের পেঁয়াজের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৮১ শতাংশ। এরপরই অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে পেঁয়াজের বাজার। ফলে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় কৃষি মন্ত্রণালয়।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামানের বরাত দিয়ে দ্য ডেইলি স্টার বলছে, আমদানির অনুমতি পাওয়ার পর পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। এর থেকে বোঝা যায়, ব্যবসায়ীদের একটি অংশ বেশি মুনাফার জন্য বাজারে কারসাজি করছে।

শফিকুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, "পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা এক মাস আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে আমদানির অনুমতি দিতে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। তখন অনুমতি দেওয়া হলে ভোক্তাদের ভোগান্তি কম হতো।"

তিনি আরও বলেন, "উচ্চ মূল্যের সুফল কৃষক নয়, ব্যবসায়ীরা পেয়েছেন।"

যেহেতু ফসল কাটার মৌসুম প্রায় শেষের দিকে। তাই কৃষকদের কাছে খুব বেশি পেঁয়াজ মজুত নেই। বরং ব্যবসায়ীরাই মজুত করে বাজারে কারসাজি করেছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান শফিকুজ্জামান।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয় পাবনায়। এই জেলার কৃষকদের দাবি, পেঁয়াজের অস্থিতিশীল বাজারের জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের পাইকাররা দায়ী।

পাবনার সুজানগর উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের পেঁয়াজ চাষি কামরুজ্জামান বলেন, "এসব অঞ্চলের বড় ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের পাইকারি মূল্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। পর্যাপ্ত মজুত না করা পর্যন্ত তারা স্থানীয় এজেন্টদের মাধ্যমে পেঁয়াজ কিনে থাকেন।"

তিনি আরও বলেন, "বেশিরভাগ পেঁয়াজ যখন তাদের মজুতে থাকে, তখন বাজারে কারসাজি শুরু করেন।"

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, "গত এক মাস ধরে পেঁয়াজের দাম বাড়ার সুযোগ নিয়েছে একদল অসাধু ব্যবসায়ী। বাজার স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত আমদানি অব্যাহত থাকবে। পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫০ টাকায় নেমে এলে আমরা আমদানি নিয়ন্ত্রণ করব।"

ঢাকা, পাবনা ও চট্টগ্রামের পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, রোববারের ঘোষণার পর প্রতি মণ পেঁয়াজের দাম কমেছে ২৫০-৩০০ টাকা।

রাজধানীর শ্যামবাজারের পাইকারি বিক্রেতা মোহাম্মদ মাজেদ জানান, শনিবার প্রতি মণ পেঁয়াজ তিন হাজার ৪০০ থেকে তিন হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হলেও, এখন তা বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ১৫০ থেকে ৩ হাজার ৩০০ টাকায়।

তিনি দাবি করেন, কম দামের ভারতীয় পেঁয়াজ স্থানীয় বাজারে এলে পেঁয়াজের দাম আরও কমবে। এই ব্যবসায়ী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, "সব খরচ মেটানোর পর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কেজিতে প্রায় ২০ টাকা হবে।"

সাতক্ষীরার স্থলবন্দর দিয়ে এসেছে ২৮৭ মেট্রিক টন

সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দর দিয়ে ১১টি পেঁয়াজ ভর্তি ট্রাকে করে ইতোমধ্যে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ২৮৭ মেট্রিক টন। আরও ১০টির মতো পেঁয়াজ ভর্তি ট্রাক বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ভোমরা স্থলবন্দরের সুপার ইফতেখারুদ্দিন দৈনিক সমকালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি দৈনিক সমকালকে বলেন, সোমবার বিকেলে ভোমরা বন্দর দিয়ে ১১ ট্রাকে ২৮৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ ঢুকেছে। মঙ্গলবার সকালে আরও ১০ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হতে পারে। মানে ২১ ট্রাক পেঁয়াজ ইতোমধ্যে ভারতের ঘোজডাঙ্গা বন্দর দিয়ে ভোমরা স্থলবন্দরে প্রবেশ করেছে।

এলসি পরিবর্তন করে পেঁয়াজ আমদানি

ইফতেখারুদ্দিন দৈনিক সমকালকে বলেন, পুরাতন এলসি যাদের করা ছিল তারা এলসি পরিবর্তন করে পেঁয়াজ আমদানির চেষ্টা করছেন। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।

এদিকে দেশজুড়ে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমায় ক্রেতাদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, পেঁয়াজের আমদানি বাড়লে দাম আরও কমে আসবে।

সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড় বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আব্দুল বারী দৈনিক সমকালকে জানান, রোববার পর্যন্ত পেঁয়াজের দাম ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি ছিল। সরকার পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর সোমবার থেকে সেখানেও দাম কমে এসেছে। পেঁয়াজের দাম আরও কমবে বলে আশা করছেন এই ব্যবসায়ী। 

জেকে/কেএম (ডেইলি স্টার, সমকাল)