1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অর্থনীতিতে অবদান রাখবে বিকল্প খামার

ফাতেমা আবেদীন
২৮ জানুয়ারি ২০১৯

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখতে যাচ্ছে বিকল্প খামার৷ উট, উট পাখি, টার্কি, সাপ, ব্যাং, কুচিয়া,কাঁকড়া, কুমিরের মতো প্রাণির খামার গড়ে উঠছে বাণিজ্যিকভাবে৷

https://p.dw.com/p/3CHIG
Kuba Alljährliche Massenwanderung der Landkrabben
ছবি: REUTERS/A. Meneghini

সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে রপ্তানির৷ এ সব বিকল্প খামারের তালিকা এখনো কৃষি সম্প্রসারণ বা মৎস ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত হয়নি ঠিকই, কিন্তু ব্যক্তি উদ্যোগে চলছে কাজ৷ তবে কুচিয়া, কাঁকড়া, কাছিম চাষ মৎস অধিদপ্তর স্বীকৃত এবং রাষ্ট্রীয়ভাবেই রপ্তানি প্রকল্প রয়েছে৷

মৎস ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী দেশের ছয়টি জোনে পূর্ণাঙ্গভাবে কুচিয়া ও কাঁকড়া চাষ হচ্ছে৷ বরিশাল, নোয়াখালী, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নেত্রকোণা, শেরপুর, ময়মনসিংহ জেলায় মৎস অনেক খামারি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কুচিয়া ও কাঁকড়া চাষ করছেন৷ 

উটের খামার হয়েছে দেশের ৪-৫টি  স্থানে৷ দেশের সর্বপ্রথম উটের খামার হয় রাজধানী ঢাকার কমলাপুরে৷ ২০০৪ সালে কমলাপুরে দেওয়ানবাগ দরবার শরীফের ১০ বিঘা জায়গায় এই খামার গড়ে ওঠে৷ গত ১৫ বছরে বাণিজ্যিকভাবে লাভের মুখ দেখেছে খামারটি৷ এছাড়া মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় জাকের হোসেন ও খুলনার আবদুল জব্বারের উটের খামার উল্লেখযোগ্য৷ ইতোমধ্যে বাণিজ্যিক সফলতার মুখ দেখছেন জাকের৷

অন্যদিকে দিনাজপুরে উটপাখি লালন করে রীতিমতো তারকা বনে গেছেন নারী কৃষি উদ্যোক্তা আনজুমান আরা৷ যেহেতু বাংলাদেশের আবহাওয়া উটপাখির খামার করার উপযোগী, সে চিন্তা থেকে বাণিজ্যিকভাবে খামার করার পরিকল্পনা করেন তিনি৷ আফ্রিকা থেকে ২৪টি উটপাখির বাচ্চা এনে খামার দেন৷ ছ'মাসে তাঁর প্রতিটি উটপাখির ওজন ৮০ থেকে ৯০ কেজি হয়েছে৷ বাণিজ্যিকভাবে রপ্তানির পরিকল্পনা করছেন তিনি৷

দেশের দ্বিতীয় উট পাখির খামার রয়েছে খুলনায়৷ সজিব আহমেদ ব্যক্তি উদ্যোগে বাণিজ্যিকভাবে তাঁর সমন্বিত খামারে উট পাখি, গাড়ল (এক প্রজাতির ভেড়া), টার্কি ও ছাগল পালন করছেন৷

এদিকে গত তিন বছর টার্কি চাষে রীতিমতো বিপ্লব এসেছে বাংলাদেশে৷ দেশে প্রায় শতাধিক খামারে টার্কি চাষ হচ্ছে৷ টার্কি চাষের পর বাজারজাতকরণের জন্য গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি সংগঠন৷ এর মধ্যে ‘টার্কি মিট বিডি' অন্যতম৷ প্রতিষ্ঠানটি টার্কি চাষে প্রশিক্ষণও দিয়ে আসছে৷ মুরগির বিকল্প হিসেবে টার্কির চাষ বেশ লাভজনক বলেই মনে করছেন এর চাষীরা৷ প্রতি কেজি টার্কি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে৷ ফলে একটি ১০ কেজি ওজনের টার্কির দাম ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা৷ অচিরেই টার্কি রপ্তানিকারক হিসেবে উল্লেখযোগ্য দেশগুলোর তালিকায় নাম লেখানোর স্বপ্ন দেখছেন খামারিরা৷

অন্যদিকে কোনো ধরনের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া একেবারে  ব্যক্তি উদ্যোগে দেশে সাপের চাষ হচ্ছে৷  তবে সাপের বাজারজাতকরণ, রপ্তানির কোনো সুযোগ না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন স্থানে খামারিরা সাপের চাষ করে এলেও লাভের মুখ দেখছেন না কেউ৷ বাংলাদেশে সাপচাষীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাড়া জাগিয়েছেন পটুয়াখালির আবদুর রাজ্জাক, রাজবাড়ির রবিউল ইসলাম রঞ্জু, গাজীপুরের কাপাসিয়ার বরুন গ্রামের যুবক প্রদীপ চন্দ্র দাস, রাজশাহীর বোরহান বিশ্বাস৷ এর মধ্যে প্রদীপ চন্দ্র সাপের খামারিদের সংঘও গড়ে তুলেছেন৷

তবে রাষ্ট্রীয়ভাবে সাপ বা বিষ রপ্তানির কোনো সুযোগ নেই৷ ২০০৮ সালে সাপ চাষ ও বিষ রপ্তানি নিয়ে একটি গেজেট ও ২০১৪ সালে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হলেও এ বিষয়টির কোনো সুরাহা হয়নি৷ অনেক চাষী সাপের পাশাপাশি কেঁচো বা কচ্ছপ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন৷

অন্যান্য বিকল্প প্রাণীর চাষে রাষ্ট্রীয় পৃ্ষ্ঠপোষকতা না থাকলেও বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে কাছিম চাষ হচ্ছে৷ এই উদ্যোগে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও মিলেছে প্রকল্প মালিকদের৷ বিরল বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপ সংরক্ষণের জন্য ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান ছাড়াও বন বিভাগের বর্ধিত আরেকটি প্রজেক্ট রয়েছে সুন্দরবনের করমজলে৷ এছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে অ্যাকুরিয়ামে বিক্রির উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি স্থানে কাছিম চাষ হচ্ছে৷

বাংলাদেশে বিকল্প খামারের ভবিষ্যত কেমন বলে মনে হয়? লিখুন মন্তব্যের ঘরে৷ 

Fatema Abedin, Intern, DW Bangla section.
ফাতেমা আবেদীন বাংলাদেশের উদ্যোক্তা ও সাংবাদিক
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য