ষষ্ঠ গণবিলুপ্তির পথে পৃথিবী
প্রায় সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে ডায়নোসরের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়েছিল । সেটা ছিল এখনও পর্যন্ত শেষ গণবিলুপ্তির ঘটনা। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করছেন আবারও বিলুপ্তির মুখোমুখি পৃথিবী, এবারেরটা ষষ্ঠ।
দায়ী মানুষ
নৃতাত্ত্বিক এই বিলুপ্তির জন্য দায়ী মানুষ। জলবায়ু পরিবর্তন, বনভূমি ধ্বংস, দূষণ এবং শিল্প-সংক্রান্ত কৃষিকাজ এর অন্যতম কারণ। কয়েক দশকের মধ্যে ধ্বংসের মুখে প্রায় ১০ লাখ প্রজাতি। বিশ্বের সব প্রজাতির প্রায় তিন চতুর্থাংশ আগামী ৩০ লাখ বছরের মধ্যে বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
খাদ্য সরবরাহে টান
খাদ্য সরবরাহে টান পড়বে। পরাগমিলনের উপর খাদ্য সুরক্ষা নির্ভর করছে, মত দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার ফ্লিন্ডার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল ইকোলজির অধ্যাপক কোরে ব্র্যাডশর। মৌমাছি মারা গেলে ভেঙে পড়বে কৃষি ব্যবস্থা। ক্ষতিকারক পোকামাকড়ের পরিমাণ বাড়বে। উপকূলবর্তী এলাকায় মাছ চাষে সমস্যা হবে। বন্যা এবং খরার ফলে সাহারা-সংলগ্ন আফ্রিকা এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার একাংশ চরম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
কৃষিতে প্রভাব
ডব্লু ডব্লু এফ ইন্টারন্যাশনালের তরফে কোলম্যান ও ক্রায়োডেনের মত, মাটির গুণমান কমবে কারণ গণবিলুপ্তিতে উপকারী অণুজীবের মৃত্যু হবে। মাটির উর্বরতা কমে প্রভাব পড়়বে কৃষিতে৷
পানীয় জলের অভাব
সারা বিশ্বের শুদ্ধ পানীয় জলের অধিকাংশ আসে জলাভূমি থেকে। হিমালয়সংলগ্ন এলাকার প্রায় দুই কোটি মানুষ এই পানির উপর নির্ভরশীল। বিশ্বজুড়ে পানীয় জলেও মারাত্মক টান পড়বে।
বনভূমি ধ্বংস
বনভূমি ধ্বংসের ফলে বৃষ্টিপাতের ধরন বদলেছে। জাতিসংঘের মত, ২০১৫ থেকে বার্ষিক প্রায় ২.৮ কোটি একর বনভূমি ধ্বংস হয়েছে। কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়েছে। স্টকহোম রিজিলেন্স সেন্টার ফর রিসার্চের পরিবেশবিজ্ঞানী কার্ল ফক বলেন, বাস্তুতন্ত্রকে সবথেকে বেশি সমস্যয় ফেলেছে মানুষ।
জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের সতর্কতা জারি
জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের সতর্কতা জারি করেছেন বিজ্ঞানীরা। শুধু তাই নয়, বনভূমি ধ্বংস হচ্ছে। বন্যপ্রাণী ও মানুষ কাছাকাছি চলে আসার ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশে ব্যাঘাত ঘটে মহামারির সম্ভাবনাও বেড়েছে।
সংরক্ষণে জোর
সংরক্ষণে জোর দিতে না দিলে আগের তুলনায় আরও বেশি প্রজাতি ধ্বংস হত, মত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজার্ভেশন অফ নেচারের (আইইউসিএন) প্রধান বিজ্ঞানী টমাস ব্রুকসের। এই প্রসঙ্গে আইইউসিএনের লাল তালিকার কথা উল্লেখ করেন তিনি। ওয়াইল্ড লাইফ কনজার্ভেশন সোসাইটির "৩০-এ ৩০" চুক্তির কথা বলা হয়েছে। এর ফলে ৩০% স্থলভূমি এবং সমুদ্র ২০৩০ সালের মধ্যে সংরক্ষণের আওতায় চলে যাবে।