অদম্য ছেলেমেয়েদের স্বপ্নের লড়াই
তারা সকলেই লড়াকু। দারিদ্র্য, জীবনের নানা সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করে তারা উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছে। তাদের সেই লড়াইয়ের কথা থাকলো এই ছবিঘরে।
খালপাড়ের ঝুপড়ির মেয়ে মাসরিকা
মাসরিকা খাতুন। বাবা ছোটু মোন্না ভ্যান চালান। মা কাগজ বিক্রি করেন মাঝেমধ্যে। মাসরিকা থাকেন বেলেঘাটার খালপাড়ের ঝুপড়িতে। সেখান থেকেই উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছে মাসরিকা। জারি রয়েছে তার স্বপ্নের লড়াই।
বৃষ্টি হলেই জল পড়ে
মাসরিকার খালপাড়ের ঝুপড়িতে বৃষ্টি হলেই বিপদ। জল পড়ে। জলের হাত থেকে বইখাতা বাঁচিয়ে রাখাটাই বড় কাজ।
অভাবের সংসারে
অভাবের সংসারে বেড়ে উঠেছে মাসরিকা। আগে বিদ্যুৎ ছিল না। তার বাবা এখন কষ্ট করে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন। কিন্তু খাতা কেনার পয়সা দিতে পারেন না। মাসরিকার শিক্ষকরা তাকে খাতা কিনে দেন।
স্বপ্ন আইনজীবী হওয়ার
উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছে মাসরিকা। তার এবার স্বপ্ন আইন নিয়ে পড়াশোনা করার। তার স্বপ্নের লড়াই জারি থাকবে। এখনো অনেক দূর যাওয়া বাকি।
পড়ার পাশাপাশি
পড়ার পাশাপাশি রান্নাবান্না-সহ ঘরের কাজও করতে হয় মাসরিকাকে। সেসব সামলে পড়াশুনা করে মাসরিকা।
বাবার কথা
মাসরিকার বাবা ছোটু মোল্লা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, খুব অভাবের সংসার তার। সারাদিন ভ্যান চালিয়ে তিনি রোজগার করেন। কিন্তু মাসরিকা পড়াশুনোয় খুব ভালো। কখনো ফেল করেনি। ওর শিক্ষক-শিক্ষিকারাও খুব সাহায্য করেন।
সুজয়ের কাহিনি
তার বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির দমকল গ্রামে। বাবা একটি দোকানের সামান্য কর্মী। মা ক্যান্সারে আক্রান্ত। তার মধ্যে পড়াশুনো করে উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফল করেছে সুজয়।
ডাক্তার হতে চায়
স্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন কুমার মাইতির সাহায্যে পড়াশুনো চালিয়ে গেছে সুজয়। তার ইচ্ছে ডাক্তার হওয়ার। তার প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে সে।
সানন্দার লড়াই
একটা চোখ পুরোপুরি খারাপ। অন্য চোখে পঞ্চাশ শতাংশ দৃষ্টিশক্তি আছে। কিন্তু তাতে কী? লড়াই ছাড়েনি সানন্দা ঘোষ। উচ্চমাধ্যমিকে ৮৪ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। মার্কশিটটা বারবার জড়িয়ে ধরছে সানন্দা।
প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে লড়াই
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তো আছেই, সেই সঙ্গে আছে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই। সানন্দা থাকে নাগেরবাজারে। গরিবের সংসারে হার না মানা লড়াই সে চালিয়ে যেতে পেরেছে শিক্ষকদের সহায়তায়। সানন্দার বাবা বারাসতের একটি কারখানার কর্মী। সবমিলিয়ে হাজার সাতেক টাকা পান। তাই দিয়েই সংসার চালাতে হয়। টাকার অভাবে মেয়ের চোখের ভালো করে চিকিৎসা পর্যন্ত করতে পারেননি। মেয়েকে পড়ার কাজে যতটা পারেন সাহায্য করেন।
অর্পিতার লড়াই
অর্পিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাবা গাড়ি চালান। ডাক পড়লে কাজ পান। মাসে রোজগার পাঁচ হাজার টাকা। এই অভাবের সংসারে সব বিরুদ্ধতাকে জয় করে অর্পিতা উচ্চমাধ্যমিকে ৮৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছে।
মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায়
স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ঘরে দাঁড়িয়ে অর্পিতা বলছিল, সে সাইকোলজি নিয়ে পড়তে চায়। কেন? কারণ, ওই পরিবেশে থাকতে থাকতে অর্পিতার মনে হয়েছে, মানুষের কোনো উচ্চাকাঙ্খা নেই। বড় হওয়ার ইচ্ছেটা চলে গেছে। তার কারণ খুঁজতে চায় সে।