সাপের কামড়: বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ নিয়ে সতর্কতা ডাব্লিউএইচওর
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থাটির হিসাবে প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ২৭ লাখ মানুষ বিষধর সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন৷ এর মধ্যে মারা যান এক লাখ ৩৮ হাজার৷ মঙ্গলবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে ডাব্লিউএইচওর এই বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ডেভিড উইলিয়ামস জানান প্রতি চার থেকে ছয় মিনিটে সাপের কামড়ে একজন মানুষের মৃত্যু ঘটছে৷ প্রায় দুই লাখ ৪০ হাজার স্থায়ীভাবে প্রতিবন্ধিত্ব বরণ করেন৷ সাপের বিষের কারণে পক্ষাঘাত, মারাত্মক রক্তক্ষরণ, কিডনি অকেজো হয়ে যাওয়াসহ নানা সমস্যায় ভোগে মানুষ৷
উইলিয়ামস জানান সাপের কামড়ের বেশিরভাগ ভুক্তভোগী ক্রান্তীয় ও দারিদ্র্য অঞ্চলের মানুষেরা৷ বিশেষত শিশুরা বেশি বিপাকে পড়ছে৷ এইসব অঞ্চলে নিরাপদ ও কার্যকর চিকিৎসা না থাকায় পরিবারগুলোর একদিকে চিকিৎসার ব্যয় বাড়ে অন্যদিকে আরো দরিদ্র্য হয়ে পড়ে৷ উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, সাব সাহারা অঞ্চলে সাপের কামড়ে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রয়োজনীয় চিকিৎসার মাত্র আড়াই শতাংশ সেবা পান ভুক্তভোগীরা৷
ডাব্লিউএইচও এর তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ১৯৮০ থেকে অ্যান্টিভেনম উৎপাদন বন্ধ করে দেয়ায় আফ্রিকা ও এশিয়ার দেশগুলোতে এই সংক্রান্ত চিকিৎসার ব্যাপক স্বল্পতা দেখা দিয়েছে৷
বেশি উপদ্রব দক্ষিণ এশিয়ায়
উইলিয়ামস জানান, সাপের কামড়ের শিকার সবচেয়ে বেশি ভারতে৷ প্রতি বছর দেশটিতে ৫৮ হাজার মানুষ সাপের কামড়ে মারা যাচ্ছেন৷ বাংলাদেশ ও পাকিস্তানও কঠিন পরিস্থিতিতে আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি৷ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বন্যার কারণে সাপের কামড় ও মৃত্যুঝুঁকি বেড়েছে বলে তিনি জানান৷ বলেন. ‘‘বিশ্বের নানা প্রান্তে, যেখানে এই ধরনের বিপর্যয়গুলো নিয়মিতভাবে ঘটছে সেখানেই এই সমস্যাটি দেখা দিচ্ছে৷ একই সমস্যা আমরা পাকিস্তানের সবশেষ বড় বন্যার সময়ে দেখেছি৷ এটি মিয়ানমারে ঘটছে৷ এটি বাংলাদেশে ঘটছে৷''
প্রতিষেধকের ঘাটতি নিয়ে তিনি বলেন, প্রচুর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও কিছু অঞ্চলে পর্যাপ্ত নিরাপদ ও কার্যকর চিকিৎসা নেই৷ পরিস্থিতি উন্নয়নে ডাব্লিউএইচও বিভিন্ন দেশ ও কোম্পানির সাথে কাজ করছে বলে জানান তিনি৷
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জায়গা পরিবর্তনের পাশাপাশি বিষধর সাপের সংখ্যাও বাড়ছে বলে জানিয়েছে ডাব্লিউএইচও৷ এ কারণে আগে সমস্যাটি ছিল না এমন জায়গাতেও সাপের কামড়ের ঝুঁকি বাড়ছে৷
এফএস/এসিবি (এএফপি)