অ্যামেরিকার ‘ফার্স্ট চিলড্রেন’
ডোনাল্ড ট্রাম্পের দশ বছর বয়সের ছেলে ব্যারন এখনই হোয়াইট হাউসে আসছে না৷ তবে বিগত কয়েক দশকের মধ্যে অ্যামেরিকার সবচেয়ে কচি ‘ফার্স্ট চিলড্রেন’-দের মধ্যে গণ্য হবে সে৷
ব্যারন ট্রাম্প
অ্যামেরিকার ৪৫তম প্রেসিডেন্টের পাঁচ সন্তান, তাদের মধ্যে একমাত্র ১০ বছর বয়সি ব্যারনই হয়ত বাবা-মায়ের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে থাকবে, কেননা তার অন্য ভাই-বোনেরা অনেক বড়৷ বলতে কি, কেনেডি আমল যাবৎ ব্যারনই হবে প্রথম পুত্রসন্তান, যে হোয়াইট হাউসে বাস করবে৷ জানা গেছে, ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ও ব্যারন স্কুলের বছর শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিউ ইয়র্কেই থাকবেন৷
মালিয়া আর সাশা ওবামা
ওবামাদের দুই কন্যা গত আট বছর ধরে হোয়াইট হাউসেই থেকেছে৷ ১৮ বছর বয়সের মালিয়া কলেজে যাবার জন্য তৈরি হচ্ছে ও ‘হোয়াইট হাউস ছাড়তে ব্যগ্র’, বলেছেন তার বাবা৷
বার্বারা বুশ ও জেনা বুশ হাগর
প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ ও লরা বুশের যমজ কন্যারা কোনোকালেই ১৬০০ নম্বর পেনসিলভানিয়া অ্যাভেনিউতে থাকেননি৷ তাঁদের বাবা যখন প্রেসিডেন্ট হন, তখন দু’জনেই কলেজে পড়েন৷ কিন্তু তাঁদের দাদু জর্জ এইচ ডাব্লিউ বুশ যখন অ্যামেরিকার ৪১তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন তাঁরা হোয়াইট হাউসে অনেক সময় কাটান৷ বার্বারা এখন গ্লোবাল হেল্থ কোর-এর কর্মী; জেনা সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেন৷
চেলসি ক্লিন্টন
এমি কার্টার-এর পর বিল আর হিলারি ক্লিন্টনের কন্যা চেলসি ছিলেন হোয়াইট হাউসে প্রথম শিশু৷ ‘‘হোয়াইট হাউসে থাকাটা যে কতটা অসাধারণ, তা আমি কোনোদিন ভুলিনি’’, একবার একটি সাক্ষাৎকারে বলেন চেলসি৷ ১৭ বছর বয়সে চেলসি হোয়াইট হাউস ছেড়ে কলেজে যান৷ বর্তমানে তিনি ক্লিন্টন ফাউন্ডেশনে কাজ করেন৷
এমি কার্টার
জিমি আর রোজালিন কার্টারের চার সন্তান, কিন্তু তাঁদের মধ্যে শুধু এমি প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডির সঙ্গে হোয়াইট হাউসে থেকেছেন, ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল অবধি৷ কার্টার যখন প্রেসিডেন্ট হন, তখন এমির বয়স নয়৷ ষাটের দশকের গোড়ায় কেনেডির পুত্র-কন্যাদের পর এমিই ছিলেন হোয়াইট হাউসে প্রথম কমবয়সি শিশু৷ এককালে রাজনৈতিক প্রতিবাদে সক্রিয় অংশ নিতেন এমি, কিন্তু ১৯৯৬ সালে বিবাহ করার পর লোকচক্ষুর আড়ালেই রয়েছেন৷
ক্যারোলাইন কেনেডি
১৯৬১ সালে জন এফ কেনেডি যখন প্রেসিডেন্ট হন, তখন ক্যারোলাইনের বয়স ছিল তিন, জন জুনিয়র একেবারেই শিশু৷ জন জুনিয়র একটি বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ১৯৯৯ সালে৷ ক্যারোলাইন কেনেডি আজ পেশায় উকিল, বিবাহিত ও তিন সন্তানের জননী৷ ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল অবধি তিনি জাপানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন৷
কেনেডির দুই সন্তান
দু’বছরের বেশি সময় ধরে ক্যারোলাইন আর জন হোয়াইট হাউসে ঘুরে বেরিয়েছে, প্রতিদিন সকালে বাবাকে পায়ে হেঁটে ওভাল অফিসে পৌঁছে দিয়েছে, ওভাল অফিসে খেলাও করেছে৷ হোয়াইট হাউসের লনে তার ম্যাকারোনি নামের ঘোড়ার ওপর চড়ত ক্যারোলাইন – সে ছিল মিডিয়ার ডার্লিং৷ অন্যান্য ছবিতে জন প্রেসিডেন্টের টেবিলের তলায় লুকোচ্ছে বা সেক্রেটারির টাইপরাইটারের চাবি টিপছে৷ হোয়াইট হাউস ছিল এই দু’টি শিশুর বাড়ি ও খেলার জায়গা৷
ফোর্ড পরিবার
১৯৭৪ থেকে ১৯৭৭ সাল অবধি জেরাল্ড ফোর্ডের সংক্ষিপ্ত প্রেসিডেন্সির সময় তাঁর চার সন্তানের কেউই হোয়াইট হাউসে থাকেনি৷ তবে ১৯৭৫ সালে সুজান (ডান দিক থেকে দ্বিতীয়) তার ‘সিনিয়র প্রম’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঐ হোয়াইট হাউসে, সেটা ১৯৭৫ সালে, সুজানের বয়স যখন ১৭৷ ছবিতে ফার্স্ট ফ্যামিলিকে দেখা যাচ্ছে হোয়াইট হাউসের লনে, ১৯৭৬ সালে৷
কোয়েন্টিন রুজভেল্ট
প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট তাঁর স্ত্রী ও ছয় সন্তানকে নিয়ে হোয়াইট হাউসে ছিলেন ১৯০১ থেকে ১৯০৯ সাল অবধি৷ কোয়েন্টিনের বয়স তখন চার৷ তার একটি আলগনকুইন নামের টাট্টু ঘোড়া ছিল৷ একদিন কোয়েন্টিন সেই টাট্টু ঘোড়াকে তার ভাইয়ের ঘরে নিয়ে যায়, কেননা ভাই তখন অসুস্থ৷ ‘‘আর কোনো পরিবার আমাদের মতো হোয়াইট হাউস উপভোগ করেছে বলে আমার মনে হয় না’’, একবার মন্তব্য করেছিলেন কোয়েন্টিনের বাবা প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট৷
ট্যাড লিংকন
আব্রাহাম লিংকন তাঁর স্ত্রী মেরি ও ছেলে-মেয়েদের হোয়াইট হাউসে নিয়ে এসেছিলেন৷ ছোট্ট ট্যাড যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলতে ভালোবাসত; তার বাবা মার্কিন গৃহযুদ্ধের সময় (১৮৬১-৬৫) প্রেসিডেন্ট ছিলেন কিনা৷ মেরির বিবৃতি অনুযায়ী লিংকন তাঁর ছেলে-মেয়েদের খুব প্রশ্রয় দিতেন, বলতেন, ‘‘আমার ইচ্ছে, আমার ছেলে-মেয়েরা স্বাধীন, সুখি ও বাবা-মায়ের শাসনমুক্ত হোক৷’’
প্রতিবেদন: ডাগমার ব্রাইটেনবাখ/এসি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ