হাসবেন যে ৯টি কারণে
মানুষের অনুভূতি প্রকাশ করতে সম্ভবত ‘হাসি’ সবচেয়ে সার্বজনীন অভিব্যক্তি৷ হাসিখুশি মানেই সেই ব্যক্তি সুখী, এমনটা না-ও হতে পারে৷ গবেষণায় দেখানো এমন অনেক কারণ ও নানা ধরনের হাসি নিয়েই এবারের ছবিঘর৷
চোখের ভেতরেই কিছু একটা আছে
সারা বিশ্বে হাসির জন্য সম্ভবত সবচেয়ে বিখ্যাত অভিনেত্রী জুলিয়া রবার্টস৷ তাঁর বিস্তৃত হাসি অনেক সময়ই সত্য বলে মনে হয়৷ গবেষকরা বলছেন, হাসি দুই ধরনের: জোর করে এবং সত্যি সত্যি হাসি৷ মিথ্যের আড়ালে সত্য হাসি খুঁজে পেতে হলে চোখের কোণে ভালো করে খেয়াল করতে হবে৷ তথাকথিত হাসির রেখা যদি আপনার সাথে সাথে হেসে না ওঠে তাহলে এটা সত্য হাসি বলে ধরে নেয়া হবে৷
হাসির আড়ালে
যদিও বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন যে, আমাদের সমসাময়িক সমাজে পুরুষের তুলনায় নারীর হাসির গ্রহণযোগ্যতা বেশি, তবে আগের শতাব্দীগুলোতে পোর্ট্রেইটে নারীর হাসি প্রায় বিরল ছিল৷ দুনিয়াতে এখন পর্যন্ত মোনালিসার হাসি নিয়ে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি কথা হয়েছে৷ চুপচাপ রহস্যমাখা চাহনিতে কী যে ভাবছেন তা বোঝা মুশকিল, অথচ ঠোঁটে তার আবেশ জড়ানো হাসি! এটা কি খুব পরিচিত কোনো হাসি? নাকি কোনো প্রলোভন?
'হাসির বিপ্লব'
ঐতিহাসিক পোর্ট্রেইটে মানুষ কেন হাসে না? ইতিহাসবিদ কলিন জোনস তাঁর ‘দ্য স্মাইল রেভোলিউশন ইন এইটিন্থ সেঞ্চুরি প্যারিস’ বইয়ে তিনি যুক্তি দেন যে, হাসির অর্থ একেকটা সংস্কৃতির ওপর নির্ভর করে৷ ফরাসি বিপ্লবের আগে, বেশিরভাগ হাসি কৃপণতা হিসেবে ব্যাখ্যা করা হতো৷ তবে বিপ্লবের মাঝামাঝি সময় থেকে একে সাম্যবাদী সমাজের চিহ্ন হিসেবে ধরা হতো৷
কূটনৈতিক হাসির চেয়েও বেশি কিছু
জোনস এর যুক্তি মতে, হাসির অর্থ সময় ও জায়গার ওপর নির্ভর করে৷ একইসাথে কোন মুহূর্তে সামাজ কখন কী গ্রহণ করে, সেটিও গুরুত্বপূর্ণ৷ পথচারীর অস্থির মেজাজ কিংবা ঠাট্টাচ্ছলে একটু হাসি অনেক সমাজেই বেশ পরিচিত হলেও জার্মানিতে নয়৷ তার অর্থ এমন নয় যে তাঁরা হাসেন না৷ ম্যার্কেলের ছবির দিকে তাকিয়ে দেখুন: বেশিরভাগ সময় গম্ভীর চেহারা নিয়ে থাকেন তিনি, তবে মাঝে মধ্যে যেন ভুল করে এভাবে একটুখানি হাসতেও দেখা যায় তাঁকে৷
লুকানো উদ্দেশ্য
জার্মানির সবচেয়ে অদ্ভুত স্বভাবের শাসকদের মধ্যে বাভারিয়ার দ্বিতীয় রাজা লুডভিক অন্যতম৷ তাঁকে কখনোই পোট্রেইটে হাসতে দেখা যায়নি৷ কেউ কেউ বলেন যে, মিষ্টি খাবারের প্রতি সীমাহীন ভালোবাসা আর ১৯ শতকে দাঁতের যথাযথ যত্ন নেয়ার ব্যবস্থা না থাকার কারণেই তিনি এমন ভেংচি কেটে হাসতেন৷ আবার অনেকে এটাও বিশ্বাস করেন যে, যেহেতু তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন তাই তাঁর এই হাসির আড়ালে আসলে আর কোনো সত্য লুকিয়ে নেই৷
সমগ্র বিশ্বের হাসা হাসি
‘তুমি যখন হাসো, তোমার সাথে সাথে সারা দুনিয়াও হেসে ওঠে’ জ্যাজ সম্রাট লুইস আর্মস্ট্রং ক্রুনস যখন এই কথা বলেন, তখন আর না হেসে থাকাটা কঠিন৷ এক সুইডিশ গবেষণায় দেখা গেছে, বাঁকা হাসি দেয়াটা অনেকের পক্ষে প্রায় অসম্ভব ছিল অর্থাৎ সুখী ভাব করে হাসিতেই সহজাত তারা৷
‘হাসি থেকেই শান্তির শুরু’
কলকাতায় নিপীড়িত মানুষদের নিয়ে কাজের জন্য মাদার টেরেসা ভালো কাজের প্রতীকী চরিত্রে পরিণত হয়েছিলেন৷ তিনি বলতেন, ‘‘এটা খুব সাধারণভাবেই শুরু হতে পারে৷ শান্তির শুরু তো হাসি দিয়ে৷’’ বিশেষজ্ঞরাও বলেন, হাসি দুই জন মানুষের সম্পর্কের মেজাজ বদলে দেয়৷ টেরেসা বলতেন, ‘‘যখন কারও দিকে তাকিয়ে হাসো, তখন প্রত্যেকবার তার জন্য ভালবাসা তৈরি হয়, এটি তাঁর জন্য এক ধরনের উপহার হিসেবে ধরা হয়, এটি একটি অপূর্ব জিনিস৷’
নীরবে সহ্য করা
নারীদের দেখলে অনেকেইঅযাচিতভাবে বলে বসেন, মেয়েদের হাসা উচিত৷ এ ধরণের অবাঞ্ছিত উপদেশ তাদের জন্য অপমানজনক এই যুক্তিতে এক সময় তারা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়৷ কারণ, অচেনা কারও পক্ষে তো আর চেহারা দেখেই কারও কষ্টের কারণ জানা সম্ভব নয়৷ সুপারস্টার মেরিলিন মনরোর পরামর্শ ছিল, ‘‘জীবন সুন্দর, হাসারও অনেক কিছু আছে৷ তাই হাসুন৷’’
হাসি কি সংক্রামক?
শ্বাস-প্রশ্বাসের অনেক ধরনের ব্যায়াম ছাড়াও কঠিন সময়েও মনোযোগ ধরে রাখতে যোগব্যায়াম কাজে লাগে৷ হাসির যোগব্যায়ামে দল ধরে সবাই একসাথে হাসে৷ অনেকে বলেন, হাসি সংক্রামক৷ একবার হাসি শুরু হলে সবারই মেজাজ হালকা হয়৷