1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অভিনব পণ্য ডিজাইন করে চলেছেন জার্মান ডিজাইনার

১২ মার্চ ২০২১

চোখ ধাঁধানো, অথচ সহজসরল পণ্যের পেছনে ডিজাইনারের বড় ভূমিকা থাকে৷ জার্মানির এক ডিজাইনার অতীত ও বর্তমানের প্রবণতার মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়ে একের পর এক চমক সৃষ্টি করে চলেছেন৷

https://p.dw.com/p/3qWfU
ছবি: DW

মিউনিখের ডিজাইনার স্টেফান ডিৎসের ডিজাইন বেশ রংচংয়ে, বাহুল্যবর্জিত এবং বুদ্ধিমত্তার ছাপে ভরা৷ আলোকসজ্জা, আসবাবপত্র থেকে শুরু করে বাসনপত্রের মতো অবেক ক্ষেত্রেই তাঁর সৃষ্টির ছাপ দেখা যায়৷ স্টেফান বলেন, ‘‘ভালো ডিজাইনের সঙ্গে অ্যাক্রোব্যাটিক্সের অনেক মিল রয়েছে৷ ভালো অ্যাক্রোব্যাট শিল্পী বেশ সাবলীলভাবে জটিল কেরামতি তুলে ধরতে পারেন৷''

তার সর্বশেষ ডিজাইন অনুযায়ী একটি অভিনব ফ্লোর ল্যাম্প তৈরি করা হয়েছে৷ সেটির দৌলতে স্টেফান ২০২১ সালে জার্মানির টেকসই ডিজাইন পুরস্কার পেয়েছেন৷ ফাইবার গ্লাসের তৈরি সেই বাতি বিদ্যুতের তার ও ক্লিপের সাহায্যে যে কোনো অবস্থানে বসানো যায়৷ পুনর্বব্যবহারযোগ্য উপকরণ দিয়ে সেটি তৈরি৷ স্টেফান ডিৎস বলেন, ‘‘আইনো নামের এই ল্যাম্পটিকে আমরা পাঁচ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় রেখেছি৷ এ ক্ষেত্রে আমরা একটি বৈশিষ্ট্য আবিষ্কার করেছি৷ নমনীয় এই রডের সামনে অত্যন্ত হালকা এক শেড রয়েছে, যেটি অত্যন্ত উঁচু অবস্থায়ও রাখা যায়৷ ঘরের কোণায় এই ল্যাম্প রাখলেও তিন মিটার দূরে ডাইনিং টেবিলও আলোকিত করা যায়৷''

চমক সৃষ্টি করা ডিজাইনার

জার্মানির মিডগার্ড কোম্পানির জন্য ১৯২৬ সালে যে ল্যাম্প তৈরি করা হয়েছিল, এটিও সেই ডিজাইন অবলম্বনেই তৈরি করা হয়েছে৷ ‘টাইপ ১১৩' নম্বর হুইপ লাইট বিশ্বের প্রথম কারখানায় তৈরি বহুল ব্যবহৃত বাতিগুলির অন্যতম৷ এই উদ্যোগের গুরুত্ব সম্পর্কে স্টেফান বলেন, ‘‘এই কোম্পানির জন্য তৈরি পণ্যগুলি বাউহাউস শৈলি অনুযায়ী অত্যন্ত যান্ত্রিকভাবে ভাবা হয়েছিল৷ আমার মনে হলো, এমন প্রেক্ষাপটে এবার ঠিক তার বিপরীতটাই করা উচিত৷ এমন কিছু করতে হবে, যা বিশের দশকের যান্ত্রিকতার একেবারে বিপরীত মেরুর হয়৷''

স্টেফান ডিৎস চিরায়ত ডিজাইনকে সমসাময়িক রূপ দিচ্ছেন৷ ২০০৭ সালে তিনি এক বেন্টউড চেয়ার ডিজাইন করেন, যেটির কাঠ গরম বাষ্পের সাহায্যে বাঁকানো হয়েছে৷ জার্মানির টোনেট কোম্পানি ‘কফি হাউস চেয়ার'-এর মাধ্যমে ডিজাইনের জগতে ইতিহাস রচনা করেছিল৷ ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি তারা এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছিল৷ স্টেফান তাঁর চেয়ারের আধুনিক সংস্করণের জন্য সেই ‘বেন্ডিং' কৌশলের আরও উন্নতি ঘটিয়েছেন৷

এমনকি শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদনের মধ্যেও তিনি ডিজাইনকে গুরুত্ব দেন৷ ২০১১ সালে তিনি জার্মানির ভিল্কহান কোম্পানির জন্য ‘চ্যাসিস' নামের চেয়ার ডিজাইন করেন৷ গাড়ির খাঁচা তৈরির কাজে যে উপকরণ ব্যবহার করা হয়, সেগুলি দিয়ে তৈরি এই চেয়ার রেড ডট ডিজাইন পুরস্কার পেয়েছে৷ সেটি গড়ে তুলতে তিন বছর সময় লেগেছে৷ এমন উদ্যোগ যে মোটেই সহজ নয়, সে বিষয়ে স্টেফান ডিৎস যথেষ্ট সচেতন৷ তিনি বলেন, ‘‘অবশ্যই বিএমডাব্লিউ বা মার্সিডিজ কোম্পানিতে গিয়ে চেয়ার তৈরির আবদার করা যায় না৷ কোনো অচেনা ডিজাইনার এসে খোঁজখবর করলে স্বাভাবিকভাবেই তাদের মনে হবে, এমন প্রকল্পে কি বিনিয়োগ করা উচিত? গবেষণার জন্য অনেক সময় লাগে৷ তারপর এমন কাজে শামিল হতে রাজি সহযোগী পাওয়াও সহজ নয়৷''

স্টেফান নিজে কাজে হাত লাগাতে মোটেই দ্বিধা করেন না৷ ডিজাইন নিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের আগে তিনি ছুতার মিস্ত্রী হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন৷ আজ তিনি মিউনিখে নিজের স্টুডিওতে চার জন্য প্রোডাক্ট ডিজাইনারের সঙ্গে মোরোসো বা ইফিফটিনের মতো বিখ্যাত ইউরোপীয় লেবেলের জন্য পণ্যের নক্সা করছেন৷ স্টেফান বলেন, ‘‘আমার মতে ডিজাইনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, উচ্চ মানের প্রকল্প বা পণ্যের জন্য বিশাল চাপ থাকলেও ভারাক্রান্ত হয়ে পড়লে চলবে না৷ হাস্যরস ও হালকা মেজাজ নিয়ে আইডিয়া রূপান্তর করাও জরুরি৷''

স্টেফান ডিৎস এখনো পর্যন্ত প্রায় ৫০টি পণ্য ডিজাইন করেছেন৷ জার্মানির সবচেয়ে নামী সমসাময়িক ডিজাইনারদের মধ্যে তার নাম উঠে আসে৷ আপাতত তিনি এক মডিউলার সোফা সিস্টেম নিয়ে কাজ করছেন, যেটির আবরণ দ্রুত ও সহজেই বদলানো যায়৷ নমনীয় ও টেকসই এমন পণ্যের ডিজাইন স্টেফান ডিৎস-এর বৈশিষ্ট্যের মধ্যে পড়ে৷

ক্রিস্টিয়ান ভাইবেসান/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান