1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আফগানিস্তানে পঞ্চম শতকের বিলুপ্ত সভ্যতা আবিষ্কার

২৩ আগস্ট ২০১০

পঞ্চম শতাব্দীর কোন সভ্যতা যদি হঠাৎ করে চোখের সামনে উঠে আসে, তাহলে কেমন হবে? বেশ স্বপ্ন বলে মনে হবে, তাই না? সম্প্রতি আফগান রাজধানী কাবুলের দক্ষিণে খনন কাজ চলাকালে প্রত্নতাত্ত্বিকদের সামনে ঠিক এমনই এক স্বপ্ন উঠে এসেছে৷

https://p.dw.com/p/OtqX
আফগানিস্তানে প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন বামিয়ানে মেয়েদের বাগানছবি: DW

আফগানিস্তান, যেখানে প্রতিদিনই ঘটছে হত্যা আর মৃত্যুর ঘটনা৷ পশ্চিমা শক্তি সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমাগতভাবে লড়াই করে চলেছে তালেবান জঙ্গিরা৷ এই চিত্র তো বিশ্ববাসীর জানা৷ কিন্তু এর বাইরেও সেখানে ঘটনা ঘটে৷ চলে স্বাভাবিক কাজ৷ সেইরকমই এক খনন কাজ চলছিল৷ রাজধানী কাবুলের দক্ষিণে লগার প্রদেশের আইনাক অঞ্চলে আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে৷ হঠাৎ প্রত্নতত্ত্ববিদরা পৌঁছে গেলেন পঞ্চম শতকের এক সভ্যতায়৷

সেদিন আফগান প্রত্নতত্ত্ববিদদের চোখের সামনে উঠে এলো খ্রিস্ট উত্তর পঞ্চম শতকের অপূর্ব এক সভ্যতা৷ কাবুলের দক্ষিণে আবিষ্কৃত এই সভ্যতা বৌদ্ধ যুগের৷ খননে ১২ কিলোমিটার লম্বা যে সভ্যতা উন্মোচিত হয়েছে, সেখানে রয়েছে একটি মন্দির, বৌদ্ধ উপাসনালয়, অসম্ভব সুন্দর সব ঘর, ছোট-বড় মূর্তি, তার মধ্যে দুটি মূর্তির গায়ে সোনা এবং মুদ্রার তৈরি রঙিন গহনা৷

বাংলাদেশের জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক এবং এই অঞ্চলের খনন কাজে সরাসরি জড়িত সুফি মোস্তাফিজুর রহমান এই আবিষ্কারের গুরুত্ব নিয়ে বললেন, এই আবিষ্কার এই জন্যেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ কারণ বৌদ্ধ সভ্যতা শুরু হয়েছিল এই অঞ্চল থেকে৷ এর আগে আফগানিস্তানে আবিষ্কৃত সভ্যতা হারিয়ে গিয়েছিল৷ তিনি বলেন, এই সভ্যতার যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন৷

এদিকে আফগানিস্তানের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ নাদের রাসৌলি বলেছেন, আবিষ্কৃত এই সভ্যতা রক্ষায় আমাদের যেমন বিদেশি সাহায্য প্রয়োজন তেমনই এই ধরনের খনন আবারো চালানোর জন্য প্রয়োজন সহায়তাও৷ যেখানে এই বৌদ্ধ যুগের সভ্যতা আবিষ্কৃত হয়েছে তার কাছাকাছি একটি মাইনিং কাজ বা খনি-খনন কাজ চালাচ্ছে চীন৷ এই কাজের জন্য চীন আফগানিস্তানে কয়েক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগও করেছে৷ রাসৌলি বলেছেন, চীনের এই খনি-খনন ঐ অঞ্চলে আবিষ্কৃত সভ্যতার তেমন কোন ক্ষতি করবে না৷

১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তান ছিল তালেবান দখলদারিত্বে৷ সেই সময় তারা ধ্বংস করেছে বামিয়ানের বুদ্ধ মূর্তিগুলো৷ তাদের দৃষ্টিতে এই ধরনের মূর্তি ইসলামের জন্য অবমাননাকর৷ রাসৌলি বলেছেন, কাবুলের দক্ষিণে পাওয়া এই সভ্যতার নিদর্শনগুলো প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাবার মত ব্যবস্থা সরকারের নেই৷

কাবুলের এই প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারের সমকালীন কোন কিছু বাংলাদেশে আবিষ্কৃত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে অধ্যাপক মোস্তাফিজ বলেন, ''দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ বিহার কিন্তু বাংলাদেশেই৷ যার নাম বৌদ্ধ বিহার পাহাড়পুর৷ নবম শতকের দিকে ময়নামতি, পুন্ডনগর বৌদ্ধ বিহার আবিষ্কার হয়েছে৷ এই সময়ে আবিষ্কৃত ৩০টি বৌদ্ধ বিহারকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শহর বলি৷ এবং পুন্ডনগরের ২০ টি বৌদ্ধ বিহার, এটাও কিন্তু সমৃদ্ধ বৌদ্ধ সভ্যতার কথাই বলে৷''

প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন