আবার কিং কং!
ফিল্ম জগতের কিংবদন্তি সেই অতিকায় বানরটি আবার ফিরেছে রুপোলি পর্দায়৷ ছবির নাম ‘কং: স্কাল আইল্যান্ড’, অর্থাৎ মাথার খুলির দ্বীপে কিং কং৷ এই সুযোগে রাজা কং-এর অন্যান্য অবতারদেরও একবার দেখে নেওয়া যেতে পারে৷
নামকরণেই রোমাঞ্চ!
প্রতি দশ বছর অন্তর একটি মনস্টার মুভি, অর্থাৎ দত্যিদানোদের নিয়ে ফিল্ম তৈরি না করলে হলিউডের চলে না – এবং সে সব ছবি সাধারণত বক্স অফিস হিট হয়ে থাকে৷ কিং কং পর্যায়ের সর্বাধুনিক ছবি ‘কং: স্কাল আইল্যান্ড’ এ সপ্তাহে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুক্তি পাচ্ছে৷ কিন্তু কিং কং-কে চিরকাল এরকম দেখতে ছিল না৷ ধরুন যদি ১৯৩৩ সালে ফেরা যায়...
প্রথম দর্শনেই...
১৯৩৩ সালে প্রথমবার আবির্ভূত হয়েই চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে সেই ঐতিহাসিক ছবি, বিশেষ করে তার আনকোরা সব নতুন স্পেশাল এফেক্ট দিয়ে৷ অভিনেত্রী ফে রে ছিলেন প্রথম নায়িকা, যাকে – আক্ষরিক অর্থে! - কিং কং-এর হাতের মুঠোয় দেখা যায়৷ ছবিটি বিপুল সাফল্য লাভ করে, জন্ম নেয় কিং কং ফ্র্যানচাইজ পর্যায়ের বিভিন্ন ছবি...
গডজিল্লা!
১৯৫৪ সালে এই জাপানি দৈত্যটির আবির্ভাব৷ সুবিশাল জীবটি নাকি পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতীক, বিশেষ করে ১৯৪৫ সালে হিরোশিমা ও নাগাসাকির উপর মার্কিন আণবিক বোমা নিক্ষেপের পর৷
কিং কং জাপানেও গেছে
হলিউডে গোটা দু’য়েক ফিল্ম করার পর কিং কং-কে জাপানেও যেতে দেখা যায়: ১৯৬২ সালের ছবিটির নাম ‘কিং কং বনাম গডজিল্লা’৷ ছবিতে দুই দানোর খণ্ডযুদ্ধ একেবারে মাউন্ট ফুজির ওপর – যুদ্ধ করলে কি হবে, কিং কং-এর কল্যাণে গডজিল্লার বক্স অফিস বেড়ে যায়৷
ডক্টর স্ট্রেঞ্জলাভ
স্ট্যানলি কুব্রিক-এর ১৯৬৪ সালের ছবিটির পুরো নাম হলো ‘ডক্টর স্ট্রেঞ্জলাভ অথবা: আমি কিভাবে উদ্বেগ কমাতে ও (আণবিক) বোমাকে ভালোবাসতে শিখলাম’৷ ছবিটির উপজীব্য ছিল নাকি ঠান্ডা লড়াই ও বিশ্বের বিপজ্জনক পরিস্থিতি৷ ছবিতে অভিনেতা স্লিম পিকেন্স যে সৈন্যটির ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, সে সবার কাছে মেজর ‘কিং’ কং বলে পরিচিত৷
দানবীয়
ষাটের দশকে কিং কং ও অন্যান্য দত্যিদানোদের নিয়ে তৈরি সব ছবি ক্রমেই আরো বেশি উদ্ভট ও মোটাদাগের হয়ে পড়ে – যার সেরা নিদর্শন সম্ভবত জাপানি চিত্রপরিচালক ইশিরো হন্ডা-র ১৯৬৭ সালের ছবি ‘কিং কং এস্কেপস’৷
নতুন হিরোইন
১৯৭৬ সালের ‘কিং কং’ ছবিতে কিং কং-এর কবলে পড়েছেন এক নতুন অভিনেত্রী, জেসিকা লাঙ্গে৷ এটাই ছিল তাঁর প্রথম পেশাদারি ছবি, যদিও ছবিটি বাঁধাগতের৷
কিং কং ছবিও ফ্লপ করে
সব কিং কং ফিল্মই যে বক্স অফিস হিট হয়েছে, এমন নয়৷ পরিচালক জন গিলারমিনের ‘কিং কং লিভস’ ছবিটি ছিল ১৯৭৬ সালের কিং কং ছবিটির সিকোয়েল – এমনকি তাতে কিং কং-এর জন্য এক বানরী প্রেমিকারও ব্যবস্থা করা হয়েছিল: লেডি কং৷ তা সত্ত্বেও ছবিটি দারুণভাবে ফ্লপ করে – কেন, সেটা মনস্তাত্ত্বিকরাই বলতে পারবেন৷
কিং কং-এর প্রত্যাবর্তন
সালটা ২০০৫, ততদিনে হলিউডে কমপিউটার টেকনোলজি এসে পড়েছে – আর তার সঙ্গে বিগ বাজেট আর চকমকে মার্কেটিং৷ কাজেই নিউজিল্যান্ডের চিত্রপরিচালক পিটার জ্যাকসনের অ্যাকশন-প্যাকড কিং কং রিবুট জনতাকে মোহিত করবে বৈকি৷
২০১৭
কিং কং এবার প্রেক্ষাগৃহে ফিরছে ‘কং: স্কাল আইল্যান্ড’ ছবিটিতে৷ মিডিয়ায় প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ভালোই, অনেকেই অ্যাকশনে পরিপূর্ণ কাহিনি ও বাস্তবধর্মী স্পেশাল এফেক্টের প্রশংসায় পঞ্চমুখ৷ প্রথম আবির্ভাবের ৮০ বছর পরেও দৃশ্যত কিং কং মানুষের মন ছুঁয়ে যায়...
প্রতিবেদন: ইয়োখেন ক্যুর্টেন/এসি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ