1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হারিয়ে যাচ্ছে হাতে আঁকা পোস্টার

২৭ এপ্রিল ২০২২

সিনেমায় হাতে আঁকা পোস্টার আজকাল খুব কমই দেখা যায়৷ এ অবস্থায় বার্লিনে এক আঁকিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন স্বচ্ছন্দে৷ ত্রিশ বছরের অভিজ্ঞতায় পরিষ্কার বুঝিয়ে দিচ্ছেন যতই সব ডিজিটাল হয়ে উঠুক, হাতে আঁকা পোস্টারের আবেদন আলাদা৷

https://p.dw.com/p/4ATdx
BdT Preview Berlin - Angel.A. von Goetz Valien nur noch heute zu sehen
ছবি: picture-alliance/dpa

শুধু বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবের সময় নয়, বড় বড় সিনেমা পোস্টার সারা বছরই বার্লিনের একটি বৈচিত্র্য৷ অস্ট্রিয়ান পেইন্টার গ্যোৎস ফালিন এই পেশার সবশেষ কারিগরদের একজন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি চলচ্চিত্র ভালোবাসি৷ আমার কাছে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি৷ একটা শিল্প৷ শিল্প ও চলচ্চিত্রের মধ্যে আমি কোনো পার্থক্য করি না৷ এটা আর্টের একটা বড় ফর্ম৷ এটাকে আপনি পপ আর্ট বা জনপ্রিয় সংস্কৃতি বলতে পারেন৷ চলচ্চিত্র না থাকলে আমরা অথৈ সাগরে পড়ে যেতাম৷''

বার্লিনে নিজের স্টুডিওতে তিনি বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবের জন্য একটি ডাবল এক্সএল পোস্টার আঁকেন৷ প্রথমে তিনি এর কাঠামো আঁকেন৷

সমস্যা হলো, প্রতিটি অংশের অনুপাত বজায় রাখা৷ কারণ, ক্যানভাসটি ৫ বাই ৯ মিটার, অর্থাৎ একটি সাধারণ ফিল্ম পোস্টারের চেয়ে ৪৫ গুণ বড়৷ গ্যোৎস ফালিন স্প্রে গান দিয়ে বড় বড় অংশে রঙের কাজ করেন৷ প্রতিটি পেইন্টে তার ২০ লিটার রং লাগে৷

গ্যোৎস ফালিনের ভাষায়, ‘‘কাজ করতে করতেই ভাবি কেমন করে করব, আগে থেকে কোনো পরিকল্পনা থাকে না৷ বলতে গেলে, সবকিছু স্বতঃস্ফুর্তভাবে হয়ে ওঠে৷ রং ও গঠনের দিক থেকে প্রত্যেকটা ছবি আলাদা৷ আমি শুধু যত দ্রুত সম্ভব কাজটি সঠিকভাবে শেষ করি৷''

গড়ে দু'দিনে একটি কাজ করেন গ্যোৎস ফালিন৷ হাতে রঙ করা একেকটি পোস্টারের জন্য ৮০০ ইউরো পারিশ্রমিক নেন তিনি৷

এ যুগেও হাতে পোস্টার আঁকেন যিনি

এই শিল্পীর নির্ভুল রঙ করার কৌশল এই শিল্পের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ ব্রাশ দিয়ে তিনি সূক্ষ্ম কাজগুলো করেন৷

‘‘এটা সবকিছুর একটা মিশ্রণ৷ আপনাকে একজন ব্যালে শিল্পীর মতো খুব ফিট ও ভঙ্গুর হতে হবে৷ আপনাকে এখানে ওখানে লাফঝাঁপ করে কাজ করতে হবে৷ এ সবকিছু করতে করতে আবার রঙও করতে হবে৷ আর বাড়াবাড়ি শোনালেও আপনাকে সাহসিও হতে হবে৷ কারণ, সকালে যখন আপনি নয় মিটার লম্বা একটা সাদা পর্দার সামনে দাঁড়ান, এবং জানেন যে সন্ধ্যা নাগাদ এটি পূরণ করতে হবে, তখন লাফঝাঁপ দেয়া ছাড়া উপায় নেই,'' বলেন এই শিল্পী৷

গ্যোৎস ফালিন বার্লিনে আসার আগে ভিয়েনায় পেইন্টিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন৷ ১৯৯২ সালে তিনি তার প্রথম সিনেমা পোস্টার আঁকেন৷ এখন পর্যন্ত এই সংখ্যা ২ হাজার৷ তার কাজে তিনি পরাবাস্তবতা দিয়ে বাস্তবতা ছুঁতে চান৷

ফালিন বলেন, ‘‘৩০ বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে বলতে পারি একটা প্রিন্ট আর হাতে আঁকা পোস্টারের পার্থক্য হল আপনি চাইলে বিমূর্ত হতে পারেন৷ একটা ছবিতে গোটা বিষয়টা চলে আসে, আপনি না চাইলেও৷ কিন্তু আমি সেটাতেই জোর দিতে পারি, যেটাতে আমার মনে হয় জোর দেয়া উচিত৷ আর এই ফর্মকে বলে, অপরিহার্য বিষয়ের দিকে মনোযোগ৷''

কোন একটি সিনেমা যখন তিন চার মাসের জন্য চলতে থাকে সব কৎটা হলে, তখন ঐ সময়টায় ফালিনদের আর কাজ থাকে না৷ যেমন টাইটানিকের সময় বেশি ভুগেছেন তারা৷ তখন তিনমাস কোন কাজ ছিল না তার৷

শুধু ব্লকবাস্টারগুলোই তার জীবনকে কঠিন করে তোলে, তা নয়৷ এখন খুব কম সিনেমাই হাতে আঁকা পোস্টার বানায়৷ এই শিল্পকর্ম রীতিমত বিলীন হবার দশা৷ কিন্তু গ্যোৎস ফালিন ভরসা হারাবার পাত্র নন৷ বরং এটি তাকে আরো জেদি করে তোলে৷

পিনিয়েরস/লানকেস/জেডএ