হংকংয়ের যুবসমাজের জন্য দরজা খুলে দিল ক্যানাডা। বৃহস্পতিবার ক্যানাডা জানিয়ে দিল হাই স্কুলের পাঠ শেষ করেই ক্যানাডায় চলে যেতে পারে হংকংয়ের ছেলেমেয়েরা। সেখানে তাদের চাকরির সুযোগ যেমন থাকবে, থাকবে আরো পড়াশোনা করার ব্যবস্থাও।
হংকংনিয়ে চীনের নীতিকে পছন্দ করছে না বহু দেশ। এর আগে প্রকাশ্যেই এর নিন্দা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অ্যামেরিকা। কিন্তু হংকং নিয়ে নিজেদের অবস্থান বদলায়নি বেজিং। বরং হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থীদের উপর চাপ আরো বাড়ানো হয়েছে। বুধবার আইনসভার চার গণতন্ত্রপন্থী সদস্যকে বিনা নোটিসে বরখাস্ত করা হয়। জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে তাদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আদালতে যাওয়ার সুযোগটুকুও তাঁরা পাননি। এরই প্রতিবাদে হংকংয়ের সমস্ত গণতন্ত্রপন্থী আইনসভার সদস্য একসঙ্গে পদত্যাগপত্র পেশ করেন। তাঁরা জানিয়ে দেন, আইনসভায় আর তাঁরা থাকবেন না। রাস্তায় নেমে তাঁরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করবেন।
-
২০১৯: বিক্ষোভের বছর
ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
বছরের শেষ দিকে এসে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে পুরো ভারতে বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে৷ ধর্মীয় বৈষম্যপূর্ণ ওই আইনের বিরুদ্ধে সব ধর্মের লোকজন একত্রিত হয়ে আন্দোলন করছেন, এক সপ্তাতেই ঝরেছে অন্তত ২৩ প্রাণ৷
-
২০১৯: বিক্ষোভের বছর
বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে রাজধানী দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু হলে পুলিশ পাল্টা আঘাত করে; ক্যাম্পাস পরিণত হয় রণক্ষেত্রে৷
-
২০১৯: বিক্ষোভের বছর
হংকংয়ের স্থিতিশীলতায় ধাক্কা
চীনের মূলভূখণ্ডে বন্দি প্রত্যর্পণ নিয়ে প্রস্তাবিত একটি বিল বাতিলের দাবিতে জুন থেকে হংকংয়ে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল তা এখন স্বায়ত্তশাসিত এ অঞ্চলের স্বাধিকার আন্দোলনে পরিণত হয়েছে৷ গণদাবির মুখে সেপ্টেম্বরেই বিলটি বাতিল করা হলেও আন্দোলন থামেনি৷
-
২০১৯: বিক্ষোভের বছর
নির্বাচনেও প্রভাব
হংকংয়ের স্বাধিকার আন্দোলনে লাখো মানুষ সড়কে নেমে বিক্ষোভ করছে৷ এ আন্দোলন সাধারণ মানুষের মধ্যে এতটাই সাড়া ফেলেছে যে নভেম্বরে এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ এই বাণিজ্য নগরীর স্থানীয় নির্বাচনে গণতন্ত্রপন্থিরা বিশাল জয় পেয়েছেন৷
-
২০১৯: বিক্ষোভের বছর
আবারও উত্তপ্ত হচ্ছে ইরাক
সাবেক স্বৈরশাসক সাদ্দামের আমল থেকেও ‘খারাপ সময়ের’ মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন ইরাকিরা৷ দুর্নীতি, বেকারত্ব, সরকারের উপর ইরানের প্রভাব ইত্যাদি নানা অভিযোগ নিয়ে অক্টোবর থেকে সাধারণ মানুষ সড়কে নেমে বিক্ষোভ করছে৷ বিক্ষোভ দমনে সরকারের নৃংসতায় এরই মধ্যে ৪৬০ মানুষ নিহত এবং ২৫ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন৷
-
২০১৯: বিক্ষোভের বছর
বৈরুতে সংহতির মুষ্টি
জ্বালানি ও তামাক পণ্যের উপর বাড়তি করারোপ এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের উপর বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে অক্টোবরে যে আন্দোলন শুরু হয় তা থামাতে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান সাদ হারিরি৷ কিন্তু পদ থেকে সরে গেলেও হারিরি ক্ষমতার কেন্দ্রে থেকে যাওয়ায় বিক্ষোভ চলছে৷
-
২০১৯: বিক্ষোভের বছর
ইরানে জ্বালানি তেল নিয়ে বিক্ষোভ
বিশ্বের বৃহৎ তেল উৎপাদনকারী দেশ ইরানের উপর যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে নভেম্বর থেকে দেশটিতে জ্বালানি তেলের উপর রেশনিং শুরু হয়, পেট্রোলের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে৷ যার বিরুদ্ধে ২১টি নগরীতে সহিংস বিক্ষোভ হয়৷ বিক্ষোভে হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি যুক্তরাষ্ট্রের৷
-
২০১৯: বিক্ষোভের বছর
ক্ষমতার লড়াই
এপ্রিলে সুদানের ক্ষমতা থেকে ওমর আল-বশিরকে উৎখাতের পর থেকেই দেশটির সেনাবাহিনী ও গণতন্ত্রপন্থিদের মধ্যে ক্ষমতার কেন্দ্রে যাওয়ার লড়াই চলছে৷ যাতে কয়েক ডজন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন৷
-
২০১৯: বিক্ষোভের বছর
রঙিন বিক্ষোভ
চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ এবং আরো উন্নত স্বাস্থ্যসেবা, অবসর ভাতা এবং শিক্ষা ব্যবস্থার দাবিতে দুই মাস আগে চিলিতে বিক্ষোভ শুরু হয়৷ তবে বিক্ষোভে এখনো নৃশংসতার খবর পাওয়া যায়নি৷
-
২০১৯: বিক্ষোভের বছর
স্বাধীনতার লড়াই
স্পেনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল বার্সেলোনা বহুদিন ধরেই স্বাধীনতা চাইছে৷ স্বাধীনতা প্রশ্নে গণভোটের আয়োজন হলেও কেন্দ্র সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপে তা ভণ্ডুল হয়ে যায়৷ মাদ্রিদ সরকারের দমনের বিরুদ্ধে কাতালুনিয়ায় বিক্ষোভ তাই নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে৷
বেজিংহংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থীদের এই আচরণের নিন্দা করেছে। বেজিংয়ের বক্তব্য, এ ভাবে দেশের আইন হাতে তুলে নিচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু বেজিংয়ের এই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে যুক্তরাজ্য। এক সময় হংকং ছিল ব্রিটিশ উপনিবেশ। কয়েক দশক আগে তা চীনের হাতে চুক্তির মাধ্যমে তুলে দেওয়া হয়। সেই চুক্তিতে হংকংয়ের অধিকারের বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু বক্তব্য ছিল। যুক্তরাজ্যের দাবি, চীন সেই চুক্তি মানছে না। যে ভাবে হংকংয়ে বেজিং নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করছে, তা চুক্তির বিরোধী। গণতন্ত্রপন্থীদের সঙ্গে সেখানে যে আচরণ করা হচ্ছে, তারও নিন্দা করেছে যুক্তরাজ্য।
ক্যানাডা অবশ্য মুখে কোনো নিন্দা করেনি। তারা সরাসরি হংকংয়ের ছাত্রদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে নিজের দেশের। এর ফলে ক্যানাডার সঙ্গে চীনের সম্পর্ক আরো খারাপ হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ক্যানাডার শরণার্থী বিষয়ক মন্ত্রী মার্কো মেনডিসিনো টুইট করে তাঁর প্রস্তাব সকলকে জানিয়েছেন।
হংকংয়ের জন্য ক্যানাডার এই প্রস্তাব স্বাভাবিক ভাবেই চীন ভালো চোখে দেখবে না। এর আগেও বিভিন্ন বিষয়ে চীনের সঙ্গে ক্যানাডার দূরত্ব তৈরি হয়েছে। হংকং এবং তাইওয়ান প্রসঙ্গে আগেও ক্যানাডা বিরূপ মন্তব্য করেছে। তবে বৃহস্পতিবারের ঘোষণা অন্য মাত্রা পাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স)