1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হরিদ্বারে আটক বাঙালিদের ফেরাচ্ছে না পশ্চিমবঙ্গ

১২ মে ২০২০

প্রায় পঞ্চাশ দিন ধরে তাঁরা আটকে পড়েছেন হরিদ্বারে। প্রায় ৭০০ বাঙালি পর্যটক-তীর্থযাত্রী। তাঁদের পশ্চিমবঙ্গে ফেরাবার ব্যবস্থা করছে না রাজ্য সরকার।  

https://p.dw.com/p/3c3qn
I
ছবি: Jasvinder Sehgal

তাঁরা সকলেই তীর্থযাত্রী পর্যটক। হরিদ্বার গিয়েছিলেন। করোনার ফলে হঠাৎ করে লকডাউন হয়ে যাওয়ায় আটকে পড়েছেন। উত্তরাখণ্ড সরকার তাঁদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। প্রায় পঞ্চাশ দিন ধরে ঘরছাড়া বাঙালিরা বাডি ফেরার জন্য রীতিমতো আকুল হয়ে উঠেছেন। উত্তরাখণ্ড সরকারও চাইছে, এই তীর্থযাত্রীরা পশ্চিমবঙ্গে তাঁদের বাড়িতে চলে যান। কিন্তু যাবেন কী করে? একটাই উপায় ছিলো, যদি পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করতো

উত্তরাখণ্ডের মন্ত্রী মদন কৌশিক বলেছেন, ''লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই আমরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাঁদের বলেছি, এই তীর্থযাত্রীদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁরা কিছু জানাননি। আমরা ওঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু তীর্থযাত্রীরাই ফিরতে চাইছেন।'' স্বাভাবিক। আটকে যাওয়া মানুষদের আবেদন হলো, ''আমরা দিদির কাছে আবেদন করছি, দয়া করে আমাদের ফেরাবার ব্যবস্থা করুন।''

রাজ্য সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, সম্প্রতি উত্তরাখণ্ড থেকে কিছু মানুষ নিজেদের গাড়ি বা বাসের ব্যবস্থা করে ফিরেছেন। তাঁদের রাজ্যে ঢোকার এন্ট্রি পাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকার নিজে থেকে ফেরাবার ব্যবস্থা এখনও করে উঠতে পারেনি। কিছুদিন আগে পর্যন্ত তো কাউকে বাইরে থেকে রাজ্যে ঢুকতেও দেওয়া হচ্ছিলো না। ওড়িশায় প্রচুর লোক আটকে পড়েছিলেন। মুর্শিদাবাদের এমনই কিছু মানুষ সীমান্তে তিনদিন কাটাবার পর লোকসভায় কংগ্রেস নেতা এবং বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি তখন তাঁদের খাবার, জল ও বাড়ি ফেরার বাসের ব্যবস্থা করেছেন। তাঁরা ফিরতে পেরেছেন।

ইতিমধ্যে বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরাবার ব্যবস্থা করছেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সরকার যখন পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজেদের রাজ্যে ফেরাবার জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে, তখন পশ্চিমবঙ্গ সরকার মাত্র দুইটি ট্রেন চায়। একটি কেরল, অন্যটি রাজস্থান থেকে। তখন অধীর সহ বিরোধী নেতারা প্রশ্ন তোলেন, কেন অন্য রাজ্যে থাকা শ্রমিকদের ফেরাতে ট্রেনের ব্যবস্থা করছে না রাজ্য সরকার? এমনকী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ চিঠি লিখে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে রাজ্য সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার অনুরোধ করেন। তিনিও বলেন, রাজ্য মাত্র দুইটি ট্রেন নিয়েছে। ততক্ষণে রাজ্য সরকার অবশ্য আরও দশটি ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে। মুখ্যমন্ত্রী সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সেই রীতিমতো ক্ষোভের সঙ্গে বলেছেন, ''দয়া করে করোনা নিয়ে রাজনীতি করবেন না।'' ওই বৈঠকে অমিত শাহও ছিলেন। মমতা সাফ বলেছেন, ''উনি তো ফোন করলেও ধরেন না। উল্টে চিঠি লেখেন। উনি তো আমাকে চেনেন। অ্যাডভাইসারি পাঠানো বন্ধ করুন। সহযোগিতার ভিত্তিতে চলুন।''

তবে দেখা যাচ্ছে, শ্রমিকদের ফেরাতে রাজ্য যে ব্যবস্থা করেছে প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল। হরিদ্বারের মতো দেশের অন্য শহরেও প্রচুর বাঙালি শ্রমিক, পর্যটক, চিকিৎসা করতে ও অন্য প্রয়োজনে যাওয়া মানুষ আটকে পড়েছেন। তাঁদের সংখ্যাটাও বিপুল। মঙ্গলবার থেকে ট্রেন চলাচল আংশিকভাবে শুরু হয়েছে। দিল্লি থেকে একটি ট্রেন হাওড়া গিয়েছে। কয়েক মিনিটের মধ্যে তার টিকিট শেষ হয়ে যায়। দিল্লি ও তার আশপাশে আটকে পড়া মানুষেরা বাড়ি ফিরতে কতটা মরিয়া, এই ঘটনা তারই প্রমাণ। প্রশ্ন, বাকিদের কী হবে, কতদিন তাঁদের আটকে থাকতে হবে?

জিএইচ/এসজি(এএনআই)