সংঘর্ষ-বিরতি: ঘরে ফিরছেন লেবাননের সাধারণ মানুষ
হিজবুল্লার সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘর্ষের জেরে বহু মানুষ বাড়ি থেকে পালিয়েছিলেন। অন্যদিকে সেনা সরাতে শুরু করেছে ইসরায়েল।
রাস্তাজুড়ে গাড়ির লাইন
লেবাননের হাইওয়েতে গাড়ির লাইন চোখে পড়ার মতো। কাতারে কাতারে মানুষ বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন। হিজবুল্লার সঙ্গে ইসরায়েলের লড়াইয়ের জেরে অনেকেই বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন।
ঘরে ফিরবেন ইসরায়েলের মানুষ?
উত্তর ইসরায়েলের বহু মানুষ ১৪ মাস আগে বাড়ি ছেড়েছিলেন। লেবানন সীমান্তের কাছে আশ্রয়শিবিরে ছিলেন তারা। হামাস ইসরায়েলে আক্রমণ চালানোর পরেই তারা বাড়ি ছেড়েছিলেন প্রাণ সংশয়ে। এতদিন পর তারাও বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন।
নীল সীমান্তের কাছে
জাতিসংঘ ইসরায়েল এবং লেবাননের যে সীমান্ত চিহ্নিত করেছে, তার আনুষ্ঠানিক নাম ব্লু লাইন। সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর ওই ব্লু লাইনের কাছেই আশ্রয় শিবিরে যেতে হয়েছিল বহু মানুষকে। বাড়ি ফেরার পরিকল্পনা করলেও হিজবুল্লাকে এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না অনেকে।
শক্তি কমেছে হিজবুল্লার
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, অন্তত দুইবছর বড় কোনো আক্রমণের রাস্তায় হাঁটবে না হিজবুল্লা। কারণ সাম্প্রতিক সংঘর্ষে তাদের প্রভূত শক্তিক্ষয় হয়েছে। সে কারণেই তারা লড়াইয়ের ময়দান ছাড়তে রাজি হয়েছে।
ইরানের চাপ
হিজবুল্লাকে সংঘর্ষবিরতিতে রাজি করানোর অন্যতম দাবিদার ইরান। অভিযোগ, হিজবুল্লাকে আর্থিক এবং সামরিক সাহায্য করে তারা। সম্প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষ-বিরতিতে যাওয়ার জন্যেও ইরান চাপ তৈরি করেছিল হিজবুল্লার উপর। কারণ ইরান বুঝতে পারছিল যে, হিজবুল্লা ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছে।
লেবাননের সেনা
হিজবুল্লা যেমন উত্তর লেবানন থেকে চুক্তি মেনে সরতে শুরু করেছে, তেমন লেবাননের সেনা লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে পোস্ট তৈরি করছে। কিন্তু লেবাননের সেনার শক্তি কতটা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাদের দাবি, লেবাননে হিজবুল্লার দাপট এতটাই যে সেনার ক্ষমতা খুব বেশি নয়। তাদের শক্তি পুলিশের মতো।
রাজনৈতিক পরিস্থিতি
লেবাননের রাজনীতিতে হিজবুল্লার বিরাট প্রভাব। পার্লামেন্টে হিজবুল্লার রাজনৈতিক সংগঠনের আসন আছে। এই পরিস্থিতিতে সংঘর্ষবিরতি কতদিন স্থায়ী হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
ফিরছে ইসরায়েলের সেনা
চুক্তি অনুযায়ী ৬০ দিনের মধ্যে ইসরায়েলের সেনাকে লেবানন ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হবে। সংঘর্ষ-বিরতি শুরু হওয়ার পর ধীরে ধীরে জায়গা ছাড়ছে ইসরায়েলের সেনা।
ধ্বংসস্তূপে ফেরা
লেবাননের একটি বড় অংশে একের পর এক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণেও আক্রমণ চালানো হয়েছে। লেবাননের বহু মানুষ সে সময় বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিলেন। সংঘর্ষ-বিরতি শুরু হওয়ার পর তারা বাড়ি ফিরছেন কিন্তু যে বাড়ি ছেড়ে তারা গেছিলেন, তা এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
জাতিসংঘের অবস্থান
হিজবুল্লা এবং ইসরায়েল সংঘর্ষ-বিরতিতে রাজি হওয়ার পর তাকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেছেন, এই সংঘর্ষ-বিরতির মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির এক নতুন অধ্যায় শুরু হবে। দিকে দিকে যে সংঘর্ষ চলছে, তা সমাপ্তি ঘটবে এবার।