অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভূমিপুজো
অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে যাচ্ছে। পাঁচ অগাস্ট ভূমিপুজোর অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রুপোর ইট প্রতিষ্ঠা করবেন গর্ভগৃহে।
আমন্ত্রিত ১৭৫ জন
করোনাকালে এই অনুষ্ঠান করা নিয়ে প্রচুর সমালোচনা হচ্ছে। মন্দিরের পুরোহিত করোনায় আক্রান্ত। অমিত শাহেরও করোনা হয়েছে। কিছু নিরাপত্তা রক্ষীরও। তাই নিমন্ত্রিতের সংখ্যা কাটছাঁট করে ১৭৫-এ নামিয়ে আনা হয়েছে। মূল মঞ্চে থাকার কথা পাঁচজনের। প্রধানমন্ত্রী, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল, আরএসএস প্রধান এবং ট্রাস্টের প্রধান নিত্যগোপাল দাসের। বাকিরা সামনে দূরত্ব বজায় রেখে বসবেন।
মুসলিম অতিথি
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়েছেন মামলাকারী ইকবাল আনসারি। আমন্ত্রিতদের মধ্যে তাঁকেই প্রথম কার্ড পাঠানো হয়। আনসারি জানিয়েছেন, তিনি অবশ্যই যাবেন। মামলার রায় এসে গেছে। বিরোধ এখন অতীতের ঘটনা। শিয়া ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান ওয়াসিম রিজভি এবং সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান জুফার ফারুকিকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সারা দেশ থেকে জল ও মাটি
ভূমিপুজো অনুষ্ঠানের জন্য দেশের সব প্রধান নদী থেকে জল এসেছে অযোধ্যায়। এসেছে ভারতের বিভিন্ন তীর্থস্থানের মাটি। অযোধ্যার পাশ দিয়ে বয়ে চলা সরযূর জল তো আছেই। ভূমিপুজোর পর মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে যাবে। মন্দির হবে তিন তলা। গর্ভগৃহের উপর থাকবে শিখর, যা ১৬১ ফুট উঁচু। পাঁচটি গম্বুজ থাকবে। পুরো মন্দির হবে পাথরের তৈরি।
আবার ২৮ বছর পর
প্রধানমন্ত্রী হিসাবে এই প্রথমবার অযোধ্যায় যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আঠাশ বছর আগে তিনি অযোধ্যায় গিয়েছিলেন মুরলী মনোহর জোশীর সঙ্গে। ভাষণও দিয়েছিলেন। তারপর আর যাননি। এ বার প্রথমে তিনি যাবেন হনুমান গড়ির মন্দিরে। রামের আগে বজরঙ্গবলীর পুজো দিতে হয়, এই রীতি মেনে সেখানে পুজো দিয়ে যাবেন মূল অনুষ্ঠানে। ভূমিপুজো করবেন বারাণসী থেকে আসা পুরোহিতরা।
কঠোর নিরাপত্তায় মোড়া
অযোধ্যা এখন কঠোর নিরাপত্তায় মোড়া। বস্তুত লখনউ থেকে অযোধ্যা যেতে গেলেই কিছুটা দূর পর পর পুলিশের ব্যারিকেড। যাঁরা যাচ্ছেন, পরিচয়পত্র দেখিয়ে যেতে হচ্ছে। নাম লিখে রাখা হচ্ছে। শহরের রাস্তায় টহল দিচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। নিরাপত্তায় কোনো ফাঁক রাখা হচ্ছে না।
হলুদের ছোঁয়া
অযোধ্যায় এখন নজর কাড়ছে হলুদ রং। প্রধানমন্ত্রী যে পথ দিয়ে যাবেন, তাতে রয়েছে হলুদ তোড়ন। দুইপাশে হলুদ পতাকা। কিছু বাড়িতেও পড়েছে হলুদের পোচ। তথ্যাভিজ্ঞ মহলের দাবি, পুরসভা এই কাজ করেছে জ্যোতিষী ও বিশেষজ্ঞদের কথা মেনে। হলুদ না কি শক্তির প্রতীক। শুধু হলুদ নয়, অযোধ্যায় এখন রং-এর মেলা। হলুদ ও গেরুয়া তো আছেই। সেই সঙ্গে রয়েছে সবুজ, নীল, মেরুন সহ একাধিক রং।
এক লাখ ১১ হাজার লাড্ডু
ভূমিপুজো উপলক্ষে তৈরি হচ্ছে এক লাখ ১১ হাজার লাড্ডু। ভূমিপুজো শেষ হলেই যা বিলি করা হবে। ফলে অযোধ্যায় লাড্ডুর কারিগররা চূড়ান্ত ব্যস্ত। দেশি ঘি, বেসন ও চিনি সহযোগে বানানো হয় এই লাড্ডু।
বিশেষ কৌটায় লাড্ডু বিলি
লাড্ডু বিলি করা হবে বিশেষ টিফিন কৌটায়। করোনার কারণে অযোধ্যাবাসীরা বাড়িতে বসে টিভিতেই অনুষ্ঠান দেখবেন। তাঁদের কাছে পৌঁছতে পারে লাড্ডুর কৌটো।
সেজে উঠেছে অযোধ্যা
সেজে উঠেছে অযোধ্যা। ঝকঝকে রাস্তা। অনেক রাস্তা চওড়া হয়েছে। নতুন করে পিচ পড়েছে। চারদিকে পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন। রাতে সরযূর তীরে বাড়ি ও মন্দির নানা রঙ দিয়ে সাজানো হয়েছে। অন্য তীর থেকে দেখলে বোঝা যায়, কতটা রঙিন করে তোলা হয়েছে অযোধ্যাকে।