1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

১ ফেব্রুয়ারি সংসদ ভবন অভিযান কৃষকদের

২৭ জানুয়ারি ২০২১

এবার সংসদ ভবন অভিযানের ডাক দিলেন কৃষকরা। মঙ্গলবারের ঘটনার পর ২২টি মামলা রুজু হয়েছে কৃষদের বিরুদ্ধে।

https://p.dw.com/p/3oTGJ
কৃষক আন্দোলন
ছবি: Dinesh Joshi/AP/picture alliance

মঙ্গলবারের কৃষক মিছিল নিয়ে বুধবারও সরগরম দিল্লির রাজনীতি। ট্রাক্টর মিছিলের নির্দিষ্ট রুট ভেঙে যাঁরা লালকেল্লায় অভিযান চালিয়েছিলেন, তাঁদের কার্যকলাপকে সমর্থন করেননি ৪১টি কৃষক ইউনিয়ন নিয়ে তৈরি সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা। আন্দোলনকারী কৃষকদের শান্ত থাকার আবেদন জানিয়ে মঙ্গলবারই তাঁরা একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ফের দিল্লির সংসদ ভবন অভিযান হবে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। অন্য দিকে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবারের ঘটনায় তিনশ পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে ২২টি মামলা রুজু করা হয়েছে। যার মধ্যে বেশ কিছু কৃষক নেতার নাম আছে বলে দিল্লি পুলিশের সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার দিল্লির চারটি সীমানা থেকে কৃষকদের ট্রাক্টর মিছিল করার কথা ছিল। প্রজাতন্ত্র দিবসে এই ট্রাক্টর মিছিল করার জন্য বহু দিন ধরেই আবেদন জানিয়ে রেখেছিলেন আন্দোলনরত কৃষকরা। প্রথমে অনুমতি না পেলেও শেষ মুহূর্তে প্রতিটি সীমানা থেকে নির্দিষ্ট রুট তৈরি করে দেয় পুলিশ। শুধু সেই রুটেই ট্রাক্টর মিছিল করা যাবে বলে জানানো হয়। কিন্তু তাল কাটে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে। সিংঘু সীমানা থেকে আসা কৃষকদের একটি অংশ পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ঢুকে পড়ে দিল্লির রিং রোডের দিকে। সেখান থেকে আইটিও হয়ে তারা চলে যায় লালকেল্লা।

অভিযোগ, এই কৃষক বাহিনীর সামনে ছিলেন পাঞ্জাবি নেতা দীপ সিধু। লালকেল্লার মাথায় শিখদের ধর্মীয় পতাকাও তিনিই লাগান। যা নিয়ে তীব্র বিতর্ক হচ্ছে। সিধু অবশ্য মঙ্গলবার রাতে দাবি করেন, উত্তেজনার বশে তিনি ওই কাজ করেছেন এবং জাতীয় পতাকার নীচে শিখদের পতাকা তিনি লাগিয়েছিলেন। ফলে জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়নি।

প্রশাসন অবশ্য এ যুক্তি মানতে নারাজ। মঙ্গলবার বিকেলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাসভবনে জরুরি বৈঠক বসে। সেখানে দীপ সিধুর কাজ নিয়ে আলোচনা হয়। ওই দিন রাতে দিল্লি পুলিশ জানায় সব মিলিয়ে তাদের ৮৪ জন কর্মী আহত হয়েছেন। বুধবার সকালে অবশ্য পুলিশ দাবি করে, ৩০০ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে ২২টি মামলা রুজু হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। তবে সেই মামলায় ক'জন কৃষকনেতার নাম আছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। অন্যদিকে, মঙ্গলবার রাতেই ৪১টি কৃষক সংগঠন একযোগে বিবৃতি দিয়ে লালকেল্লার ঘটনার নিন্দা করেছেন। তাঁদের দাবি, বিজেপির উস্কানি এবং অসামাজিক কিছু ব্যক্তির জন্যই ওই ঘটনা ঘটেছে। সিধুর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। কারণ, ২০১৯ সালে পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরে বিজেপি নেতা তথা অভিনেতা সানি দেওলের নির্বাচনী প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। সানি দেওল অবশ্য ডিসেম্বরেই জানিয়েছিলেন, এখন আর তাঁর পরিবারের সঙ্গে সিধুর কোনো সম্পর্ক নেই। মঙ্গলবারও তিনি তা আবার জানিয়েছেন। কিন্তু সমাজমাধ্যমে সিধুর বেশ কিছু ছবি সামনে এসেছে। যেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর ছবি আছে। ফলে কৃষকনেতাদের একাংশের বক্তব্য, বিজেপি কৃষক আন্দোলনকে ব্যর্থ করতে এ কাজ করিয়েছে।

বুধবার কৃষকনেতারা ফের আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন। আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ভাবে চালানোর পাশাপাশি ১ ফেব্রুয়ারি সংসদ ভবন অভিযানের কথা তাঁরা জানিয়েছেন। ১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বাজেট। ওই দিন আদৌ কৃষকদের মিছিল করতে দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় তৈরি হয়েছে। যদিও সরকারি ভাবে এ বিষয়ে প্রশাসন এখনো কিছু জানায়নি।

মঙ্গলবারের ঘটনার পর দেশের প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক দলই লালকেল্লার ঘটনার নিন্দা করেছে। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি কৃষক আন্দোলন আপাতত ব্যাকফুটে? সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার দাবি, আন্দোলন কোনোভাবেই বন্ধ হবে না। দিল্লির সীমানায় যে যেখানে অবস্থান করছিলেন, তাঁরা সেখানেই থাকবেন। আন্দোলনও বন্ধ হবে না। তবে সুপ্রিম কোর্টের তৈরি করে দেওয়া প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কৃষকদের যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, মঙ্গলবারের ঘটনার পর তা পিছিয়ে গিয়েছে।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই)