1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আফগানিস্তানে পুরুষের ছদ্মবেশে মহিলা প্রার্থী

১৮ আগস্ট ২০০৯

মৌলবাদীদের হাত থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য আফগানিস্তানের নির্বাচনে এক মহিলা প্রার্থী পুরুষের ছদ্মবেশ ধারণ করেছেন৷ নিরাপত্তার খাতিরে, পুরুষের পোশাক পরে তিনি প্রাদেশিক পরিষদের প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/JDa4
ফাইল ফটোছবি: AP

মাথায় জড়ানো কালো পাগড়ি আর পরনে কুর্তা এবং শালোয়ার৷ তাকে ঘিরে থাকে অনেক পুরুষ এবং নারী৷ তিনি শোনেন তাদের প্রাত্যহিক জীবনের নানা সমস্যার কথা৷ আর নির্বাচনে জিতলে তার সমাধানেরও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি৷ তবে দেখতে পুরুষের মতো হলেও তিনি আসলে একজন নারী প্রার্থী৷ শুধুমাত্র কথা বললেই বোঝা যাবে যে তিনি তার আসল পরিচয় গোপন করতে চাইছেন৷ যদিও নিজ পরিচয়েই একজন নারী হিসাবে আফগানস্তানের আসছে নির্বাচনে জিততে চান ওকমিনা৷

তাহলে কেন এই ছদ্মবেশ! এই প্রশ্নের জবাবে, পাকিস্তান সীমান্তের কাছে খোস্ত প্রদেশের তানি জেলার মেয়ে ওকমিনা বলেন, মৌলবাদী বা কট্টরপন্থীদের হাত থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য তাঁর এই পদক্ষেপ৷ নির্বাচনী প্রচারের কাজে তাকে যেতে হয় আফগানস্তানের অনেক প্রত্যন্ত গ্রামে ৷ যেখানে মেয়েদের ঘরের বাইরে ঘুরে বেড়ানো খুব একটা নিরাপদ নয়৷ তাই এই পুরুষের ছদ্মবেশ৷

ওকমিনা আরো বলেন, আফগানস্তানে নির্বাচনের এই সময়েও নিরাপত্তার অবস্থা খুব ভালো নয়৷ তাই বাধ্য হয়েই এই সময়ে তাকে পুরুষের পোশাক পরতে হচ্ছে৷

আফগানস্তানে আসছে ২০ আগষ্টের নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদের জন্য ৩৫০ জন মহিলা প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন যা মোট প্রার্থীর শতকরা দশ ভাগ৷ আর প্রেসিডেন্ট পদে হামিদ কারজাই এর ৩৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে রয়েছেন দুই মহিলা ৷

আফগানস্তানের সংবিধান অনুযায়ী প্রাদেশিক পরিষদের মোট আসনের এক তৃতীয়াংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত৷ দেশের রাজনীতিতে মেয়েদের সম্পৃক্ত করতেই এই ব্যবস্থা৷ কিন্তু আফগানস্তানে এমন অনেক এলাকা আছে যেখানে মেয়েদের ঘরের বাইরে যাওয়া বা অচেনা ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলা নিষেধ৷ তাই মেয়েরা ঐ এলাকায় প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচার চালালে তারা হামলার শিকার হতে পারে ৷

জাতিসংঘ বলছে, অনেক মেয়ে প্রার্থীই ইতিমধ্যে হুমকির শিকার হয়েছেন৷ কেউ কেউ আত্মগোপন করতে বাধ্য হয়েছেন৷ আবার কেউ কেউ তাদের নিরাপত্তার জন্য নির্বাচনী প্রচার কাটছাঁট করেছেন৷

ওকমিনা অবিবাহিতা৷ তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি কাজ করে আসছেন সমাজের জন্য ৷ যখন তার মনে হয়েছে যে তিনি জনসমর্থন পাবেন তখনই নির্বাচনে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ তার মতে, আফগানস্তানে অধিকার যা আছে তা খুব সামান্য ৷ তিনি আক্ষেপ করে বলেন, পুরুষরা এখানে যা খুশি তা বলতে বা করতে পারে৷ কিন্তু মেয়েদের ক্ষেত্রে তা অন্যায়৷

ওকমিনা একজন মেয়ে হিসাবে আফগানস্তানের মেয়েদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে চান ৷ তাই তিনি প্রার্থী মেয়ে না ছেলে সেকথা বিবেচনায় না এনে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করবে এমন প্রার্থীকে ভোট দেয়ার আহবান জানান৷

প্রতিবেদক: ঝুমুর বারী

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক