সাধারণ সম্পাদক নিপুণ না জায়েদ সিদ্ধান্ত হাইকোর্টে

সাধারণ সম্পাদকের পদে ‘স্থিতাবস্থা' জারির যে আদেশ চেম্বার আদালত দিয়েছিল, তা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ৷ জায়েদ খানের রিট আবেদনে যে রুল জারি হয়েছিল, হাই কোর্টকে তা নিষ্পত্তি করতে বলেছে সর্বোচ্চ আদালত৷

নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে সেই পদে বিজয়ী ঘোষণা করেছিল নির্বাচনী আপিল বোর্ড৷ জায়েদ খানের আবেদনে হাই কোর্ট নির্বাচনী আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত আটকে দেয়৷ নিপুণের আবেদনে চেম্বার আদালত বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয় এবং  সে পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক পদে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়৷

সোমবার নিপুণের আবেদনের নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ রুল নিষ্পত্তির এই আদেশ দিল৷

মঙ্গলবারই হাই কোর্ট বেঞ্চে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে রুলের শুনানির তারিখ৷ নিপুণের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও মোস্তাফিজুর রহমান খান৷ জায়েদ খানের পক্ষে আইনজীবী আহসানুল করিম৷

গত দুই বার শিল্পী সমিতির নির্বাচনে জয়ী মিশা সওদাগর-জায়েদ খান প্যানেলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণের নেতৃত্বে প্যানেল হয়৷ গত ২৮ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের পর সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়৷ নিপুণ নির্বাচনের সময়ই টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ করেন এবং তাতে সাড়া না পেয়ে তিনি আপিল করেন৷ তার আপিলে ভোট পুনর্গণনায় ফল একই থাকায় নিপুণ সংবাদ সম্মেলন করে সাধারণ সম্পাদক পদে পুনঃভোটের দাবি তোলেন৷

সেখানে তিনি অর্থ দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ তুলে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুমকিও দেন৷ পরে নির্বাচনী আপিল বোর্ডে জায়েদ খান ও কার্যকরী পরিষদের সদস্য চুন্নুর পদ বাতিলের আবেদন করেন নিপুন৷ আবেদনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে করণীয় জানতে আবেদন করেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান৷ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক চিঠিতে আপিল বোর্ডকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়ায় ‍দুই পক্ষকে নিয়ে বসার উদ্যোগ নেন সোহান৷ 

গত দুই বারের সম্পাদক জায়েদ খান বৈঠকে যাবেন না আগেই জানিয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘২৯ জানুয়ারির পর থেকে আপিল বোর্ড বিলুপ্ত হয়েছে৷ বিষয়টি নিয়ে আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই৷’’ শেষ পর্যন্ত আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিজয়ী জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের পর নিপুণ আক্তারকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়৷

৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণসহ তাদের প্যানেলের বিজয়ী প্রার্থীরা শপথ গ্রহণ করে দায়িত্বও বুঝে নেন৷ জায়েদ খানের আবেদনে হাই কোর্ট পরদিন আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেয়৷ সেই সাথে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে জায়েদ খানকে কোনো রকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করতে নির্দেশ দেয় বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাই কোর্ট বেঞ্চ৷

জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত ‘বেআইনি' ঘোষণা করা হবে না কেন তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করে আদালত৷ আপিল বোর্ড এবং সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টদের এক সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়৷

হাই কোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য চেম্বার আদালতে স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করেন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার৷ সেই আবেদনে ৯ ফেব্রুয়ারি চেম্বার আদালত স্থিতাবস্থা জারি করে৷

এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)