1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অভিন্ন শরণার্থী নীতি গ্রহণ করতে পারে ইইউ

৭ জুন ২০২৩

চলতি সপ্তাহেই অভিন্ন শরণার্থী নীতির প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ঐকমত্যের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে৷ তবে ইউরোপের বহির্সীমানায় কড়াকড়ি বাড়ানোর পরিকল্পনার সমালোচনা বাড়ছে৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী তা সত্ত্বেও আশার আলো দেখছেন৷

https://p.dw.com/p/4SI4n
শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় নানা উদ্যোগ নিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷
শরণার্থী ইউরোপের জন্য এক বড় ইস্যু (ফাইল ফটো)ছবি: Marios Lolos/Xinhua/IMAGO

বহু বছর ধরে শরণার্থীদের ঢল সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ ২০১৫ সালে মূলত সিরিয়া যুদ্ধের কারণে দশ লাখেরও বেশি মানুষ ইউরোপে প্রবেশ করার পর থেকে ইইউ দিশাহারা হয়ে পড়েছে৷ বিশেষ করে ভূমধ্যসাগর উপকূলবর্তী দেশগুলির জন্য সেই সংকট বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে৷ অথচ শরণার্থীদের প্রশ্নে ইইউ এখনো কোনো সাধারণ নীতি সম্পর্কে ঐকমত্যে আসতে পারে নি৷ বিশেষ করে পূর্ব ইউরোপের অনেক দেশ শরণার্থীদের ন্যায্য বণ্টনের বিরোধিতা করে এসেছে৷ জার্মানি, ফ্রান্স ও সুইডেনের মতো দেশ আর একাই সেই বোঝা কাঁধে নিতে চাইছে না৷ ফলে কিছু বিচ্ছিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে কোনোরকমে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে৷ অবশেষে চলতি সপ্তাহেই এ ক্ষেত্রে বোঝাপড়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠছে৷

ইইউ অভিবাসন কমিশনর ইভা ইয়োহান্সসন মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনার সময়ে বলেন, একসঙ্গে কাজ করলে তবেই ইউরোপ শক্তিশালী হতে পারে৷ মানবিক অথচ কড়া পন্থায় অভিবাসন সামলানো গেলে তবেই সবার সুবিধা হবে, বলেন ইয়োহান্সসন৷ তবে সম্ভাব্য বোঝাপড়ার আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব দেশ এখনো শরণার্থীদের ন্যায্য বণ্টন মেনে নিতে প্রস্তুত নয়৷ বিশেষ করে পূর্ব ইউরোপের অনেক দেশের পপুলিস্ট সরকার বহিরাগতদের আশ্রয় দেবার বিরোধিতা করে আসছে৷ ফলে আপোশ হিসেবে তারা শরণার্থী পরিস্থিতি সামলাতে অর্থ বা লোকবল দিতে সম্মতি জানাতে পারে৷ সেইসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বহির্সীমানায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনের প্রাথমিক মূল্যায়নের নিয়ম চালু করার বিতর্কিত প্রস্তাবও বিবেচনা করা হচ্ছে৷ ইয়োহান্সসন বলেন, এ যাত্রায়ও ঐকমত্য সম্ভব না হলে আখেরে সবারই ক্ষতি হবে৷ বৃহস্পতিবার ইইউ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷

শেষ পর্যন্ত ইইউ-র সব সদস্য দেশ সাধারণ শরণার্থী নীতি মেনে নিলেও এমন আপোশ মীমাংসার সমালোচনা করছে অক্সফ্যামের মতো অনেক সংগঠন৷ তাদের মতে, ইউরোপকে দুর্গের মতো অভেদ্য করে তুলে শরণার্থীদের বাইরে রাখার চেষ্টা চলছে৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক নিজের সবুজ দলের মধ্যেও সমালোচনার জবাবে বলেন, তিনি নিজে সীমান্তের প্রক্রিয়াকে সঠিক পথ মনে না করলেও শরণার্থীদের ন্যায্য বণ্টনের ক্ষেত্রে আপাতত এ ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই৷ ব্রাজিল সফরকালে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন৷ উল্লেখ্য, জার্মানির ডেয়ার স্পিগেল পত্রিকা জানিয়েছে, যে সবুজ দলের প্রায় ৭৩০ জন সদস্য এক চিঠিতে দলের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ইইউ শরণার্থী আইনের প্রস্তাবিত সংস্কারের সমালোচনা করেছেন৷

বেয়ারবক আরো বলেন, বহুকাল পর এই প্রথম ইইউ-র সব দেশ ভিন্ন স্বার্থ ও দৃষ্টিভঙ্গি সত্ত্বেও শরণার্থী ও রাজনৈতিক আশ্রয়ের প্রশ্নে সাধারণ সমাধানসূত্রের জন্য চেষ্টা করছে৷ ইইউ-র বহির্সীমানায় যে সব দেশে বেশিরভাগ শরণার্থী প্রবেশ করে, সে সব দেশের দৃষ্টিভঙ্গি ইউরোপের মাঝের অংশের দেশগুলির তুলনায় একেবারে ভিন্ন৷ তাই ঐকমত্য অর্জন করা অত্যন্ত কঠিন কাজ৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে নিজের দেশ ও ফ্রান্সের উল্লেখ করে বলেন, একমাত্র এই দুটি দেশই নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে ইউরোপের বহির্সীমানা থেকে শরণার্থীদের গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে৷ বাকি দেশগুলি এখনো সেই প্রক্রিয়া মেনে না নেওয়ায় তিনি তাদের সমালোচনা করেন৷ বেয়ারবক বলেন, তিনি নিজে অন্যান্য দেশকে রাজি করানোর চেষ্টা করেও এখনো সাফল্য পাননি

এসবি/এসিবি (রয়টার্স, ডিপিএ)