1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘অসাম্প্রদায়িক ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চাই’

১৯ ডিসেম্বর ২০১১

বাংলাদেশের বিজয়ের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে অনুষ্ঠিত হলো আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান৷ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত লেখক ও কলামিস্ট আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীসহ জার্মানির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ৷

https://p.dw.com/p/13V9a
ফ্রাঙ্কফুর্টের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীছবি: Rokeya Sultana Rothe

জার্মান আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে ছিল দেশাত্ববোধক নাচ, গান ও কবিতা আবৃত্তি৷ বিজয় দিবসের আবেগময় এই অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে ডয়চে ভেলের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী এই দিনে তাঁর অনুভূতি সম্পর্কে বলেন, ‘‘এই দিনে আমার অনুভূতি মিশ্র৷ একদিকে আনন্দতো হবেই৷ কারণ সারাজীবনের স্বপ্ন ছিল কৈশর থেকে যে আমরা দেশটাকে স্বাধীন দেখবো৷ দেশটা স্বাধীন হয়েছে৷ আরেকটা অনুভূতি এই দেশটাকে স্বাধীন করতে গিয়ে আমরা লক্ষ লক্ষ মুক্তিযোদ্ধাকে হারিয়েছি, হাজার হাজার মা-বোন ইজ্জত হারিয়েছে৷ এছাড়া আমাদের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব অনেককে হারিয়েছি এবং বুদ্ধিজীবীদের হারিয়েছি৷ এই যে একটা বেদনা - সেটা চল্লিশ বছরেও সমানভাবে বিদ্যমান৷ সেই সঙ্গে একটা আক্ষেপও আছে যে, আমরা যে স্বপ্ন দেখেছিলাম যে বাংলাদেশ গড়ার, সেই বাংলাদেশ গড়ে ওঠেনি৷ বারবারই সেটা আমাদের আদর্শের কক্ষ থেকে বিচ্যুত হচ্ছে এবং স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে যারা বিশ্বাসী নয় তাদের হাতে গিয়ে দেশটা পড়ে যাচ্ছে৷ তাই সেই আক্ষেপও রয়ে গেছে আমাদের মনে৷''

Kulturel Veranstaltung in Frankfurt für 40. Tag der Unabhängigkeit von Bangladesch
চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানছবি: Rokeya Sultana Rothe

বিগত চল্লিশ বছরে স্বাধীন বাংলাদেশের অর্জন কতটুকু বলে আপনি মনে করেন - এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের একটি বিরাট অর্জন হলো - হাজার বছর পরে বাঙালি জাতি তার আত্মপরিচয় ফিরে পেয়েছে এবং বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে৷ বাংলাদেশের পতাকা উড়ছে বিশ্বের সর্বত্র এবং বাংলাদেশের অভিবাসীরা আজ জার্মানিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এবং বাংলাদেশের সাহিত্য-সংস্কৃতির গৌরব বহন করছে৷ এছাড়া দারিদ্র্য থাকলেও আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে৷ দেশ আধুনিকতার পথে এগুচ্ছে, মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়ছে - এটা আমাদের বিরাট অর্জন৷''

বাংলাদেশের অর্জন অনেক কিছু থাকলেও এখনও বাংলাদেশে বিরাজমান দুর্নীতি, রাজনৈতিক সহিংসতা এবং সন্ত্রাস৷ এসব কিছুর কবল থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘চতুর্দিকে আজকে যে বিশ্বায়ন ঘটছে, তার প্রভাব বাংলাদেশের উপরেও রয়েছে৷ আসলে আমাদের যতোটা খারাপ ভাবা হয়, আমরা ততোটা দায়ী নই৷ যেমন ধরুন সন্ত্রাসের কথা যদি বলি, সন্ত্রাস আজ বিশ্বব্যপী৷ এমনকি অ্যামেরিকার মতো সুপার পাওয়ারও আজ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে পারছে না৷ আজকের সন্ত্রাস, রাজনৈতিক সন্ত্রাস, সামাজিক সন্ত্রাস, অর্থনৈতিক সন্ত্রাস বৈশ্বিক পুঁজিবাদের একটি ফল৷ সেটাতে আমরাও ভুগছি৷ আমরা চেয়েছিলাম সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে সেটা আমরা পারিনি, সেটা আমাদের ব্যর্থতা৷ তবে আমি চাই যেন আমার জীবদ্দশাতেই দেখে যেতে পারি যে, বঙ্গবন্ধু যেমন অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন, তেমন একটি অসাম্প্রদায়িক, সুখী, সমৃদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশে পরিণত হয় এটি৷''

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান