শুক্রাণুর শক্তির নেপথ্যে বিভিন্ন কারণ
৩১ মার্চ ২০২০আপনি নিজেকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী মনে করেন? মনে করেন, আপনার বীজ বা শুক্রাণু বংশবৃদ্ধির জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত? দুর্ভাগ্যবশত আপনার এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল৷ কারণ সবসময়ে শুক্রাণুর মান একরকম থাকে না৷
বেশিরভাগ পুরুষ সারা জীবন ধরেই শুক্রাণু উৎপাদন করেন বটে, কিন্তু অত্যন্ত গতিশীল শুক্রাণুর সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে৷ সেই কমার হার বছরে শূন্য দশমিক সাত শতাংশ৷ ঋতুও বীর্য উৎপাদনের উপর প্রভাব রাখে৷ লক্ষ্য করা গেছে, যে বসন্তকালে সবচেয়ে বেশি এবং গ্রীষ্মকালে সবচেয়ে কম সংখ্যক শুক্রাণুর উৎপাদন ঘটে৷ প্রাণিজগতেও এমনটা দেখা গেছে৷ তবে ঋতু অনুযায়ী শুক্রাণুর সংখ্যার এই পরিবর্তনের মাত্রা এত বেশি নয়, যে তার ফলে পুরুষ সন্তানের জন্ম দিতে অক্ষম হতে পারে৷
সুষম খাদ্য শুক্রাণুর মানের জন্য অত্যন্ত জরুরি৷ দস্তা, সেলেনিয়াম, ভিটামিন সি ও ই, ফলিক অ্যাসিড এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শুক্রাণুর গতিবিধির ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে৷ এই সব পদার্থ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে৷ এগুলি এপিডাইডিমিসের মধ্যে ইনফ্লেমেশন বা প্রদাহ প্রতিরোধ করে৷ সেখানেই শুক্রাণুর গতিশীলতা নির্ধারিত হয়৷ শুক্রাণুর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত খাদ্য হলো সামুদ্রিক মাছ, ফুল গ্রেন বা দানাযুক্ত খাদ্য এবং ফলমূল ও শাকসবজি৷
শুক্রাণুর মান বাড়াতে শরীরের সঞ্চালন অত্যন্ত জরুরি৷ কারণ এর মাধ্যমে টেস্টোস্টেরোন হরমোনের মাত্রা ও সেইসঙ্গে শুক্রাণু উৎপাদন বেড়ে যায়৷ তবে যারা একস্ট্রিম স্পোর্টস চর্চা করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শুক্রাণু উৎপাদন কমে যায়৷ পেশি মজবুত করতে যে সব বেআইনি শক্তিবর্ধক ব্যবহার করা হয়, সেগুলি শুক্রাণুর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক৷ অ্যানাবোল স্টেরয়েড শুক্রাণুর জন্য আসলে বিষ৷
শুক্রাণু অপেক্ষাকৃত শীতল তাপমাত্রা পছন্দ করে৷ অণ্ডকোষ শরীরে বাইরে থাকে বলে শরীরের ভিতরের অংশের তুলনায় সেখানকার তাপমাত্রা তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস কম৷ তাই প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী গাড়ির উষ্ণ সিট, বা কোলের উপর ল্যাপটপের উত্তাপ, গরম পানিতে স্নান অথবা সনায় গিয়ে ঘাম ঝরালে শুক্রাণুর ক্ষতি হয়৷
তবে এখনো পর্যন্ত এমন ধারণার সপক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ ফিনল্যান্ডের মতো সনা-পাগল দেশের মানুষ মোটেই বিলুপ্তির পথে যাচ্ছে না৷ প্যান্টের পকেটে মোবাইল ফোন শুক্রাণুর মানের ক্ষতি করতে পারে, এমন ধারণাও প্রমাণিত হয় নি৷ যৌনক্রিয়া যে শুক্রাণুর জন্য উপকারী, এমন ধারণা অবশ্যই প্রমাণিত হয়েছে৷ সেই ক্রিয়া এককভাবে অথবা শয্যাসঙ্গিনীর সঙ্গে হতে পারে৷ নিয়মিত শুক্রাণু ত্যাগ করলে উর্বরতা বাড়ে৷ যৌন সংসর্গ ছাড়া এক বা দুই দিন কাটালে শুক্রাণুর মান কমে যায়৷
কার্স্টেন লিন্ডার/এসবি