1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অরুণাচলে ভারতীয় ভূখণ্ডে চীনা সেনা, উত্তেজনা

৮ অক্টোবর ২০২১

ভারতীয় সীমানায় আবার ঢুকে পড়েছিল চীনের সেনা। অরুণাচল প্রদেশে। উত্তেজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের পর সমস্যা মেটে।

https://p.dw.com/p/41QZD
বুম লায় ভারত-চীন সীমান্ত। ছবি: Adnan Abidi/Reuters

লাদাখ, উত্তরাখণ্ডের পর এবার অরুণাচল প্রদেশে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকলো চীনের সেনা। গত সপ্তহে তারা অরুণাচলের তাওয়াংয়ের কাছে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ে। প্রায় দুইশ চীনা সেনা ঢুকেছিল বলে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রের খবর। চীনের সেনা একটি বাঙ্কার ভাঙার চেষ্টায় ছিল।

ভারতীয় সেনা দ্রুত সেখানে যায়। কয়েকজন চীনা সেনাকে তারা ধরে ফেলে। এরপর ওখানে দুই দেশের সেনা কর্মকর্তারা বৈঠক করেন। সমস্যা মেটে। দুই দেশের সেনাই তাদের আগের অবস্থানে ফিরে গেছে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা ধরে ভারতীয় ও চীনা সেনা সেখানে মুখোমুখি ছিল। কিঞ্চিত শারীরীক বলপ্রয়োগও হয়। তবে কোনো পক্ষের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। কেউ গুরুতর আহত হননি বা মারা যাননি।

বারবার অনুপ্রবেশের অভিযোগ

গত বছর পাঁচ মে লাদাখে দুই দেশের সেনার মধ্যে প্রবল সংঘর্ষ হয়। ভারতের অভিযোগ ছিল, চীনের সেনা ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ে ও এলাকা দখল করে। আর চীন অভিযোগ করেছিল, ভারতীয় সেনা তাদের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েছে। ভারতের বেশ কিছু সেনার প্রাণ যায়। চীনের সেনাও মারা যায়। লাদাখের উত্তেজনা দীর্ঘদিন ধরে চলে। তারপর ছোটখাট সীমান্ত পার হওয়ার ঘটনা চলছেই।

সংবাদসংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, গত ৩০ অগাস্ট নন্দাদেবীর উত্তরে বারহোতি অঞ্চলে চীনের একশ জন সেনা ভারতীয় সীমানার পাঁচ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে যায়। যেহেতু ভারত-চীন সীমান্তের ক্ষেত্রে বহু জায়গায় অস্পষ্টতা আছে, তাই ছোটখাট দল টহল দেয়ার সময় মাঝেমধ্যে একে অপরের এলাকায় ঢুকে পড়ে। কিন্তু একশ জন সেনার ঢুকে পড়াটা ছিল ব্যতিক্রমী।

তারপর এবার অরুণাচলের বুম লা ও ইয়ংসে এলাকায় এই ঘটনা ঘটল।

কেন এই ঘটনা?

ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটন্যান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্য অরুণাচলের ওই সেক্টরে আগে কাজ করেছেন। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, ''অরুণাচলে যা হয়েছে, তার সঙ্গে লাদাখের ঘটনার কোনো তুলনা চলে না। যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে, সেই বুম লা সেক্টর তাওয়াংয়ের কাছে। এখানে সীমানা নিয়ে দুই দেশের ধারণার মধ্যে ফারাক আছে। তাই ওদের পেট্রল পার্টি ভারতীয় সীমানায় ঢুকে পড়ে। তখন তাদের চলে যেতে বলা হয়। আবার ভারতের সীমান্তরক্ষীরা ওদের এলাকায় ঢুকলে ওরা চলে যেতে বলে।''

উৎপল ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ''আমরা মনে করি, ওটা আমাদের এলাকা। ওরা বলে ওটা ওদের এলাকা। এবার চীনা সেনা যখন ঢোকে, তখন ভারত কঠোরভাবে পরিস্থিতির মোকবিলা করেছে। কয়েকজনকে ধরাও হয়েছে। সাধারণত ওখানে কর্নেল পর্যায়ের ফ্ল্যাগ মিটিং হয়। সেই ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের পর সমস্যা মেটে।''

লেফটন্যান্ট জেনারেল ভট্টচার্যের মতে, ''চীন আসলে একটা ওয়ান আপম্যানশিপ দেখাতে চায়। সেখানেই সমস্যা দেখা দেয়।'' তিনি বলেছেন, ''৬২-র পর চীনের পিএলএ কোনো যুদ্ধে জিততে পারেনি। চীনের নৌবহিনী খুবই শক্তিশালী এবং অ্যামেরিকাকে টক্কর দিতে পারে। কিন্তু তাদের সেনাবাহিনী সম্পর্কে সেকথা বলা যায় না। এই বুম লা সেক্টরেই ১৯৬৭ সালে তারা ভারতীয় সেনার হাতে মার খেয়েছিল।''

তার মতে, ''শি জিনপিং মনে করেন, পিএলএ বাহিনী এখন কিছুটা চকোলেট সোলজার হয়ে পড়েছে। তাই সম্ভবত তাদের দিয়ে এরকম করানো হচ্ছে।''

জিএইচ/এসজি (পিটিআই, এএনআই, এনডিটিভি)