1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আত্মঘাতী হামলাকারীদের তালেবানের ‘পুরস্কার’

২ নভেম্বর ২০২১

তালেবান সরকারের অন্তর্বর্তিকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এক অনুষ্ঠানে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীদের প্রশংসা করেন৷ অনুষ্ঠানে হামলাকারীদের পরিবারের সদস্যদের আর্থিক অনুদান এবং জমিও দেয়া হয়৷

https://p.dw.com/p/42ThE
Afghanistan Konflikt l Krieg
ছবি: picture alliance/AA/H. Sabawoon

হত্যাকারীদের এভাবে মহিমান্বিত করায় নিহতদের পরিবারের সদস্যরা ক্ষুব্ধ, হতাশ৷

গত ২০ অক্টোবর কাবুলের এক হোটেলে গত কয়েক বছরে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো ব্যক্তিদের পরিবারকে ‘পুরস্কৃত' করেন তালেবান সরকারের অন্তর্বর্তিকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দীন হাক্কানি৷  সেখানে বোমা হামলাকারীদের পরিবারের সদস্যদের হাতে আর্থিক অনুদান এবং জমির দলিল তুলে দেয়া হয়৷

মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ক্কারি সাঈদ খোস্তি নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে সেই অনুষ্ঠানের সচিত্র সংবাদ প্রকাশ করেন৷ টুইট বার্তায় তিনি বলেন, তালেবান সরকার আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীদের কাছে কৃতজ্ঞ, কারণ, তাদের অবদান ছাড়া ক্ষমতায় আসা সম্ভব ছিল না৷

আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীদের পরিবারকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পুরস্কৃত করার খবরে গত কয়েক বছরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ও আহত শত শত মানুষের স্বজনরা ক্ষুব্ধ, মর্মাহত৷

২৯১৮ সালে এক তালেবান আত্মঘাতীর বোমা হামলায় আফগান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে অন্তত ৯৫ জন মারা যান, আহত হন কমপক্ষে ১৮৫ জন৷ সেদিনের হামলায় বাবাকে হারিয়েছিলেন শরিফা৷ সরকারের দায়িত্বশীল এক মন্ত্রী হত্যাকারীদের মহিমান্বিত করে বক্তব্য রেখেছেন, তাদের পরিবারকে পুরস্কৃত করেছেন- এ খবরে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে শরিফা বলেন, ‘‘যখন জানলাম তারা (তালেবান) আমাদের সহায়তা না করে যা্রা নিজেদের এবং অন্যদের হত্যা করেছে তাদের প্রশংসা করেছে, আমার হৃদয়টা তখন যেন ভেঙে গিয়েছিল৷''

এক হামলায় বাবা হারানোয় শরিফা এবং তার পরিবারের অন্য সদস্যরা এখনো বিপর্যস্ত৷ আর্থিক দৈন্য তো আছেই, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আতঙ্কও অনেক বেড়েছে৷

৫৬ বছর বয়সি আজিজ ২০১৮ সালের আরেক হামলায় দুই সন্তানকে হারান৷ কাবুলে সেদিন সবাই নওরোজ (আফগানিস্তানের নববর্ষ) উদযাপনে ব্যস্ত৷ ২৪ বছর বয়সি মেহদির কয়েকদিন পরই বিয়ে৷ ছোট ছেলে রুহুল্লাহর বয়স তখন সবে নয় বছর৷ মোট ২৬ জন মারা গিয়েছিল সেই হামলায়৷ জীবনটাকে শোকের চাদরে ঢেকে দেয়া সেই দিনটির কথা কোনোদিন ভুলতে পারবেন না আজিজ৷ তার স্ত্রী-ও পারবেন না সন্তান হারানোর বেদনা ভুলতে৷ তালেবান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেই ধরনের হত্যাকারীদের মহিমান্বিত করেছেন জেনে আজিজের মনে হচ্ছে এমন অবস্থায় বেঁচে থাকাই অর্থহীন৷ দুই সন্তান হারানো বাবা ডয়েচে ভেলেকে বললেন, ‘‘আমার এ বিষয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই৷ তারা অকারণে আমার সন্তানদের হত্যা করেছে৷ আমার জীবন এমনিতেই তো অর্থহীন৷ এখন ওদের (তালেবান) উচিত আমাকেও মেরে ফেলা ৷''

বোমাহামলাকারীর বাড়ি পর্যটকদের নতুন আকর্ষণ!

অন্তর্বর্তিকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দীন হাক্কানি আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের পুরস্কৃত করেছেন জেনে তালেবান সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন অনেকেই৷ সাবেক অনুসন্ধানী সাংবাদিক সায়েদ তারিক মাজিদি টুইটারে কটাক্ষ করে লিখেছেন, ‘‘আত্মঘাতী বোমাহামলাকারীদের নতুন শহর দেখতে শিগগির চলে আসুন কাবুলে৷''

হুসেইন সিরাত, আহমাদ হাকিমি/এসিবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য