1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যে ওষুধে বিভক্ত পৃথিবী

২ জুন ২০২০

কোথাও এ ওষুধের পক্ষে চলছে প্রচার, আবার কোনো কোনো দেশ একে করছে নিষিদ্ধ ৷ কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার নিয়ে পৃথিবী দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে৷

https://p.dw.com/p/3d7pT
ছবি: picture-alliance/dpa/Zuma/Quad-City Times/K. E. Schmidt

বিশ্বজুড়ে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া নতুন করোনা ভাইরাস এরই মধ্যে ৩ লাখ ৭২ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে৷  আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৬৩ লাখ৷

এখনো এ রোগের টিকা বা উপশমে কার্যকর কোনো ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি৷ বিভিন্ন দেশে গুরুতর রোগীদের উপর কয়েকটি ওষুধের ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’ চলছে৷ যে ওষুধগুলোর একটি হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন৷ এটি মূলত ম্যালেরিয়ার ওষুধ৷

তবে এ ওষুধের গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, বিশেষ করে হৃদপিণ্ডের গতি অস্বাভাবিক হয়ে যেতে পারে৷

যদিও ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন নিরাপদ৷ এছাড়া, আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায়ও এ ওষুধ ব্যবহৃত হয়৷ কিন্তু কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় এর কার্যকারিতা এখনো প্রমাণিত নয়৷

কেন এ ওষুধ নিয়ে এত হইচই

করোনা ভাইরাস মহামারিতে বিশ্ব যখন দিশেহারা তখন অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প কোনো প্রমাণ ছাড়াই করোনায় চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের সফলতার পক্ষে প্রচারে নেমে যান৷ এমনকি, মে মাসের প্রথম দিকে তিনি সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে নিজে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সেবনের দাবিও করেন৷ তার এ দাবির পর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসক্রিপশনে এ ওষুধের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়৷

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের কার্যকারিতার পক্ষে সাফাই গেয়ে একটি ভিডিও বানিয়েছিলেন৷ যদি পরে অনলাইন থেকে ভিডিওটি সরিয়ে নেওয়া হয়৷

অথচ গত ২২ মে প্রকাশিত মেডিক্যাল জার্নাল দ্য লানসেট-র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় এক লাখ কোভিড-১৯ আক্রান্তের উপর জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও ক্লোরোকুইন ব্যবহারে তাদের শরীরিক অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি৷ বরং ওই ওষুধে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়৷

ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়৷ যদিও অনেক বিজ্ঞানী দ্য লানসেট-র জরিপ পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন৷ যার প্রেক্ষিতে জার্নালটি প্রতিবেদনের কিছু তথ্য সংশোধন করে৷ কিন্তু তাতেও বিতর্ক শেষ হয়নি৷

নানা দেশ ওষুধটি নিয়ে নিজেদের মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে৷  শুরুতে ব্যবহার করলেও এখন ফ্রান্স, ইটালি, জার্মানি, সুইডেন, মিশর, তিউনিসিয়া, কলম্বিয়া, চিলি, এল সালভাদর, আলবানিয়া, বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগভিনাসহ কয়েকটি দেশ এ ওষুধের ব্যবহার স্থগিত করে৷ তবে চাইলে গুরুতর রোগীদের উপর পরীক্ষামূলক ব্যবহার করার অনুমতি আছে৷

আবার ব্রাজিল, আলজেরিয়া, মরক্কো, তুরস্ক, জর্ডান, রোমানিয়া, পর্তুগাল, কেনিয়া, সেনেগাল, চাড এবং রিপাবলিক অব কঙ্গো করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারে রীতিমত উৎসাহ দিচ্ছে৷

থাইল্যান্ড, ভারত, ভেনেজুয়েলা, রাশিয়া, বাহরাইন, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত এখন এ ওষুধের ব্যবহার বন্ধ ঘোষণা করেনি৷ ইরান বলছে, সেখানে এখনো রোগীরা এই ওষুধের ব্যবহারে সুস্থ হচ্ছে৷

যুক্তরাষ্ট্রে শুধু হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহার করার অনুমতি আছে৷ তবে একই সঙ্গে দেশটির খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন এপ্রিলে এর ব্যবহারে হৃদপিণ্ডে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছে৷

দ্য লানসেট-র প্রতিবেদন প্রকাশের পর ফ্রান্স, জার্মানি ও ডেনমার্কসহ কয়েকটি দেশে গবেষণাগারে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের পরীক্ষা বন্ধ করা হয়েছে৷ কোথাও কোথাও এখনো চলছে৷

এসএনএল/কেএম (এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য