সুইডিশ রান্নার কারিকুরি
২২ অক্টোবর ২০১৪বাড়ির রান্নায় রেস্তোরাঁর স্বাদ এনে ফেলা, সেটাই হল ফ্রেড্রিক আন্ডার-এর বিশেষত্ব৷ তিনি হলেন রেস্তোরাঁর রন্ধনশিল্পী, পেশাদারি ভাষায় যাকে বলা হয় কিনা ‘শেফ'৷ ফ্রেড্রিক তাঁর রান্নায় নানা ধরনের হার্বস বা জড়িবুটি ব্যবহার করে থাকেন৷
তাঁর ‘‘প্রভিয়ান্ট'' রেস্তোরাঁয় শুধু টাটকা জিনিস ব্যবহার করা হয়, যার অধিকাংশ এসে পৌঁছায় ভোরবেলা৷ ফ্রেড্রিক বলেন: ‘‘জড়িবুটি দেওয়া টাটকা স্যালাডের মতো আর কিছু নেই৷ সব কিছু সদ্য মাঠ থেকে, গাছ থেকে তোলা হয়েছে কিনা, তা অনুভব করা যায়৷ যেন সূর্যের স্বাদ পাওয়া যায়, সবুজ প্রকৃতির স্বাদ পাওয়া যায়৷''
ফ্রেড্রিক আন্ডার তাঁর স্যালাড, জড়িবুটি, শাকসবজি নেন অটো নভো কোম্পানির কাছ থেকে: স্থানটি স্টকহোম থেকে গাড়িতে ৪৫ মিনিট৷ এখানকার গ্রিনহাউসে সারা বছরই সবজি গজায়, গজায় জড়িবুটি, যেমন সাত ধরনের বেসিল, অর্থাৎ তুলসিপাতা, যা কিনা ইউরোপে ধনেপাতার মতোই রোজকার রান্নায় ব্যবহার করা হয়৷
পাইক মাছের পিঠে
লাল বিটের তরকারির সাথে পাইক মাছের পিঠে – সুইডেনের এই প্রথাগত রান্নাটির একটি সম্মার্জিত সংস্করণ বের করেছেন ফ্রেড্রিক: ‘‘ডাম্পলিং অর্থাৎ পিঠে তৈরির জন্য আমরা পাইক মাছ ব্যবহার করি৷ একটু নুন, কিছুটা ফেটানো ক্রিম, আর কয়েকটা ডিম৷ পিঠেগুলোর সাথে আমরা লাল বিট পরিবেশন করি: টাটকা লাল বিটগুলোকে একটু জিরে, চিনি আর নুন দিয়ে সেদ্ধ করে নিই৷''
ফ্রেড্রিক আন্ডার ছ'শো গ্রাম পাইক মাছের সঙ্গে ৫০০ গ্রাম ক্রিম আর একটু নুন মিশিয়ে পুরোটা ফেটিয়ে ঘন করে ফেলেন: ‘‘বেশি ফেটালে অথবা আস্তে আস্তে ফেটালে চলবে না, কেননা তাহলে পরে পিঠেগুলো ভেঙে যেতে পারে৷ বেশিক্ষণ মেশালে কিংবা বেশি গরম হলে মাছ আর ক্রিম আলাদা হয়ে যেতে পারে৷''
ডাম্পলিং-গুলো একটি চামচ দিয়ে গড়ে নিয়ে গরম জলে ছাড়তে হয়: ‘‘তিন মিনিট ধরে সেদ্ধ করার পর ওগুলো উল্টে দিতে হয়, যাতে অন্য দিকটাও তিন মিনিট ধরে সেদ্ধ হয়৷''
লাল বিটগুলো একটু জিরে, নুন আর ভিনিগার দিয়ে সেদ্ধ করে নিতে হয়৷
কাঠি দিয়ে ফুটো করে দেখতে হয়, বিট সেদ্ধ হয়েছে কিনা৷ কাঠি থেকে বিট পড়ে যাওয়ার মানে বিট সেদ্ধ হয়েছে৷ তবে বিট ছাড়া অন্যান্য নানা ধরনের কন্দ ও আলুও খেয়ে থাকেন সুইডরা: ‘‘আমরা বিট ছাড়া অন্যান্য নানা ধরনের কন্দ জাতীয় সবজি খাই, সুইডেনে যার খুবই চল, কেননা এ ধরনের সবজি সারা বছরই গজায়৷ সেগুলোকে শীতের জন্য আবার ভাঁড়ারে জমিয়ে রাখা চলে, কেননা আমাদের দেশটা তো শীতের৷''
লাল বিট আর ওলন্দাজ সস দিয়ে পাইক মাছের পিঠে৷ ওপরে টাটকা জড়িবুটি ছড়ালে তা শুধু স্বাদই বাড়ায় না, দেখতেও ভালো লাগে৷