অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকেও তাক লাগানো বর্ষসেরা শিশু
টাইম ম্যাগাজিন প্রথমবারের মতো বর্ষসেরা শিশুর তকমা দিলো এক বিস্ময় কিশোরীকে৷ বিস্তারিত ছবিঘরে...
টাইম ম্যাগাজিনের স্বীকৃতি
প্রতি বছরই নিয়ম মেনে বর্ষসেরা ব্যক্তির শিরোপা সেবছরের সবচেয়ে নজরকাড়া ব্যক্তিত্বের জন্য তুলে রাখে মার্কিন পত্রিকা টাইম৷ এ বছর প্রথম বর্ষসেরা ব্যক্তির পাশাপাশি বর্ষসেরা শিশুর স্বীকৃতিও চালু করলো তারা৷ এর আগে, বর্ষসেরা ব্যক্তির তালিকায় একমাত্র অপ্রাপ্তবয়স্ক নাম ছিল সুইডেনের ১৬ বছর বয়েসি পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবের্গ৷
কে এই বর্ষসেরা শিশু?
আট থেকে ১৬ বছরের পাঁচ হাজারেরও বেশি প্রতিভাবান কচিকাঁচার ভিড় থেকে ১৫ বছর বয়েসি গীতাঞ্জলী রাও-কে বেছে নেয় টাইম কর্তৃপক্ষ৷ এই কিশোরী বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিপ্রেমী অল্প বয়েসেই পানিতে সীসার মাত্রা মাপার একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছে৷ বড় হয়ে ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিতে জেনেটিকস ও এপিডেমিওলজি নিয়ে পড়তে আগ্রহী গীতাঞ্জলী৷
অ্যাঞ্জেলিনা জোলিও মুগ্ধ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো রাজ্যের ডেনভার শহরের বাসা থেকেই টাইম ম্যাগাজিনকে একটি সাক্ষাৎকার দেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত গীতাঞ্জলী৷ সেখানে তাকে প্রশ্ন করার ভূমিকায় ছিলেন অভিনেত্রী ও সমাজসেবী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি৷ গীতাঞ্জলীর মেধা ও সহজ আচরণ মুগ্ধ করে বিশ্বখ্যাত এই তারকাকেও৷
বছরের বিশ্বসেরা কিশোরীর কথা
‘‘আমি আর পাঁচটা বিজ্ঞানীর মতো দেখতে নই৷ যে বিজ্ঞানীদের আমরা টেলিভিশনে দেখি, তারা সবাই বয়স্ক, পুরুষ ও শ্বেতাঙ্গ৷ আমার অবাক লাগে এটা ভেবে যে, এভাবে কিছু নির্দিষ্ট লিঙ্গ, বর্ণ ও বয়সের মানুষকেই আমরা কিছু বাঁধাধরা কাজ করতে দেখতে অভ্যস্ত৷ আমার মতো কাউকে দেখতে পেতাম না, সেটা আরো কঠিন ছিল৷ তাই আমি সবাইকে বলতে চাই যে, আমি যদি এটা করতে পারি, তাহলে যে কেউ তা পারবে৷’’
প্রযুক্তিতে আগ্রহ
গীতাঞ্জলির বক্তব্য, ‘‘আমি দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই ভাবতাম কীভাবে প্রযুক্ত দিয়ে সমাজে পরিবর্তন আনা যায়৷’’ তাই, দশ বছর বয়সেই সে তার বাবা-মাকে বলে যে, পানির মান যাচাই করতে সে কার্বন ন্যানোটিউব সেন্সর প্রযুক্তি নিয়ে যেনভার ওয়াটার কোয়ালিটি রিসার্চ ল্যাবে কাজ করতে চায়৷ শুধু বিশুদ্ধ পানিই নয়, গীতাঞ্জলি ইতিমধ্যে তৈরি করেছে এমন একটি বিশেষ অ্যাপ ও এক্সটেনশন, যাতে করে সাইবার বুলিং রোখা যায়৷
আরো কিছু স্বীকৃতি
টাইম ম্যাগাজিনের এই সম্মান ছাড়াও, ফোর্বসের ‘৩০ আন্ডার ৩০’ অর্থাৎ অনূর্ধ্ব ৩০ সফল ব্যক্তির তালিকাতেও ছিল গীতাঞ্জলি৷ এছাড়া ২০১৭ সালে ‘ডিসকভারি ইয়ং সায়েন্টিস্ট চ্যালেঞ্জ’-এও জয়ী হয় প্রতিভাবান এ কিশোরী বিজ্ঞানী৷ ২০২০ সালের বিশ্বের সেরা তরুণ উদ্ভাবকের তকমাও গীতাঞ্জলীকেই দিয়েছে টাইম ম্যাগাজিন৷