অনন্য ক্লাউডিয়া শিফার
জার্মান বংশোদ্ভুত সুপারমডেল ক্লাউডিয়া শিফার মডেলিংয়ের স্বর্ণযুগে ফ্যাশন জগতের শীর্ষে ছিলেন৷ ‘লাজুক’ বলে খ্যাত জার্মানদের বিশ্বের সামনে ভিন্নরুপে হাজির করেন তিনি৷ চলুন এক নজরে দেখে নিই ক্লাউডিয়ার বৃত্তান্ত৷
স্কুলজীবনেই প্রচ্ছদে
বাবার মতো আইনজীবী হওয়ার ইচ্ছা ছিল জার্মান সুপারমডেল ক্লাউডিয়া শিফারের৷ ১৯৮৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে ডুসেলডর্ফের এক ডিসকোতে এক মডেলিং এজেন্টের সাথে পরিচয় হয়৷ পরীক্ষামূলকভাবে ফটোশুট করতে তাঁরা প্যারিসে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান তাঁকে৷অল্প কিছুদিন পরই ‘এলে’র প্রচ্ছদকন্যা হন ক্লাউডিয়া৷ এছাড়া ১৯৮৮ সালে জার্মান স্টাইল ম্যাগাজিন ‘ব্রিজিটে’-র প্রচ্ছদকন্যাও হন তিনি৷
কার্ল লাগারফেল্ডের সংস্পর্শ
ফটোগ্রাফার ফন উনভের্থ তাঁকে একটি জিন্স ক্যাম্পেইনের মডেল করার পরপরই শীর্ষ ডিজাইনার কার্ল লাগারফেল্ডের (বামে) সংস্পর্শে আসেন ক্লাউডিয়া৷ তাঁর উজ্জ্বল নীল চোখের সৌন্দর্য তখন শোভা পেতে শুরু করে সব বিখ্যাত ফ্যাশন ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে৷ একইসাথে ভার্সাচে, ভ্যালেনটিনো ও ডল্স এবং গাবানা’র মতো বিশ্ববিখ্যাত ডিজাইনারদের সাথেও কাজ শুরু করেন৷
সুপারমডেলদের স্বর্ণযুগ
৯০-এর দশকে বছরে প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার আয় করতেন ক্লাউডিয়া৷ সেটি এমন এক সময় ছিল, যা সুপারমডেলদের সেরা সময় বলে বিবেচিত৷ একইসাথে সেই সময় অ্যালকোহল আর জ্যোতির্বিজ্ঞানের পেছনে অর্থ লগ্নি করছিল মানুষ৷ কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে সুশৃঙ্খল আর স্বতঃস্ফূর্ত হিসেবে পরিচিত ছিলেন ক্লাউডিয়া৷
জাদুর ছোঁয়া
১৯৯৩ সালে বার্লিনে এক অনুষ্ঠানে জাদুকর ডেভিড কপারফিল্ডের (ডানে) সাথে দেখা হয় ২৩ বছরের তরুণী ক্লাউডিয়ার৷ পরের বছরই তাঁরা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন৷ সে সময় কপারফিল্ডের বেশ কিছু স্টেজ শো-তে অংশও নিয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু কয়েক বছর যেতে না যেতেই তাঁদের সম্পর্কের জাদু ফিকে হয়ে যেতে থাকে৷ এরপর ১৯৯৭ সালে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়৷
পারিবারিক জীবন
২০০০ সালের শুরু পর্যন্ত পুরোদস্তুর মডেলিং ক্যারিয়ার ধরে রেখেছিলেন ক্লাউডিয়া৷ তবে ২০০২-এ চলচ্চিত্র পরিচালক ম্যাথু ভনকে বিয়ের পর পরিবার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি৷ স্বামী তার তিন সন্তানের সাথে সময় কাটানোর জন্য কাজ কমিয়ে দিয়েছিলেন৷ কাস্পার (বামে), ক্লেমেণ্টাইন (ডানে) আর কোসিমা (ছবিতে নেই) এই হলো তাঁর তিন সন্তান৷
সীমানা ছাড়িয়ে
রাইনবার্গে জন্ম নেওয়া এই মডেল বসতি গড়েন লন্ডনে৷ নতুন শতাব্দীতে এসে নিজের পোর্টফোলিওতে তিনিও নতুন নতুন বিষয় যোগ করতে শুরু করেন৷ ২০১১ সালে তিনি বাজারে নিয়ে আসেন চমৎকার ডিজাইনের কাশ্মিরী শালের সংগ্রহ৷ পাশাপাশি জার্মান চশমা কোম্পানি ‘রোডেনস্টক’-এর জন্য নানা ধরনের চশমার ফ্রেমের ডিজাইন করাও শুরু করেন৷ এমনকি হিট সিনেমা ‘লাভ অ্যাকচুয়েলি’তে অভিনয়ও করেন তিনি৷
সুপারমডেলকে সম্মান
৪৭ বছর বয়সে এসে ব্যক্তিগত আর কর্মজীবনের দারুণ এক ভারসাম্য ধরে রেখেছেন ক্লাউডিয়া৷ চলতি বছর জার্মান ম্যাগাজিন ‘ভোগ’ প্রচ্ছদ প্রতিবেদন করে তাঁর কর্মজীবনের ৩০ বছর পূর্তি উদযাপন করে৷ তাঁকে নিয়ে কাজ করেছেন এমন কয়েকজন ফটোগ্রাফার আর ফ্যাশন ডিজাইনারদের ছবি ও লেখা নিয়ে একটি সংকলন প্রকাশ করেন প্রেস্টেল ফ্যেরলা৷ ক্লাউডিয়ার জন্য এ এক অনন্য সম্মান৷