অভিবাসীদের সমর্থনে জার্মানিতে বিক্ষোভ
জার্মানি জুড়ে বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার নাগরিক অংশ নিয়েছেন বিক্ষোভে৷ ভূমধ্যসাগরে ভাসতে থাকা আশ্রয়প্রার্থীদের উদ্ধারে যেসব এনজিও কাজ করছে, তাঁদের প্রতি তাঁরা জানিয়েছেন সমর্থন৷
প্ল্যাকার্ড নয়, লাইফ জ্যাকেট
বার্লিনে লাইফ জ্যাকেট নিয়ে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন বিক্ষোভকারীরা৷ তাঁদের বক্তব্য, যেসব উদ্ধারকারী ঝুঁকি নিয়ে গভীর সাগর থেকে শরণার্থীদের নিয়ে আসছেন, সমর্থন না করে উলটো তাদের অপরাধী বানিয়ে দেয়া হচ্ছে৷ আয়োজকদের দাবি, অন্তত ১২ হাজার প্রতিবাদকারী এতে যোগ দিয়েছেন৷ এছাড়াও প্রতিবাদ হয়েছে হামবুর্গ, হানোফার, ব্রেমেন, মিউনিখ এবং উলম শহরে৷
উদ্ধারকারীদের প্রতি সমানুভূতি
হামবুর্গের বিক্ষোভে সিব্রুক নামের সংগঠনের এক সদস্যকে দেখা যাচ্ছে দড়িতে কমলা কাপড় ঝোলাতে৷ উদ্ধারকর্মীদের কাজে সমর্থন জানাতেই এই আয়োজন৷ নিচে ব্যানারে লেখা আছে, ‘‘উদ্ধার করা কোনো অন্যায় নয়৷’’ সিব্রুক শব্দের অর্থ সাগরের সেতু৷ কিছুদিন আগেই দুই শতাধিক শরণার্থী বহনকারী এক জার্মান এনজিওর উদ্ধারকারী জাহাজ লাইফলাইনকে তীরে ভিড়তে বাধা দেয়ার পর গঠন করা হয় এই সংগঠন৷
‘ওরা সাগরে, ভুলে যেও না’
বিক্ষোভকারীদের কণ্ঠে এমন স্লোগানই উচ্চারিত হয়েছে বারবার৷ জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বলছে, গত কয়েক বছরের তুলনায় ধীরে ধীরে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়া মানুষের সংখ্যা কমে আসছে৷ কিন্তু তারপরও কমেনি ভয়াবহতা৷ আফ্রিকা থেকে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ আসতে গিয়ে এ বছর এরই মধ্যে নৌকাডুবিতে ১৪০০ মানুষ নিহত হয়েছেন, অথবা নিখোঁজ রয়েছেন৷
‘দুয়ার খুলে দাও’
গত কয়েক সপ্তাহে ইউরোপের রাজনীতিবিদদের রোষানলে পড়েছে ভূমধ্যসাগরে উদ্ধারকাজ চালানো এনজিওগুলো৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জাহাজগুলোকে তীরে ভেড়ার অনুমতি দেয়া হয়নি, দিলেও তা দেয়া হয়েছে দীর্ঘ সময় ব্যয় করে, অনেক হেনস্তার পর৷ রাজনীতিবিদদের দাবি, মানবপাচারকারীদের হাতের পুতুল হিসেবে কাজ করছে এনজিওগুলো৷ অন্যদিকে উদ্ধারকর্মীদের দাবি, তাঁরা না বাঁচালে প্রাণ হারাতে হতো অনেক শরণার্থীকে৷
সরকারি নীতি নিয়ে ক্ষোভ
জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফারের ওপরও বেজায় চটেছেন বিক্ষোভকারীরা৷ সেহোফার এককভাবে চাপ প্রয়োগে জার্মান অভিবাসন নীতি কঠোর করার চেষ্টা চালাচ্ছেন৷ এক পর্যায়ে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে তাঁর বিরোধ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, অনেকে আশংকা করছিলেন জার্মান জোট সরকারই না ভেঙে পড়ে৷ শেষ পর্যন্ত সমঝোতায় এসে সেহোফারের বেশ কিছু দাবি মেনে নিতে হয় ম্যার্কেলকে৷