হামাসের নতুন নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের পরিচয়
৮ আগস্ট ২০২৪এই ঘটনার পরপরই মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ৬১ বছর বয়সি ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে তার উত্তরসূরি হিসাবে নিযুক্ত করা হয়৷ উগ্র ইসলামিক সংগঠন হামাসকে জার্মানি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে বিবেচনা করে৷
ইয়াহিয়া সিনওয়ার কে?
২০১৭ সাল থেকে সিনওয়ার গাজায় হামাসের নেতা হিসেবে পরিচিত৷ তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে জানা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে তিনি হামাসের সুড়ঙ্গে আত্মগোপনে রয়েছেন৷ হামাসের প্রধান কূটনীতিক ও ইয়াহিয়ার পূর্বসূরি ইসমাইল হানিয়া অধিকাংশ সময়ই কাতারের রাজধানী দোহায় বসবাস করতেন৷
সিনওয়ারকে ২০২৩ সালের ৭ ই অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷ এই হামলায় এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয় ও ২৫০ জনেরও বেশি লোককে জিম্মি করে গাজায় আটকে রাখা হয়েছিল৷ ইসারায়েলের পাল্টা আক্রমণে এ পর্যন্ত ৩৯ হাজার ৬৫০ জন বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন৷ তবে ৭ অক্টোবর থেকে সিনওয়ারকে আর দেখা যায়নি৷
‘খান ইউনিসের কসাই'
সিনওয়ার ১৯৬২ সালে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন৷ তার পরিবার উপকূলীয় শহর আশকেলন অঞ্চল থেকে খান ইউনিসে গিয়েছিল৷ খান ইউনিস বর্তমানে ইসরায়েলের অধিকৃত একটি অংশ৷
১৯৮০ এর দশকের শেষের দিকে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রথম ফিলিস্তিনি বিদ্রোহ ইন্তিফাদার সময় হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেড প্রতিষ্ঠায় সিনওয়ার অবদান রেখেছিলেন৷ হামাসের শুরুর দিকে ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চায় হামাসের এমন সদস্যদের বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার ছিলেন৷ নিষ্ঠুরতার জন্য তিনি ‘খান ইউনিসের কসাই' নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন৷
পরবর্তীতে দুই ইসরায়েলি সৈন্যকে হত্যার দায়ে সিনওয়ার সহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়৷ সিনওয়ার মোট ২৩ বছর ইসরায়েলি কারাগারে কাটিয়েছেন৷ কারাগারে থাকাকালীন সময় সিনওয়ার হিব্রু ভাষাও আয়ত্ত করে নেন৷ বন্দি বিনিময়ের অংশ হিসেবে ২০১১ সালে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু তাকে মুক্তি দেন৷
সিনওয়ার কি বর্তমান অবস্থার কোনো পরিবর্তন আনতে পারবেন?
সিনওয়ার দখলকৃত পশ্চিম তীর সহ একটি ঐক্যবদ্ধ ফিলিস্তিনি স্বাধীন অঞ্চল গঠন করতে চান৷ বন্দি বিনিময় ও ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সিনওয়ারের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি বলে মনে করা হচ্ছে৷ তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে হানিয়ার চেয়েও সিনওয়ার কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবেন৷
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মাইকেল বলেন, সিনওয়ারকে দায়িত্ব দেওয়ার মাধ্যমে হামাস ইসরায়েলকে একটি ‘স্পষ্ট বার্তা' দিয়েছে যে, হামাস প্রতিরোধের পথেই থাকবে৷ মাইকেল বলেন, ‘‘সিনওয়ার যেখানে লুকিয়ে আছেন অর্থাৎ গাজার সুড়ঙ্গ থেকে হামাসকে নেতৃত্ব দিতে পারবে না৷ একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তাকে অবশ্যই গাজার বাইরে থেকে কাজ করতে হবে এবং জিম্মি চুক্তি বা যুদ্ধবিরতি ছাড়া সে বেরিয়ে আসতে পারে না৷''
ইনেস আইসেলে/এসএইচ