লোকের মন রাখার বাজেট
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০পরের বছর ভোটের আগে শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট৷ কাজেই প্রবীণ নাগরিক, বেকার যুবসমাজ এবং ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদের জন্য একাধিক প্রকল্পের ঘোষণা করলেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী ড. অমিত মিত্র৷ সেই সঙ্গে এবারের কেন্দ্রীয় বাজেটে কর্মসংস্থানের কোনও ইঙ্গিত না থাকার জন্য খোঁচা দিলেন৷ বললেন, আমাদের বাজেট জনমুখী বাজেট৷ অর্থমন্ত্রী দাবি করলেন, গত আর্থিক বছরে রাজ্যে নয় লাখ ১১ হাজার নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে৷ আগামী বছরে যাতে আরও বেশি কাজের সুযোগ তৈরি হয়, সেদিকে নজর দিয়েছে সরকার৷ রাজ্যের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই প্রতিশ্রুতিকে কটাক্ষ করে বলেছেন, মানুষকে ঘুষ দিয়ে কোনও লাভ হবে না৷ পরের নির্বাচনে কোনও সুবিধেই করতে পারবে না তৃণমূল কংগ্রেস৷ রাজ্যে এখন কেবল সিন্ডিকেটরাজ চলছে৷ সেটা মানুষ বুঝছে৷
অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র এদিন ২.৫৬ লক্ষ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব পেশ করেছেন, যা আগের বছরের থেকে ৭.৪% বেশি৷ তাতে ‘কর্মসাথী’ নামে নতুন একটি প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়েছে, যাতে প্রতি বছর এক লক্ষ যুবক-যুবতী স্বনির্ভর হওয়ার সুযোগ পাবেন৷ তার জন্য দুই লাখ টাকা পর্যন্ত সাহায্য করবে সরকার৷ এই খাতে এবারের বাজেটে মোট বরাদ্দ ৫০০ কোটি টাকা৷ এর পাশাপাশি শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের পুরো দায়িত্ব সরকার নিয়ে নিল৷ আগে পিএফ তহবিলে সরকার দিত ৩০ টাকা আর শ্রমিকরা দিত ২৫ টাকা৷ এবার থেকে পুরো টাকাই সরকার দেবে৷ চা বাগানের শ্রমিকদের আবাসন গড়ে দেওয়ার জন্য ঘোষিত হয়েছে ‘চা সুন্দরী’ নামে একটি নতুন প্রকল্প৷ ৩৫ লক্ষ দরিদ্র বাড়িতে নিখরচায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে ঘোষিত হয়েছে ‘হাসির আলো’ প্রকল্প, বরাদ্দ ২০০ কোটি টাকা৷ এর পাশাপাশি তফসিলি জাতির ২১ লক্ষ এবং তফসিলি উপজাতির আরও প্রায় চার লক্ষ প্রবীণ সদস্যের জন্য এক হাজার টাকা করে ভাতা ঘোষণা করেছেন অমিত মিত্র৷
তবে এদিন বাজেট প্রস্তাব পেশের পর অর্থমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী একসঙ্গে কেন্দ্র সরকারের বৈষম্যমূলক নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন৷ তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যে এত জনমুখী প্রকল্প, অনেক ক্ষেত্রেই পশ্চিমবঙ্গ সারা দেশের মধ্যে সেরা, কিন্তু কেন্দ্র প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার বকেয়া পাওনা দিচ্ছে না৷ কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের আগে এই বকেয়া অঙ্ক ছিল ৩৮ হাজার কোটি টাকা৷ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে মুখ্যমন্ত্রী লিখিতভাবে এই প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন৷ কিন্তু বাজেটে দেখা গেল, বরাদ্দ আরও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ এদিন জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী৷