1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অতীতের শিক্ষা, ভবিষ্যতের সতর্কবার্তা

৯ মে ২০২০

মহামারির কারণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৭৫ বছর পূর্তির উদযাপনটি ছিল ছোট আকারে৷ তারপরও জার্মানির প্রেসিডেন্টের সতর্কবার্তা বেশ কিছু বিষয়কেই মনে করিয়ে দিচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/3byt0
ছবি: Reuters/H. Hanschke

গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখা আর আকার ইঙ্গিতে সমাজের প্রতি কিছু দিক নির্দেশনা দেয়া জার্মানির প্রেসিডেন্টের মূল কর্তব্য৷ এরপরও বড় কিছু দায়িত্ব থাকে তার উপরে৷ নিজ দেশ আর বিশ্বের মানুষে ঐক্য বজায় রাখতেও ভূমিকা পালন করেন তিনি৷

ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টাইনমায়ার ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন৷ তিনি প্রথম যে ভাষণটি দিয়েছিলেন তার মূল থিম ছিল উদ্দীপনা বা সাহসিকতা৷ সেই সময় তার বক্তৃতার মেধা নিয়ে অনেক বিদ্রুপও প্রচলিত ছিল৷ জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা (তিনি দুই মেয়াদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন) সাধারণত বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রেখে আবেগবর্জিত সংযত বক্তৃতাই দিয়ে থাকেন৷

কিন্তু সেখান থেকে তিনি নিজের একটি ‘স্টাইল' রপ্ত করেছেন৷ এক বছরের মধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ কিছু ভাষণ দিয়েছেন স্টাইনমায়ার ৷ বার্লিন দেয়াল পতনের ত্রিশতম বার্ষিকী থেকে শুরু করে, গণহত্যার ৭৫ বছরপূর্তি, হালের সিনাগগে বর্ণবাদী হামলা সবখানেই বাতিঘরের ভূমিকায় হাজির হয়েছেন তিনি৷ 

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেয়া ভাষণে তিনি বাস্তবতা আর মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য বের করার উপর সবার প্রতি আহবান জানান৷ এরপরও হিংসাত্মক বক্তব্য, অপরাধীর ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ও ভুয়া তথ্য ঠিকই ছড়িয়েছে৷ রাজনীতি আর সমাজকে নীচ থেকে উপর পর্যন্ত সর্বাগ্রে অস্থির করে তুলেছে৷

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির ৭৫ বছর পূর্তিতে বার্লিনের অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে স্টাইনমায়ার বলেছেন: কোন কিছুই চিরকালের জন্য নিরাপদ নয়৷ তার এই বক্তব্য বর্তমান প্রেক্ষাপট, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র এবং জার্মান রাষ্ট্রের মূলনীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ৷ সব জার্মানদেরকে নিজেদের পরিবার, দেশের ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকানোর আহবান ছিল তার বক্তব্যে৷ যে ইতিহাসের অপরাধী আর ক্ষতিগ্রস্ত দুই পক্ষেই রয়েছেন তারা৷ তবে একদিক থেকে বলতে গেলে আহবান জানানোর সময়টা দেরি হয়ে গেছে৷ কেননা (যুদ্ধের) শেষ প্রত্যক্ষদর্শীরাই শুধু নন, তাদের পরের প্রজন্মের অনেকেই এরইমধ্যে মারা গেছেন৷ তারপরও তার এই বক্তব্যের গুরুত্ব এখনও শেষ হয়ে যায়নি৷ 

স্টাইনমায়ার তার বক্তব্যে বেশ কিছু সতর্কবার্তাও দিয়ে আসছেন৷ গত জানুয়ারির শেষ দিকে গণহত্যার স্মরণে সংসদে দেয়া ভাষণে তিনি ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট রুভেন রিভলিনের বক্তৃতা থেকে উদ্ধৃত করে বলেছিলেন, ‘‘যা এখানে ঘটতে পারে তা যেকোন জায়াগায় ঘটতে পারে৷’’ এর সঙ্গে আউসভিৎজের গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী লেখক প্রিমো লেভির একটি উক্তির মিল পাওয়া যাবে৷ তিনি বলেছিলেন , ‘‘যা একবার ঘটেছিল তা বারবার ঘটতে পারে৷’’

জাতীয়তাবাদের নতুন প্রলোভন, কতৃত্ববাদী প্রবণতা, গণতন্ত্রের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ এসবই সমাজের জন্য ভয়ংকর হিসেবে উল্লেখ করেছেন স্টাইনমায়ার৷ তার এই বক্তব্য আমাদের জন্য সাবধানবাণী৷

ক্রিস্টোফ স্ট্রাক/এফএস