শান্তিপূর্ণ প্রদেশ হেরাত
৭ আগস্ট ২০১২আফগানিস্তানের অন্যান্য শহরের পথ-ঘাট ফাঁকা থাকলেও সকাল নয়টার দিকে হেরাতের পথে-ঘাটে চোখে পড়ে মানুষ ও গাড়ি-ঘোড়ার ব্যস্ততা৷ দোকান-পাট খোলা৷ চলছে কেনাকাটা, ব্যবসা-বাণিজ্য৷ দপ্তরে কাজে ছুটছেন চাকুরিজীবীরা৷ আর শিশুদের বিদ্যালয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বাবা-মা কিংবা অভিভাবক৷ ছোট ভাইকে সাইকেল চালনা শেখাচ্ছেন ২২ বছর বয়সি আহমাদ কোরাইশি৷ জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ'কে কোরাইশি বলেন, ‘‘এই প্রদেশে বসবাসকারী পরিবারের সদস্যরা মাঝে মাঝে বনভোজন করতে বাইরে বেরিয়ে পড়েন৷ এমনকি মাঝরাত পর্যন্ত তারা বাইরে নিরাপদে ঘুরতে পারেন৷'' স্থানীয় প্রশাসন বলছেন, ভবিষ্যৎ আফগানিস্তানের জন্য হেরাত একটি নমুনা হতে পারে৷
আফগানিস্তানের যেসব প্রদেশ কিংবা নগরীর নিরাপত্তার দায়িত্ব একেবারে প্রথমদিকে বিদেশি বাহিনীর কাছ থেকে আফগান নিরাপত্তা কর্মীদের হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে সেগুলোর একটি এই হেরাত প্রদেশ৷ ২০১১ সালের জুলাই মাসে ন্যাটো বাহিনী হেরাত প্রদেশের দায়িত্ব হস্তান্তর করে৷ এর পর থেকে পাঁচ শতাধিক জঙ্গি সদস্য অস্ত্র জমা দিয়ে আবারও সমাজে অঙ্গীভূত হয়েছে৷ এছাড়া নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি সাধনে আফগান পুলিশ, সেনা বাহিনী ও গোয়েন্দা দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন হেরাত প্রদেশের জনপ্রিয় গভর্নর দাউদ সাবা৷
সাবা বলেন, ‘‘জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সফল অভিযান, বিদ্রোহীদের অস্ত্র সমর্পণ এবং জঙ্গিদের সন্ত্রাসী হামলা ব্যর্থ করে দিতে পারা এসব কিছুই ভালো নিরাপত্তা ব্যবস্থার চিহ্ন৷ আমরা যে এখন রাতের বেলা চলাফেরা করতে পারি, তার অর্থই হলো আমরা নিরাপদ৷ এমনকি শুধু শহরেই নয় বরং গ্রামের দিকেও এখন মানুষ বাধাহীনভাবে দিন-রাত চলাফেরা করতে পারে৷ হেরাতে চলাফেরা করতে কোথাও কোনো বাধা নেই৷''
হেরাত থেকে নির্বাচিত আফগান জাতীয় সংসদের সদস্য রেজা কৌশক ওয়াতানদোস্ত বলেন, ‘‘আসলে ভালো মানের জীবন-যাত্রা এবং ভালো অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা থাকলে সাধারণত কেউ নিজেকে উড়িয়ে দিতে কিংবা অন্যদের খুন করতে যায় না৷ এর পাশাপাশি রয়েছে শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রভাব৷ বর্তমানে হেরাত প্রদেশের মানুষের এসব কিছুই রয়েছে৷'' হেরাতের অর্থনীতি উন্নতির পথে এবং মানুষগুলোও সুশিক্ষিত৷ তাই এমন সুফল পাওয়া সম্ভব হচ্ছে বলে মনে করেন ওয়াতানদোস্ত৷ তবে জঙ্গিদের তৎপরতা না থাকলেও সেখানে অপরাধী চক্রের উৎপাত নিয়ে কিছুটা সংকট এখনও রয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন অনেকেই৷
এএইচ / ডিজি (ডিপিএ)