অবশেষে ‘তিমির কারাগার’ বন্ধ করছে রাশিয়া
ওরকা ও বেলুগা প্রজাতির প্রায় ১০০ তিমি আটকে রাখা হয়েছিল রাশিয়ার উত্তরের শহর নাখোদকায়৷ গত বছরের শুরুর দিকে তিমিগুলোর ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক শোরগোল ওঠে৷ অবশেষে তিমিগুলোকে মুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে রুশ সরকার৷
তিমিদের কী অপরাধ?
কারাগার শুনলেই মনে হতে পারে তিমিরা বড় ধরনের কোনো অপরাধে জড়িত ছিল৷ কিন্তু না৷ তিমি হয়ে জন্ম নেয়াই হয়তো ছিল তাদের একমাত্র অপরাধ৷ চীনের ক্রমশ জনপ্রিয় হতে থাকা সামুদ্রিক প্রাণীর পার্কে পাচারের উদ্দেশ্যেই এদের আটকে রাখা হয়েছিল বলে জানা গেছে৷
কোথায় এর অবস্থান?
রাশিয়ার সবচেয়ে উত্তরে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলে অবস্থান নাখোদকা শহরের৷ উপকূলে কিছু খাঁড়িকে বড় আকারের জাল দিয়ে ঘিরে রেখে বানানো হয়েছিল এ ‘কারাগার’৷ তবে ১০০ তিমির জন্য এ খাঁড়ির আয়তন ছিল একেবারেই অপ্রতুল৷
আবিষ্কারের নেপথ্যে
তিমিগুলোর ভাগ্য খুব ভালোই বলা যায়৷ ইন্টারনেট সেনসেশনে পরিণত না হলে এতদিনে এদের স্থান হতো চীনের কোনো এক মেরিন পার্কে৷ কিন্তু ভাগ্যক্রমে ‘ওশান ফিউচার সোসাইটি’র প্রতিষ্ঠাতা জঁ-মিশেল কোস্তোঁ খোঁজ পেয়ে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন তিমিদের আটকে রাখার ভিডিও৷ এরপর সোচ্চার হয়ে ওঠেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রাণী সেবা সংস্থার কর্মীরা৷
দুর্ভাগাদের গল্প
খাঁড়িতে আটকে রাখা সব তিমির ভাগ্য অবশ্য সুপ্রসন্ন হয়নি৷ অনেকেই ধারণা করছেন, জানাজানি হওয়ার আগেই অনেক তিমিকে পাচার করে দেয়া হয়ে থাকতে পারে৷ এছাড়া, বিশ্বজুড়ে এ নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পরেও গোপনে বেশ কিছু তিমি সরিয়ে ফেলা হয়ে থাকতে পারে অন্য স্থানে৷ খোঁজ মিলছে না একটি ওরকা ও তিনটি বেলুগার৷
স্বাস্থ্য ঝুঁকি
কয়েক মাস ধরে প্রায় খাদ্যহীন অবস্থায় আটকে থাকা তিমিদের শারীরিক অবস্থাও খুব একটা ভালো না৷ এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি তিমি মারাও পড়েছে৷ ফলে মুক্তি দেয়া হলে আগের মতো বন্য পরিবেশে তারা টিকে থাকতে পারবে কিনা, তা গবেষণা করে দেখছেন একদল বিশেষজ্ঞ৷
তদন্তের ঘোষণা
অবৈধ এ কাজের সঙ্গে কারা জড়িত খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু করেছেন রুশ গোয়েন্দারা৷ স্বয়ং প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন পরিবেশ ও কৃষি মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে খোঁজ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন৷