সোলিঙেনের ঘটনার পর কড়া পদক্ষেপের ডাক
২৭ আগস্ট ২০২৪সিরিয়া ও ইরান থেকে শরণার্থী গ্রহণ বন্ধ করার ডাক দিয়েছেন বিরোধী নেতা৷
জার্মানির পূর্বাঞ্চলের দুটি রাজ্যে নির্বাচনের ঠিক আগে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সোলিঙেন শহরে হামলার ঘটনা রাজনীতি জগতে প্রবল আলোড়ন সৃষ্টি করেছে৷ রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীরা যাতে ছলে-বলে-কৌশলে অবৈধভাবে জার্মানিতে থেকে যেতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে নানা দাবিতে সোচ্চার হচ্ছেন রাজনৈতিক নেতারা৷ খোদ জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস সোমবার সোলিঙেনে গিয়ে ঘটনাস্থলে পুস্পস্তবক অর্পণ করেছেন৷ তিনি তীব্র ক্রোধ প্রকাশ করে ২৬ বছর বয়সি অভিযুক্ত ব্যক্তির কড়া শাস্তির ডাক দেন৷
শলৎস বলেন, এমন জঘন্য অপরাধের ঘটনা কেউ ভুলবে না৷ সন্ত্রাসবাদ সবার জীবনে হুমকি হয়ে উঠেছে৷ সামাজিক বোধ ও জীবনধারার জন্যও এটা হুমকি হয়ে উঠেছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর আরো বলেন, জঘন্যতম ভাবদর্শে দিক্ষিত দুষ্ট অপরাধীদের কিছুতেই সমাজের ‘স্পিরিট' নষ্ট করতে দেওয়া হবে না৷
উল্লেখ্য, শুক্রবারের ছুরি হামলায় তিন জন নিহত ও আট জন আহত হয়েছেন৷ চার জনের ক্ষত বেশ গুরুতর৷ আদালতের শমনের ভিত্তিতে এক সিরীয় ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে৷ তথাকথিত ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠী সেই হামলার দায় স্বীকার করেছে৷
আগামী রোববার স্যাক্সনি ও টুরিঙ্গিয়া রাজ্যে নির্বাচনের আগে সোলিঙেনে হামলার ঘটনা বাড়তি মনোযোগ আকর্ষণ করছে৷ বিশেষ করে অভিবাসনবিরোধী এএফডি দল আরো কড়া পদক্ষেপের ডাক দিচ্ছে৷ মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলিও অবৈধ রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের ক্ষেত্রে কড়া মনোভাবের দাবি করছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস প্রয়োজনে আইন প্রণয়ন করে এমন মানুষের প্রত্যর্পণের হার বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন৷ সেইসঙ্গে তিনি প্রচলিত আইন আরো কড়া ও বাস্তবসম্মতভাবে প্রয়োগের ডাক দেন৷ শলৎস মারাত্মক অস্ত্র বহনের অধিকার সঙ্কুচিত করতে দ্রুত পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷
নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হেনরিক ভ্যুস্ট বাস্তব সমস্যাগুলির প্রতি নজর আকর্ষণ করে বলেন, সময়সীমা, আমলাতান্ত্রিক বাধা ও আইনের ফাঁকফোকরের কারণে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের পক্ষে অবৈধ বিদেশিদের এমনকি ইউরোপের অন্যান্য দেশেও প্রত্যর্পণ করা কঠিন হয়ে ওঠে৷ তিনি সিরিয়া ও আফগানিস্তানেও আবার প্রত্যর্পণ শুরু করার পক্ষে সওয়াল করেন৷ তাঁর দলের শীর্ষ নেতা ফ্রিডরিশ ম্যারৎস অবিলম্বে সিরিয়া ও আফগানিস্থান থেকে শরণার্থী গ্রহণ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন৷
অবৈধ ও বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত আশ্রয়প্রার্থীদের প্রত্যর্পণের বিষয়টি সাম্প্রতিক কালে বাড়তি গুরুত্ব পেলেও কার্যক্ষেত্রে তেমন দৃঢ় পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না৷ জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেসার এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারগুলির ভূমিকা নিয়ে আবার প্রশ্ন তুলেছেন৷ তাঁর মতে, আরো কড়া আইন প্রণয়ন করে ইতোমধ্যেই প্রত্যর্পণ সহজ করা হয়েছে৷ কিন্তু সেই বাড়তি ক্ষমতা কার্যক্ষেত্রে কতটা প্রয়োগ করা হচ্ছে, সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ ফেসার বলেন, ফেডারেল সরকারও সব সময় এ ক্ষেত্রে সাহায্য করতে প্রস্তুত৷ তিনি মনে করিয়ে দেন, যে গত বছরের তুলনায় প্রত্যর্পণের হার প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে গেছে৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)