অদ্ভুত নামের সব জার্মান খাবার
জার্মান খাবারের স্বাদ কেমন তা নিয়ে তর্ক চলতেই পারে৷ কিন্তু নামের দিক দিয়ে জার্মান খাবারের জুড়ি মেলা ভার৷ অদ্ভুত ও হাস্যকর নামের কিছু জার্মান খাবার নিয়ে আজকের ছবিঘর৷
কাল্টের হুন্ড (ঠাণ্ডা কুকুর)
জার্মানিতে খাবার হিসেবে কুকুর ব্যবহার হয় না৷ বরং পোষা প্রাণী হিসেবে এর জনপ্রিয়তা ব্যাপক৷ ফলে যাঁরা ঠাণ্ডা কুকুর বলতে কুকুরের মাংসের রেসিপি ভাবছেন, তাঁদের ভুল হচ্ছে৷ কাল্টের হুন্ড এক ধরনের ডেজার্ট৷ বাটার কুকির সাথে ঠান্ডা চকোলেট মিলিয়ে তৈরি করা হয় এ খাবার৷
ফাল্শের হাসে (ভুল খরগোশ)
পাউরুটির মধ্যে যে কোনো কিছু ঢুকিয়ে দিলেই এই মজার খাবার তৈরি হয়ে যায়৷ শূকর, গরু, ডিম, এমনকি শুধু পেঁয়াজ দিয়েও মজার খাবার বানানো যায়৷ কিন্তু ফাল্শের হাসেতে কোনো খরগোশের মাংস থাকে না৷ বরং আলু দিয়ে চারপাশ মুড়িয়ে উপরে একটু সস দিয়ে খরগোশের আকারে সাজিয়ে তা পরিবেশন করা হয়৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এ খাবার৷
মুকেফুক (ভুয়া মোকা)
নাম শুনে কফি মনে হলেও আসলে কফির বিকল্প পানীয় হিসেবেই জনপ্রিয় মুকেফুক৷ বার্লি থেকে বানানো এই পানীয়কে কফির বিকল্প হিসেবে ধরে নেয়া হয়৷ এই নামের উৎপত্তি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷ তবে অনেকেই মনে করেন, ফরাসি শব্দ ‘মোকা ফোঁ’ অর্থাৎ ‘ভুয়া মোকা’ থেকে এর উৎপত্তি৷ অর্থাৎ, নামে মোকা হলেও আসলে তা মোকা নয়৷
বিনেনশ্টিশ (মৌমাছির হুল)
এই খাবার আসলে ভ্যানিলা পুডিং দিয়ে আলমন্ড কেক৷ কিন্তু কেন এর নাম মৌমাছির হুল দেয়া হলো, তার কোনো যৌক্তিক কারণ পাওয়া যায় না৷ লোকে বলে, ষোড়শ শতকে আন্ডেরনাখ শহরে আক্রমণ করে লিনৎস শহর৷ যখন সেনারা এগিয়ে আসছিল, আন্ডেরনাখে চলছিল মধু সংগ্রহের মৌসুম৷ মৌচাক ছুঁড়ে দিয়ে লিনৎসের সেনাদের তাড়িয়ে দেন আন্ডেরনাখবাসী৷ সে বিজয় উদযাপন হয়েছিল এই কেক দিয়েই৷
হিমেল উনড অ্যাড (স্বর্গ ও মর্ত্য)
নাম শুনে কখনোই মনে হয় না খাবারটি আসলে এক ধরনের সসেজ৷ জার্মানদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এ খাবারে এছাড়াও থাকে পেঁয়াজ ভাজি, আলু ভর্তা আর আপেল সস৷ সম্ভবত আপেলকে স্বর্গীয় ফল এবং আলুকে পৃথিবীর খাবার ধরে নিয়েই এমন নামকরণ৷
আরমার নাইট (গরিব যোদ্ধা)
অ্যামেরিকানরা যাঁকে ফ্রেঞ্চ টোস্ট বলে, জার্মানিতে প্রায় একইরকম খাবারের নাম আরমার নাইট৷ পুরনো সাদা পাউরুটি দুধ, ডিম, চিনি এবং ভ্যানিলায় চুবিয়ে প্যানে ভাজলেই তৈরি আমাদের গরিব যোদ্ধা৷ ধারণা করা হয়, মধ্যযুগে গরিব মানুষ যখন মাংস জোগাড় করতে পারতো না, তখন মাংসের বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয় হয় এই খাবার৷
স্প্যাগেতিআইস (স্প্যাগেতি আইসক্রিম)
আইসক্রিমের মধ্যে নুডলস শুনলে বেশ জঘন্য লাগার কথা৷ কিন্তু জার্মানিতে গ্রীষ্মকালে এই খাবার বেশ জনপ্রিয়৷ তবে ভয় পাবেন না৷ এই খাবারে কোনো নুডুলস ব্যবহার হয় না৷ বরং ভ্যানিলা আইসক্রিমকে চেপে নুডুলসের মতো চিকন সুতার আকার দেয়া হয়৷ এর ওপর যোগ করা হয় হুইপড ক্রিম, স্ট্রবেরি সস এবং হোয়াইট চকোলেট স্প্রিংকলস৷