1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অদূর ভবিষ্যতেও করোনা থেকে মুক্তি নেই

১৪ জুলাই ২০২০

এখনই করোনা থেকে মুক্তির আশা দেখাতে পাচ্ছে না ডাব্লিউএইচও। পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলেও সতর্ক করেছে তারা।

https://p.dw.com/p/3fH6r
ছবি: picture-alliance/Xinhua/WHO

ঠিক মতো ব্যবস্থা না নিলে করোনা ভাইরাস আরও ভয়াবহ চেহারা নিতে পারে। ক্ষতি হতে পারে আরও বেশি। যে দেশগুলি করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঠিক মতো নিয়ম মানছে না, তাদের প্রতি ফের সতর্কবার্তা জারি করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করেন সংস্থার প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রেয়েসাস। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, বেশ কিছু দেশ করোনা সতর্কতা মেনে চলছে না। ফলে সেখানে করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। এখনও নিয়ম পালন না করলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে। নাম না করলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানের ইঙ্গিত যে অ্যামেরিকার দিকে, তা স্পষ্ট।

বস্তুত, এখনও করোনা ভাইরাসের ভরকেন্দ্র হয়ে রয়েছে অ্যামেরিকা। প্রায় ৩৫ লাখ লোক আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৩৮ হাজার মানুষের। নিউ ইয়র্কের পরে এ বার ফ্লোরিডায় সংক্রমণ লাফিয়ে বাড়ছে। হিউস্টনের অবস্থাও বেশ খারাপ। তারই মধ্যে দেশের স্বাস্থ্য উপদেষ্টাদের সঙ্গে লাগাতার বিতর্ক চালিয়ে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। কাউকে কাউকে পদ থেকেও সরিয়ে দিয়েছেন। অভিযোগ, করোনা সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য কোনও পদক্ষেপই সময়ে নেননি ট্রাম্প। তারই মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গেও বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি।

শুধু উত্তর অ্যামেরিকা নয়, দক্ষিণ অ্যামেরিকার পরিস্থিতিও ভয়াবহ। এখনও পর্যন্ত সেখানে এক লাখ ৪৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যার অর্ধেকই ব্রাজিলে। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, ব্রাজিলের বিরুদ্ধেও সেই একই অভিযোগ। সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যার ফল এখন ভুগছে দেশ। আক্রান্ত স্বয়ং প্রেসিডেন্ট বলসোনারো।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বক্তব্য, লকডাউন ছাড়া কোনও উপায় নেই। অ্যামেরিকায় যেখানে যেখানে লকডাউন খোলা হয়েছে, সেখানে সেখানেই ভাইরাস দ্রুত সংক্রমিত হতে শুরু করেছে। ভারতেও একই ঘটনা ঘটেছে। ডাব্লিউএইচও-র বক্তব্য, গোটা দেশকে দীর্ঘ দিন লকডাউনের মধ্যে রাখা সম্ভব নয়। কিন্তু এলাকা বেছে বেছে লকডাউন চালিয়ে যেতেই হবে। নইলে এই ভাইরাসকে ঠেকানো অসম্ভব।

মুক্তি কবে

করোনার হাত থেকে মুক্তি কবে, সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি ডাব্লিউএইচও। তাদের বক্তব্য, অতীতে মানুষ যে ভাবে বেঁচেছে, অদূর ভবিষ্যতে তেমন দিন ফিরে আসার কোনও সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছে না ডাব্লিউএইচও। সামাজিক দূরত্বের নীতি বহু দিন পালন করে যেতে হবে বলেই তাদের বক্তব্য। শুধু তাই নয়, সামাজিক অনুষ্ঠানও আপাতত অসম্ভব বলেই তাদের অভিমত। ডাব্লিউএইচও-র বক্তব্য, করোনার টিকা দ্রুত আবিষ্কার হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। বিভিন্ন দেশে পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে। তবে আগামী বছরের আগে বাজারে টিকা আসার কোনও সম্ভাবনা নেই। আর ভাইরাসও প্রকৃতি থেকে এমনি এমনি মিলিয়ে যাবে, এমন ভাবারও কোনও কারণ নেই। ফলে ধরেই নিতে হবে, আরও বেশ কিছু দিন ভাইরাসকে সঙ্গে নিয়েই চলতে হবে সকলকে। এবং তার জন্য সতর্কতাও অবলম্বন করতে হবে।

ইমিউনিটি সম্ভব?

একবার করোনা হলে কি শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে যায়? দ্বিতীয়বার আর করোনা হয় না? এ প্রশ্ন এখন গোটা বিশ্ব জুড়ে। ডাব্লিউএইচও-র বক্তব্য, এ বিষয়ে নানা ধরনের গবেষণা চলছে। সব তথ্য এখনও সামনে আসেনি। তবে একবার করোনা হলে আর হবে না, এমনটা ভাবার কারণ নেই। বস্তুত, ইংল্যান্ডের কিংস কলেজ একটি গবেষণা করছে এ বিষয়ে। তাতে বলা হয়েছে, তিনমাস পর্যন্ত অ্যান্টিবডি কাজ করতে পারে শরীরে। তারপর ফের করোনা হতে পারে। যদিও কিংস কলেজের গবেষণা এখনও শেষ হয়নি।

সব মিলিয়ে অদূর ভবিষ্যতে করোনা থেকে মুক্তির কোনও আলো দেখাতে পারছে না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বরং আরও বেশি সতর্ক হওয়ার পরামর্শই তারা দিচ্ছে।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, বিবিসি)